ঢাকা ১১:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
চিন্ময়ের গ্রেফতার ও সাইফুল হত্যাকাণ্ড নিয়ে যত অপতথ্য ছড়িয়েছে বাংলাদেশকে ২২৬৫ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে জার্মানি দুদকের মামলায় অব্যাহতি পেলেন জামায়াত সেক্রেটারি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে মেয়াদ উত্তীর্ণ কীটনাশক বীজ রাখার দায়ে তিন প্রতিষ্ঠানকে জরিমান গুজবে কান দিয়ে অস্থিরতা সৃষ্টি না করার আহবান জাবিতে ছাত্রদলের দুগ্রুপে উত্তেজনা, বোমাসদৃশ বস্তু উদ্ধার পরকীয়ার জেরে স্বামী খুন, স্ত্রী প্রেমিকসহ ৩ জনের ফাঁসি নিটওয়্যার উদ্ভাবন ও সহযোগিতায় সিজিং ‘বাংলাদেশ নাইট’ ১১১ নারীকে ধর্ষণ–যৌন নিপীড়নে অভিযুক্ত ধনকুবের ফায়েদ ইসকন ও আ.লীগকে নিষিদ্ধের দাবি বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের

অপহরন করে মুক্তিপণ হাতেপায়ে শিকল দিয়ে বন্দি র‍্যাব-৭ চট্রগ্রাম কর্তৃক উদ্ধারসহ আটক ৮ জন

হাতে পায়ে শিকল দিয়ে বন্দি এবং নির্যাতন একটি সুস্পষ্ট মানবাধিকার লংঘন ভুক্তভোগী ভিকটিম চট্টগ্রাম মহানগরীর উত্তর হালিশহর এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে পরিবার সহ বসবাস করতেন এবং রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

গত ২০ জানুয়ারি ২০২৩ ইং তারিখ ৬: টা ৩০ মিনিটের ভিকটিম রিকশা নিয়ে বাড়ী থেকে বের হয়। দীর্ঘসময় অতিবাহিত হলেও ভিকটিম ফিরে না আসায় ভিকটিমের বাবা এবং তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখোঁজি করেন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোন সন্ধান না পেয়ে ভিকটিমের বাবা হালিশহর থানায় একটি হারানো জিডি করেন যার জিডি নং-১১১০, তারিখ- ২১ জানুয়ারি ২০২৩ ইং।

পরদিন ২১ জানুয়ারি ২০২৩ ইং তারিখে ভিকটিমের বাবার মোবাইলে জনৈক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ফোন করে ১,৫০,০০০/-(এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা চাঁদা দাবি করে এবং চাঁদার টাকা না দিলে ভিকটিমকে মেরে ফেলার ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে। ভিকটিমের বাবা গরীব এবং চাঁদা দেয়ার মত সামর্থ না থাকায় ছেলের জীবন নিয়ে চিন্তিত হয়ে বিষয়টি র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামকে অবহিত করে।

র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম বর্ণিত অপহরনের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করতঃ ভিকটিমকে উদ্ধার এবং উক্ত অপহরনের সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল অদ্য ২৬ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখ আনুমানিক ২ টার দিকে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানাধীন বারৈহাট এলাকার একটি ভাড়া ঘর হতে অপহৃত ভিকটিমসহ মোট ০২ জন ভিকটিমকে পায়ে লোহার শিকল এবং হাত বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে এবং অপহরণকারী চক্রের ০৮ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো ১। শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী কালু চেয়ারম্যান(৬৮), পিতা-মৃত মাস্টার জেবল হোসেন, সাং-পশ্চিম ধলই, থানা-হাটহাজারী, জেলা-চট্টগ্রাম মহানগর, ২। মোঃ খোকন (৩২), পিতা মোঃ মনির আহমেদ, সাং-উত্তর কচ্ছপিয়া, থানা- চরজব্বার, জেলা- নোয়াখালী, ৩। মোঃ আলা উদ্দিন (৩৭), পিতা- আনার আহমদ, সাং-চরপানাউল্লাহ, থানা- সুবর্ণচর, জেলা- নোয়াখালী, ৪। মোঃ ইউসুফ(৩৬), পিতা-মৃত নিজাম উদ্দিন, সাং-পশ্চিম চরজব্বার, থানা- চরজব্বার, জেলা-নোয়াখালী, ৫। শহিদুল্লাহ রাজু(৩৩), পিতা-মোঃ মোস্তফা, সাং-গোড়াপুর, থানা-নোয়াখালী সদর, জেলা- নোয়াখালী, ৬। মোঃ নাজিম (৩৬), পিতা- মোঃ শাহজাহান, সাং-চরপানাউল্লাহ, ৭। মোঃ জহিরুল ইসলাম(৪৮), পিতা-মৃত আবুল হাশেম, সাং-চরভাগ্যা, থানা-সুবর্ণচর, জেলা-নোয়াখালী এবং ৮। মোঃ সেলিম(৫১), পিতা-মৃত আব্দুল মতিন, সাং-পশ্চিম চরজব্বার, থানা- চরজব্বার, জেলা-নোয়াখালী।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন এলাকা হতে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী লোকজনকে অপহরণ করে আটকে রাখত। পরবর্তীতে তাদের পায়ে শিকল বেঁধে মারধর করত এবং ভিকটিমদের পরিবারের কাছে মুক্তিপন বাবদ বিভিন্ন অংকের চাঁদা আদায় করত। ভিকটিমদের পরিবারের নিকট হতে মুক্তিপণ আদায় করার পরও ভিকটিমদের না ছেড়ে ব্লাংক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিত। পরবর্তীতে তাদের মধ্যযুগীয় কায়দায় দূর্গম পাহাড়ী এলাকায় অবস্থিত ইটভাটায় দিনে জবরদস্তিমূলকভাবে কাজ করাত এবং রাতের বেলা পায়ে শেকল বেঁধে খুঁটির সাথে তালামেরে রাখত। গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

চিন্ময়ের গ্রেফতার ও সাইফুল হত্যাকাণ্ড নিয়ে যত অপতথ্য ছড়িয়েছে

অপহরন করে মুক্তিপণ হাতেপায়ে শিকল দিয়ে বন্দি র‍্যাব-৭ চট্রগ্রাম কর্তৃক উদ্ধারসহ আটক ৮ জন

আপডেট সময় ০৯:৪০:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৩

হাতে পায়ে শিকল দিয়ে বন্দি এবং নির্যাতন একটি সুস্পষ্ট মানবাধিকার লংঘন ভুক্তভোগী ভিকটিম চট্টগ্রাম মহানগরীর উত্তর হালিশহর এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে পরিবার সহ বসবাস করতেন এবং রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

গত ২০ জানুয়ারি ২০২৩ ইং তারিখ ৬: টা ৩০ মিনিটের ভিকটিম রিকশা নিয়ে বাড়ী থেকে বের হয়। দীর্ঘসময় অতিবাহিত হলেও ভিকটিম ফিরে না আসায় ভিকটিমের বাবা এবং তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখোঁজি করেন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোন সন্ধান না পেয়ে ভিকটিমের বাবা হালিশহর থানায় একটি হারানো জিডি করেন যার জিডি নং-১১১০, তারিখ- ২১ জানুয়ারি ২০২৩ ইং।

পরদিন ২১ জানুয়ারি ২০২৩ ইং তারিখে ভিকটিমের বাবার মোবাইলে জনৈক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ফোন করে ১,৫০,০০০/-(এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা চাঁদা দাবি করে এবং চাঁদার টাকা না দিলে ভিকটিমকে মেরে ফেলার ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে। ভিকটিমের বাবা গরীব এবং চাঁদা দেয়ার মত সামর্থ না থাকায় ছেলের জীবন নিয়ে চিন্তিত হয়ে বিষয়টি র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামকে অবহিত করে।

র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম বর্ণিত অপহরনের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করতঃ ভিকটিমকে উদ্ধার এবং উক্ত অপহরনের সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল অদ্য ২৬ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখ আনুমানিক ২ টার দিকে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানাধীন বারৈহাট এলাকার একটি ভাড়া ঘর হতে অপহৃত ভিকটিমসহ মোট ০২ জন ভিকটিমকে পায়ে লোহার শিকল এবং হাত বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে এবং অপহরণকারী চক্রের ০৮ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো ১। শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী কালু চেয়ারম্যান(৬৮), পিতা-মৃত মাস্টার জেবল হোসেন, সাং-পশ্চিম ধলই, থানা-হাটহাজারী, জেলা-চট্টগ্রাম মহানগর, ২। মোঃ খোকন (৩২), পিতা মোঃ মনির আহমেদ, সাং-উত্তর কচ্ছপিয়া, থানা- চরজব্বার, জেলা- নোয়াখালী, ৩। মোঃ আলা উদ্দিন (৩৭), পিতা- আনার আহমদ, সাং-চরপানাউল্লাহ, থানা- সুবর্ণচর, জেলা- নোয়াখালী, ৪। মোঃ ইউসুফ(৩৬), পিতা-মৃত নিজাম উদ্দিন, সাং-পশ্চিম চরজব্বার, থানা- চরজব্বার, জেলা-নোয়াখালী, ৫। শহিদুল্লাহ রাজু(৩৩), পিতা-মোঃ মোস্তফা, সাং-গোড়াপুর, থানা-নোয়াখালী সদর, জেলা- নোয়াখালী, ৬। মোঃ নাজিম (৩৬), পিতা- মোঃ শাহজাহান, সাং-চরপানাউল্লাহ, ৭। মোঃ জহিরুল ইসলাম(৪৮), পিতা-মৃত আবুল হাশেম, সাং-চরভাগ্যা, থানা-সুবর্ণচর, জেলা-নোয়াখালী এবং ৮। মোঃ সেলিম(৫১), পিতা-মৃত আব্দুল মতিন, সাং-পশ্চিম চরজব্বার, থানা- চরজব্বার, জেলা-নোয়াখালী।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন এলাকা হতে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী লোকজনকে অপহরণ করে আটকে রাখত। পরবর্তীতে তাদের পায়ে শিকল বেঁধে মারধর করত এবং ভিকটিমদের পরিবারের কাছে মুক্তিপন বাবদ বিভিন্ন অংকের চাঁদা আদায় করত। ভিকটিমদের পরিবারের নিকট হতে মুক্তিপণ আদায় করার পরও ভিকটিমদের না ছেড়ে ব্লাংক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিত। পরবর্তীতে তাদের মধ্যযুগীয় কায়দায় দূর্গম পাহাড়ী এলাকায় অবস্থিত ইটভাটায় দিনে জবরদস্তিমূলকভাবে কাজ করাত এবং রাতের বেলা পায়ে শেকল বেঁধে খুঁটির সাথে তালামেরে রাখত। গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।