ইদানীংকালে ব্যস্ত জীবন, বদলে যাওয়া খাদ্যের অভ্যাস—সব উপাদান মিলে নানা ধরনের অসুখ হানা দিচ্ছে শরীরে, এ ধরনের একটি হলো রক্তে ইউরিক এসিড বেড়ে যাওয়া। আজকাল কম বয়সীদের মধ্যেও দেখা দিচ্ছে।
কারণ
ইউরিক এসিড হলো স্বাভাবিকভাবে শরীরে তৈরি হওয়া রাসায়নিক। এর উৎপাদন হয় পিউরিন নামের এক রাসায়নিক থেকে। এই পিউরিনসমৃদ্ধ খাবার যেমন—রেড মিট, অরগান মিট, সি-ফিশ ও বিয়ার খেলে এর উৎপাদন বেশি হয়। তাই রক্তেও বাড়ে এর পরিমাণ।
জটিলতা
একসময় তীব্র ব্যথা ঝিমিয়ে এলেও এক ধরনের অস্বস্তি দীর্ঘদিন থেকে যায়। এতে শরীরের সচলতাও কমে। ইউরিক এসিডের মান প্রতি ডেসিলিটার রক্তে ৭ মিলিগ্রামের বেশি হলে বিপদ। তখন হয় গেঁটে বাত। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এটি গাউট নামে পরিচিত। শীতে এর প্রভাবে ব্যথায় কাতর হয় অনেকে।
ইউরিক এসিড স্ফটিক আকারে জমা হয় অস্থিসন্ধিতে, বিশেষ করে পায়ের বুড়ো আঙুল ছাড়াও অন্যান্য আঙুলে হয় গেঁটে বাত। আর হতে পারে কিডনিতে পাথর। রক্তে ইউরিক এসিড বাড়তি থাকলে এক সময় হতে পারে ক্রনিক কিডনি ডিজিজ। ইউরিক এসিড বাড়লে তা কিডনি দিয়ে বেরোতে চায় আর কিডনি বিকল হলে এই বর্জ্য বেরোতে সমস্যা হয়। এই অবস্থাকে চিকিৎসাবিদ্যার ভাষায় বলা হয় ‘হাইপার ইউরেসেমিয়া’। শরীর যদি খুব বেশি ইউরিক এসিড উৎপাদন করে বা শরীর থেকে খুব কম পরিমাণে বের হয় তাহলে হাইপার ইউরেসেমিয়া হয়।
করণীয়
স্যাচুরেটেড চর্বি, প্রোটিন, টক জাতীয় খাবার, চকলেট, কফি, কোমল পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে। চর্বি, কলিজা পুরোপুরি বাদ দিতে হবে। প্রোটিন জাতীয় খাবার যেমন পালং শাক, ডাল, মাশরুম, শিম, বরবটি, খেজুর, কিশমিশ, তাল, আখ এড়িয়ে চলতে হবে। খেলেও খুবই সামান্য পরিমাণে পাতে নিতে হবে।
শরীরে ওজন বেশি থাকলে কমাতে হবে। প্রচুর পানি পানের পাশাপাশি কলা, আপেল, চেরি ফল, সাইট্রাস ফল, গ্রিন টি, আঙুর, স্ট্রবেরি, কমলা, আনারস খাওয়া ভালো। লো ফ্যাট দই খেতে পারেন পরিমিত। অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করা যাবে না। খাবার নিয়ন্ত্রণে সুফল না পেলে ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ খেতে হবে।