ঢাকা ০৯:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
শিগগিরই আরও ১৪ জনকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানো হচ্ছে ওষুধ-পোশাকসহ নিত্যপণ্যের ভ্যাট রিভিউ হচ্ছে: অর্থ উপদেষ্টাX তামিমের ফিফটিতে ঢাকাকে সহজেই হারাল বরিশাল অবশেষে প্রধান উপদেষ্টার ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে অংশ নিচ্ছে বিএনপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়মুখী পাহাড়ি ছাত্র-জনতার মিছিলে জলকামান-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ পুলিশের দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী নিজেই দুর্নীতিবাজ : টিউলিপকে ইলন মাস্ক এনসিটিবির সামনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা কদমতলীতে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় বাসের হেলপার নিহত প্রধান উপদেষ্টার ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে যাচ্ছে না বিএনপি ফুলবাড়ীয়া বাসস্ট্যান্ডে চাঁদা আদায়ের সময় একজনকে গ্রেপ্তার

বাবার সঙ্গে ফিরলেন নিজ বাড়িতে অনশনরত সেই ছাত্রী

রংপুর মিঠাপুকুর উপজেলার বিয়ের দাবিতে সেনা সদস্যের বাড়িতে অনশনরত সেই অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রাতের আঁধারে রফাদফার পর তার বাবার সঙ্গে নিজ বাড়িতে ফিরেছেন। ২৮ ঘন্টা বিয়ের দাবিতে অনশন শেষে নানান নাটকীয়তার পর গোপনে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে লোকচক্ষুর আড়ালে তার বাবা ঐ নাবালিকা মেয়েকে মোটরসাইকেল যোগে দ্রুত গতিতে সেনাসদস্যের বাড়ি থেকে নিয়ে যান।

গত- সোমবার ১৯ সেপ্টেম্বর রাত্রি আনুমানিক ৮ঃ৩০ মিনিটে প্রেমের সম্পর্কের সূত্রধরে বিয়ের দাবিতে পাশ্ববর্তী বদরগন্জ উপজেলার নাগেরহাট গাছুয়া পাড়ার ব্যাংক কর্মচারী গোলাম মোস্তফার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া (১৩) বছরের নাবালিকা মেয়ে তার ফুফু এবং নানীকে নিয়ে মিঠাপুকুর উপজেলার ০৯ নং-ময়েনপুর ইউনিয়নের ময়েনপুর গাছুয়া পাড়ায় সিরাজুল হকের পুত্র সেনাসদস্য মোঃ রওশন আলীর বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেন। সেনাসদস্য রওশনের সঙ্গে বিয়ে না হলে আত্মহত্যার হুমকি দেন এবং রওশনে সঙ্গে তার অনৈতিক সম্পর্ক ছিলো বলে জানান।

এসময় বাড়িঘর ছেড়ে রওশন ও তার বাবা আত্মগোপনে চলে গিয়েছিলেন। ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর দু’দিন নানান নাটকীয়তা আর মিমাংসার জন্য একাধিক প্রকাশ্য এবং গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও ঐ সেনাসদস্য বিয়ে করতে না চাওয়ায় এবং সেনাসদস্য রওশনের গোপনে আরেক মেয়ের সঙ্গে কাবিননামা সম্পূর্ণ হওয়ার বিষয়টি মেয়ে এবং তার পরিবারকে জানানো হলেও মেয়ে ও তার পরিবার রওশনের সঙ্গে বিয়ের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। এবং মেয়ের মা জানায়,আমার মেয়ের সর্বনাশ করেছে রওশন তাই বিয়ে ছাড়া আর কোন মিমাংসা সম্ভব নয়।

কিন্তু গোপনে গোপনে টাকার বিনিময়ে রফাদফা চলমান ছিলো বলে জানাযায়। স্হানীয় ও গোপনসূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ১১ টার সময় মেয়ের বাবা গোলাম মোস্তফার দাবি করা চাহিদা অনুযায়ী টাকা প্রদানে ঐ সেনাসদস্য এবং তার পরিবার সম্মত হলে স্হানীয় জনপ্রতিনিধি এবং ইউপি সদস্যের মধ্যস্হতায় মেয়ের বাবাকে অর্থ প্রদান করা হয়। এবং গোলাম মোস্তফা ২১ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ১২ঃ৩০ মিনিটে মেয়েকে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন জানান, তিন’লক্ষ টাকায় রফাদফা হয়েছে।

মেয়ের পরিবারের দাবি ছিলো পাঁচ’লক্ষ,পরে তিনলক্ষ টাকায় উভয়ে সম্মতি জ্ঞাপন করেন। শয়ন মন্ডল নামে একজন জানান, লেনদেনের সময় আমি ছিলাম না,তবে তিন’লক্ষ টাকায় মিমাংসার বিষয়টি সঠিক। এ বিষয়ে জানতে ঐ ছাত্রীর বাবা গোলাম মোস্তফার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে,তিনি জানান, আমার মেয়ে গত দুই দিন থেকে ঐ সেনা সদস্যের বাড়িতে অবস্থান করার পরেও কেউ কোন সমাধান করতে পারেনি।

আমার মেয়ের নিরাপত্তার কথা ভেবেই আমার মেয়েকে নিয়ে এসেছি। কত টাকার বিনিময়ে মিমাংসা করেছেন জানতে চাইলে তিনি কৌশলে তা এড়িয়ে যান এবং থানায় যোগযোগ করতে বলেন। ঐ ছাত্রী এবং তার মাকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সেনা সদস্য রওশন বলেন, ওই মেয়ের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। আমি তাকে দেখতে গিয়েছিলাম এরপর ভালো-মন্দ যাচাই করার জন্য কয়েকদিন কথা বলেছি। আমি জানতে পেরেছি ওই মেয়ের বাড়ির পাশে এক ছেলের সাথে সম্পর্ক আছে। পরে পারিবারিক ভাবেই অন্যখানে আমার বিয়ে হয়েছে। মেয়ের পরিবারের সঙ্গে কত টাকায় রফাদফা হয়েছে জানতে চাইলে ফোন কেটে দেন।

মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, এ ব্যাপারে কেউ থানায় কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি। কেউ অভিযোগ করলে বিষয়টি গুরুত্ব-সহকারে দেখা হবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শিগগিরই আরও ১৪ জনকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানো হচ্ছে

বাবার সঙ্গে ফিরলেন নিজ বাড়িতে অনশনরত সেই ছাত্রী

আপডেট সময় ০৮:২১:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

রংপুর মিঠাপুকুর উপজেলার বিয়ের দাবিতে সেনা সদস্যের বাড়িতে অনশনরত সেই অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রাতের আঁধারে রফাদফার পর তার বাবার সঙ্গে নিজ বাড়িতে ফিরেছেন। ২৮ ঘন্টা বিয়ের দাবিতে অনশন শেষে নানান নাটকীয়তার পর গোপনে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে লোকচক্ষুর আড়ালে তার বাবা ঐ নাবালিকা মেয়েকে মোটরসাইকেল যোগে দ্রুত গতিতে সেনাসদস্যের বাড়ি থেকে নিয়ে যান।

গত- সোমবার ১৯ সেপ্টেম্বর রাত্রি আনুমানিক ৮ঃ৩০ মিনিটে প্রেমের সম্পর্কের সূত্রধরে বিয়ের দাবিতে পাশ্ববর্তী বদরগন্জ উপজেলার নাগেরহাট গাছুয়া পাড়ার ব্যাংক কর্মচারী গোলাম মোস্তফার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া (১৩) বছরের নাবালিকা মেয়ে তার ফুফু এবং নানীকে নিয়ে মিঠাপুকুর উপজেলার ০৯ নং-ময়েনপুর ইউনিয়নের ময়েনপুর গাছুয়া পাড়ায় সিরাজুল হকের পুত্র সেনাসদস্য মোঃ রওশন আলীর বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেন। সেনাসদস্য রওশনের সঙ্গে বিয়ে না হলে আত্মহত্যার হুমকি দেন এবং রওশনে সঙ্গে তার অনৈতিক সম্পর্ক ছিলো বলে জানান।

এসময় বাড়িঘর ছেড়ে রওশন ও তার বাবা আত্মগোপনে চলে গিয়েছিলেন। ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর দু’দিন নানান নাটকীয়তা আর মিমাংসার জন্য একাধিক প্রকাশ্য এবং গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও ঐ সেনাসদস্য বিয়ে করতে না চাওয়ায় এবং সেনাসদস্য রওশনের গোপনে আরেক মেয়ের সঙ্গে কাবিননামা সম্পূর্ণ হওয়ার বিষয়টি মেয়ে এবং তার পরিবারকে জানানো হলেও মেয়ে ও তার পরিবার রওশনের সঙ্গে বিয়ের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। এবং মেয়ের মা জানায়,আমার মেয়ের সর্বনাশ করেছে রওশন তাই বিয়ে ছাড়া আর কোন মিমাংসা সম্ভব নয়।

কিন্তু গোপনে গোপনে টাকার বিনিময়ে রফাদফা চলমান ছিলো বলে জানাযায়। স্হানীয় ও গোপনসূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ১১ টার সময় মেয়ের বাবা গোলাম মোস্তফার দাবি করা চাহিদা অনুযায়ী টাকা প্রদানে ঐ সেনাসদস্য এবং তার পরিবার সম্মত হলে স্হানীয় জনপ্রতিনিধি এবং ইউপি সদস্যের মধ্যস্হতায় মেয়ের বাবাকে অর্থ প্রদান করা হয়। এবং গোলাম মোস্তফা ২১ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ১২ঃ৩০ মিনিটে মেয়েকে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন জানান, তিন’লক্ষ টাকায় রফাদফা হয়েছে।

মেয়ের পরিবারের দাবি ছিলো পাঁচ’লক্ষ,পরে তিনলক্ষ টাকায় উভয়ে সম্মতি জ্ঞাপন করেন। শয়ন মন্ডল নামে একজন জানান, লেনদেনের সময় আমি ছিলাম না,তবে তিন’লক্ষ টাকায় মিমাংসার বিষয়টি সঠিক। এ বিষয়ে জানতে ঐ ছাত্রীর বাবা গোলাম মোস্তফার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে,তিনি জানান, আমার মেয়ে গত দুই দিন থেকে ঐ সেনা সদস্যের বাড়িতে অবস্থান করার পরেও কেউ কোন সমাধান করতে পারেনি।

আমার মেয়ের নিরাপত্তার কথা ভেবেই আমার মেয়েকে নিয়ে এসেছি। কত টাকার বিনিময়ে মিমাংসা করেছেন জানতে চাইলে তিনি কৌশলে তা এড়িয়ে যান এবং থানায় যোগযোগ করতে বলেন। ঐ ছাত্রী এবং তার মাকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সেনা সদস্য রওশন বলেন, ওই মেয়ের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। আমি তাকে দেখতে গিয়েছিলাম এরপর ভালো-মন্দ যাচাই করার জন্য কয়েকদিন কথা বলেছি। আমি জানতে পেরেছি ওই মেয়ের বাড়ির পাশে এক ছেলের সাথে সম্পর্ক আছে। পরে পারিবারিক ভাবেই অন্যখানে আমার বিয়ে হয়েছে। মেয়ের পরিবারের সঙ্গে কত টাকায় রফাদফা হয়েছে জানতে চাইলে ফোন কেটে দেন।

মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, এ ব্যাপারে কেউ থানায় কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি। কেউ অভিযোগ করলে বিষয়টি গুরুত্ব-সহকারে দেখা হবে।