পূর্ব বগুড়া তথা গাবতলীর ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা আজ বুধবারএই মেলাকে ঘিরে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে মহিষাবান ইউনিয়ন তথা উপজেলা জুড়ে।
একাধিক সূত্র জানায়, প্রায় ৪’শ বছর পূর্ব থেকে স্থানীয় সন্ন্যাসী পুজা উপলক্ষে গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের গোলাবাড়ী বন্দরের পূর্বধারে গাড়ীদহ পশ্চিমধারে সম্পূর্ণ ব্যক্তি মালিকানা জমিতে একদিনের জন্য ঐতিহ্যবাহী এই পোড়াদহ মেলা বসে। প্রতি বছর বাংলা সনের মাঘ মাসের শেষ অথবা ফাল্গুন মাসের প্রথম বুধবার মেলাটি হয়। এ মেলাকে ঘিরে উৎসবের আমেজে মেতে উঠে মেলার আশপাশ গ্রামের সববর্ণের মানুষ। তবে মেলাটি একদিনের হলেও চলে দু’থেকে তিনদিন পর্যন্ত। এ মেলায় অনেক লোকজনের সমাগম ঘটে। ঈদ বা অন্য কোন উৎসবে জামাই মেয়েদের কিংবা নিকট আত্মীয়দের দাওয়াত না দিলেও চলে কিন্তু পোড়াদহ মেলায় সবাইকে দাওয়াত দিয়ে ধুমধাম করে খাওয়াতে হয়-যা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। মেলা উপলক্ষে ওই এলাকার গৃহবধুরা আগেভাগেই ঘর-দুয়ার পরিস্কার করা, মুড়ি-খৈ ভাজা, নাড়কেলের নাড়– তৈরী শুরু করে।
ইতিমধ্যে আত্মীয় স্বজনদের দাওয়াত দেয়া হয়েছে। মেলার স্থান পোড়াদহ এলাকায় হলেও মেলাটি ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্নস্থানে। পোড়াদহ মেলাকে ঘিড়ে মেলা বসে সুবোধ বাজার, দূর্গাহাটা, বাইগুনী, দাঁড়াইল, তরনীহাট, পেরীহাটসহ আশপাশের বিভিন্নস্থানে। প্রতিবছরের মতো এবারের মেলারও মূল আকর্ষণ হলো দেশী-বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় মাছ। তরে এবারও মেলায় বাঘাইর মাছ বিক্রি ও প্রদর্শন নিষিদ্ধ রয়েছে। মাছ ছাড়াও বড় বড় মিষ্টি আর কাঠের তৈরি ফার্নিচার ওঠে এই মেলায়। ফার্ণিচার কেনা-বেচা মেলার দিনে চললেও মূলত মেলার পরের দুইদিনেও পুরোদমে কেনাবেচা হয়।
এছাড়াও বিভিন্ন আসবাবপত্র, বড়ই, কৃষি সামগ্রী ও খাদ্য দ্রব্য হাট-বাজারের মতোই ক্রয়বিক্রয় হয়। এ ব্যাপারে মেলার পরিচালক স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বলেন, জেলা প্রশাসনের অনুমতিক্রমে মেলাটি সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে এলাকার যুবসমাজের সহযোগিতায় সকল প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ নেয়া হয়েছে।
মেলায় নাগরদোলা, চরকি, সার্কাস, মোটর সাইকেল খেলাসহ শিশুদের জন্য অন্যান্য খেলা চলবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আফতাবুজ্জামান-আল-ইমরান জানান, ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার লক্ষে প্রশাসনের সার্বিকভাবে সহযোগিতা রয়েছে।
এ বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সনাতন চন্দ্র সরকারের সাথে কথা বললে তিনি জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও পোড়াদহ মেলায় আমাদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কঠোর নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে। তবে মেলায় অবৈধ কোন কিছু করতে দেয়া হবে না।