ঢাকা ০৭:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিএনপিকে সংলাপের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি : সিইসি

সংলাপ নয়, বিএনপিকে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এর সঙ্গে সরকারের কোনও সংশ্লিষ্টতা ছিল না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সিইসি।

তিনি বলেন, আমরা গণমাধ্যমে দেখলাম অনেকে লিখেছেন, বিএনপিকে চিঠি দেওয়া সরকারের কূটকৌশল। তবে আমি বলছি, বিএনপিকে চিঠি দেওয়ার পেছনে সরকারের কোনও কূটকৌশল নেই। বরং এটা ইসির কূটকৌশল হতে পারে। আর নির্বাচন কমিশন কখনোই কূটকৌশল হিসেবে এই কাজটি করেনি। নির্বাচন কমিশন প্রথম থেকেই অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও কার্যকর প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করে।’

সিইসি বলেন, সরকার ইসির ওপর চাপ দিলে যে ডেবে যাবে বিষয়টা ওরকম না। এখানে সরকারের কোনও রকম সংশ্লিষ্টতা নেই। সরকারের আজ্ঞাবহ কোনো কাজ নির্বাচন কমিশন করে না বলেও জানান কাজী হাবিবুল আউয়াল।

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন মনে করে গণতন্ত্রের স্বার্থে, নির্বাচনের স্বার্থে বিশেষ করে বড় দলগুলোর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা প্রয়োজন। সংসদীয় গণতন্ত্রে দলীয় শাসনটাই হচ্ছে মুখ্য। বিদ্রোহী প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থীর দ্বারা কখনো সরকার গঠন করা সম্ভব নয়। সেজন্য আমাদেরও লক্ষ্য দলগুলো চর্চার মাধ্যমে গণতন্ত্র আরও সমৃদ্ধ হোক, সংহত হোক। দলীয় চর্চা এবং সংস্কৃতির মাধ্যমে গণতান্ত্রিক চর্চা আরও সংহত হোক। সেটা আমাদের প্রথমদিন থেকে সদিচ্ছা। সেই সদিচ্ছার প্রতিফলন আমাদের প্রথমদিন থেকে সব সময় আপনাদের (গণমাধ্যমের) মাধ্যমে ঘটানোর চেষ্টা করেছি।’

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, বিএনপির মতো একটি দলকে নির্বাচনে আনতে পারলে ভালো হয়, সেজন্যই ডেকেছি অনানুষ্ঠানিকভাবে ডেকেছি। কোনো আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর চাপে বিএনপিকে ডাকা হয়নি। সব নির্বাচন কমিশনার বসেই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, গাইবান্ধা ভোট বন্ধের ইস্যুতে ১৩৪ জনের মধ্যে ৪০ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আবারও পদক্ষেপ নিবে ইসি।

গত ২৩ মার্চ বিএনপি ও সমমনা দলগুলোকে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি পাঠান সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল।

ওই চিঠিতে সিইসি লেখেন, ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর ধারাবাহিকভাবে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন করে আসছি। বর্তমান কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সংসদ নির্বাচনের কথা অনুধাবন করে আসছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বর্তমান কমিশনের প্রতি অনাস্থা ব্যক্ত করে প্রত্যাখ্যান করে আসছে। আপনারা নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

চিঠিতে আরও বলা হয়, যদিও আপনাদের এমন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও কৌশলের বিষয়ে কমিশনের কোনো মন্তব্য নেই। আপনাদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হলেও কমিশন মনে করে বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে আনুষ্ঠানিক না হোক, অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা বা মতবিনিময় হতে পারে। আপনাদের ইসিতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। সদয় সম্মত হলে আলোচনা করে দিনক্ষণ নির্ধারণ করা যেতে পারে। প্রত্যুত্তর প্রত্যাশা করছি। সিইসি এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক উত্তর পাঠায়নি বিএনপি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বিএনপিকে সংলাপের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি : সিইসি

আপডেট সময় ০১:৪৮:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩

সংলাপ নয়, বিএনপিকে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এর সঙ্গে সরকারের কোনও সংশ্লিষ্টতা ছিল না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সিইসি।

তিনি বলেন, আমরা গণমাধ্যমে দেখলাম অনেকে লিখেছেন, বিএনপিকে চিঠি দেওয়া সরকারের কূটকৌশল। তবে আমি বলছি, বিএনপিকে চিঠি দেওয়ার পেছনে সরকারের কোনও কূটকৌশল নেই। বরং এটা ইসির কূটকৌশল হতে পারে। আর নির্বাচন কমিশন কখনোই কূটকৌশল হিসেবে এই কাজটি করেনি। নির্বাচন কমিশন প্রথম থেকেই অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও কার্যকর প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করে।’

সিইসি বলেন, সরকার ইসির ওপর চাপ দিলে যে ডেবে যাবে বিষয়টা ওরকম না। এখানে সরকারের কোনও রকম সংশ্লিষ্টতা নেই। সরকারের আজ্ঞাবহ কোনো কাজ নির্বাচন কমিশন করে না বলেও জানান কাজী হাবিবুল আউয়াল।

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন মনে করে গণতন্ত্রের স্বার্থে, নির্বাচনের স্বার্থে বিশেষ করে বড় দলগুলোর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা প্রয়োজন। সংসদীয় গণতন্ত্রে দলীয় শাসনটাই হচ্ছে মুখ্য। বিদ্রোহী প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থীর দ্বারা কখনো সরকার গঠন করা সম্ভব নয়। সেজন্য আমাদেরও লক্ষ্য দলগুলো চর্চার মাধ্যমে গণতন্ত্র আরও সমৃদ্ধ হোক, সংহত হোক। দলীয় চর্চা এবং সংস্কৃতির মাধ্যমে গণতান্ত্রিক চর্চা আরও সংহত হোক। সেটা আমাদের প্রথমদিন থেকে সদিচ্ছা। সেই সদিচ্ছার প্রতিফলন আমাদের প্রথমদিন থেকে সব সময় আপনাদের (গণমাধ্যমের) মাধ্যমে ঘটানোর চেষ্টা করেছি।’

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, বিএনপির মতো একটি দলকে নির্বাচনে আনতে পারলে ভালো হয়, সেজন্যই ডেকেছি অনানুষ্ঠানিকভাবে ডেকেছি। কোনো আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর চাপে বিএনপিকে ডাকা হয়নি। সব নির্বাচন কমিশনার বসেই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, গাইবান্ধা ভোট বন্ধের ইস্যুতে ১৩৪ জনের মধ্যে ৪০ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আবারও পদক্ষেপ নিবে ইসি।

গত ২৩ মার্চ বিএনপি ও সমমনা দলগুলোকে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি পাঠান সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল।

ওই চিঠিতে সিইসি লেখেন, ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর ধারাবাহিকভাবে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন করে আসছি। বর্তমান কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সংসদ নির্বাচনের কথা অনুধাবন করে আসছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বর্তমান কমিশনের প্রতি অনাস্থা ব্যক্ত করে প্রত্যাখ্যান করে আসছে। আপনারা নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

চিঠিতে আরও বলা হয়, যদিও আপনাদের এমন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও কৌশলের বিষয়ে কমিশনের কোনো মন্তব্য নেই। আপনাদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হলেও কমিশন মনে করে বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে আনুষ্ঠানিক না হোক, অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা বা মতবিনিময় হতে পারে। আপনাদের ইসিতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। সদয় সম্মত হলে আলোচনা করে দিনক্ষণ নির্ধারণ করা যেতে পারে। প্রত্যুত্তর প্রত্যাশা করছি। সিইসি এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক উত্তর পাঠায়নি বিএনপি।