‘ইন্টারনেট’ মূলত বিদ্যুতের মতো নয়। বিদ্যুৎ কেউ না কেউ উৎপাদন করে সরবরাহ করছে। সেই বিদ্যুৎ আমরা ব্যবহার করছি। কিন্তু, ইন্টারনেটের বিষয়টি এরকম নয়। ‘উৎপন্ন হওয়ার’ বিষয়টি এখানে নেই।
ডাটা ইউজ
এটা হলো ট্রান্সফার করা ডাটার ওজন। কত কিলোবাইট বা মেগাবাইট ডাটা ট্রান্সফার করা হচ্ছে। ধরা যাক, ২০ মেগাবাইটের একটি ফাইল ডাউনলোড করা হয়েছে। সেখানে ২০ মেগাবাইট ডাটা আপনার ইন্টারনেট সংযোগটি দিয়ে ট্রান্সফার হয়ে আসল। আবার আপনি একটি ই-মেইল পাঠালেন, সেখানে ১ মেগাবাইট ডাটা আপনার সংযোগটি দিয়ে ট্রান্সফার হয়ে গেল।
তাহলে আপনার মোট ব্যবহার হলো ২০+১= ২১ মেগাবাইট ডাটা। বুঝতেই পারছেন, যতটুকু গেলো, আর যতটুকু আসলো- সেই দুটোর যোগফলই হচ্ছে আপনার মোট ব্যবহার (ডাটা ইউজেস বা ডাটা খরচ)। আপনি যেটা পাঠালেন সেটা কিন্তু উৎপাদন নয়।
ডাটা লিমিট
সাধারণত এটিকে বলা হয়, ‘ডাটা’ বা ‘এমবি’। মোবাইল ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে এই শব্দ দুটিই ব্যবহার করা হয়। এই ‘ডাটা’ বলতে বোঝানো হয় ডাটা ব্যবহারের লিমিট। অর্থাৎ সর্বমোট কত পরিমাণ ডাটা ট্রান্সফার করতে পারবেন। মোবাইল ইন্টারনেটের প্যাকেজে ডাটা লিমিট উল্লেখ করা হয়। যেমন- ৫০০ এমবি-এর একটি প্যাকেজ নিলেন। তাহলে আপনি আপনার সংযোগটির (অর্থাৎ সিম কার্ডটির) মাধ্যমে, সেন্ড এবং রিসিভ মিলিয়ে সর্বমোট ৫০০ এমবি ডাটা ট্রান্সফার করার অধিকার পেলেন। উল্লেখ্য, ব্রডব্যান্ডের প্যাকেজে ডাটা লিমিট থাকে না। সেখানে আনলিমিটেড ডাটা ট্রান্সফার করা যায়।
স্পিড লিমিট
সচরাচর বলা হতে পারে, ‘কত এমবির কানেকশন?’ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের প্যাকেজে স্পিড লিমিট উল্লেখ করা হয়। যেমন- ৫০০ কেবিপিএসের একটি ব্রডব্যান্ড প্যাকেজ নিলেন। তাহলে আপনি আপনার সংযোগটির মাধ্যমে, সর্বোচ্চ ৫০০ কেবিপিএস স্পিডে ডাটা ট্রান্সফার করার সুযোগ পেলেন। তেমনিভাবে ১ এমবিপিএসের কানেকশনে সর্বোচ্চ ১ এমবিপিএস স্পিডে ডাটা ট্রান্সফার করার সুযোগ পান। মোবাইল ইন্টারনেটে সাধারণত স্পিড লিমিট উল্লেখ করা থাকে না। কোথাও কোথাও থাকে, সেটি ৩-জি, ৪-জি এভাবে আবার নতুন করে সংযুক্ত হয়েছে ৫-জি।
আইএসপির ভূমিকা
আপনি যখন একজন গ্রাহক হিসেবে কোনো একটি আইএসপি-এর (অর্থাৎ ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের) কাছ থেকে ইন্টারনেট প্যাকেজ কেনেন, তখন সেই আইএসপির স্থাপন করা সংযোগের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকেন।
সেক্ষেত্রে যেকোনো ব্রডব্যান্ড কোম্পানি এবং মোবাইল কোম্পানিও এক একটি আইএসপি হিসেবে কাজ করছে। এই আইএসপি আবার আরো বড় কোনো সার্ভিস প্রোভাইডারের কাছ থেকে প্যাকেজ কেনে এবং তাদের বসানো সংযোগের সঙ্গে তাদের নিজেদের নেটওয়ার্ক সংযুক্ত করে রাখে। তাহলে আপনার ডিভাইস এবং বৃহৎ নেটওয়ার্ক এই দুইয়ের মধ্যে সংযোগ সৃষ্টিকারী হলো আইএসপি।
ইন্টারনেটের উৎস
আগেই বলেছি যে ইন্টারনেটের উৎপাদন বলে কিছু নেই। যতগুলো ডিভাইস ইন্টারনেটে যুক্ত থাকে তাদের সমষ্টিই হলো ইন্টারনেট। অর্থাৎ উৎপাদন নেই, সংযোগ আছে। আর আছে ডাটা ট্রান্সফার।
আর এসব সংযুক্ত ডিভাইসগুলোর মধ্যে কিছু কিছু স্টোরেজ (সার্ভার) আছে। যেগুলো সার্বক্ষণিক সংযুক্ত (এবং সচল) রাখতে চেষ্টা করা হয়। যাতে সেগুলো থেকে যে কেউ যেকোনো সময়ে তথ্য নিতে পারে। কোনোভাবে সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকলে তখন সার্ভার ডাউন দেখায়।