লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির বলেছেন, শিক্ষা একটি রাষ্ট্রের ভিত রচনা করে, সে কারণেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমেই শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক ও অবৈতনিক করেছিলেন। তিনি শিক্ষাকে কোনো রকম আমলাতান্ত্রিক জটিলতার মধ্যে রাখেননি। সম্পূর্ণ স্বাধীন করে দিয়েছেন।
রোববার (১৯ মার্চ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম বার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ‘আইন প্রণয়নে সক্ষমতা বৃদ্ধি ও আইন বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি’ শীর্ষক প্রকল্পের আয়োজনে শিশু অধিকার সম্পর্কিত সচেতনতামূলক কর্মশালায় এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠান শেষে শিশু পরিবারের এতিমদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়।
লেজিসলেটিভ সচিব বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের লক্ষ্যে ‘ দ্যা প্রাইমারি স্কুলস (টেকিং ওভার) অ্যাক্ট, ১৯৭৪’ প্রণয়ন করেন। এরপর প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়। বঙ্গবন্ধুর সময়েই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিনামূল্যে বই, অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ ও খাবার বিতরণ করা হত শিশুদের শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করতে। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রীদের বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ দিয়েছিলেন তিনি। গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পোশাকও দেওয়া হত।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুই সংবিধানে যুক্ত করেছেন, প্রাথমিক শিক্ষা হবে প্রজাতন্ত্রের সব শিশুর জন্য বাধ্যতামূলক। বহু বিত্তহীন ও দরিদ্র পরিবার আছে, যারা দুই বেলা খেতে পায় না, তারা শিশুদের স্কুলে পাঠাবে কীভাবে? তাদের তো অর্থ নেই। সেজন্যই তিনি সবার জন্য বাধ্যতামূলক ও অবৈতনিক শিক্ষাব্যবস্থা চালুকরণে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দীন বলেন, যার জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না, তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি দেশকে ভালোবাসতেন। ভালোবাসতেন দেশের মানুষকে। এমনকি শিশুদেরও ভালোবাসতেন তিনি। তার একাধিক নিদর্শন তিনি রেখেছেন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, বিভিন্ন কার্যক্রমে। পাশাপাশি শিশুরাও বঙ্গবন্ধুকে আপন করে নিত। তাই এ মহান নেতার জন্মদিনকে ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।
তিনি বলেন, শিশুরাই আগামী প্রজন্ম। তারা গড়ে উঠুক কল্যাণকামী ও সৌন্দর্যমূলক জীবনবাদী দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যদিয়ে। এ স্বপ্ন আমাদের চেতনায় জাগিয়ে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর কাছে তার শিশুপুত্র রাসেল ছিল বাংলাদেশের সব শিশুর প্রতীক। তিনি অনুধাবন করেছেন, শিশুর কাছে জাত-পাত, ধনী-গরিবের ভেদাভেদ নেই। স্বাধীন বাংলাদেশকে গড়তে হলে শিশুদেরও গড়তে হবে। ওদের ভেতরে দেশপ্রেম জাগাতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দীন। তেজগাঁও সরকারি শিশু পরিবারের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।