মানুষের প্রশংসা বা নিন্দা করা হয় তার কাজের ওপর ভিত্তি করে। কেউ ভালো কাজ করলে নিন্দুকেরা হাজার চেষ্টা করেও তাকে দমিয়ে রাখতে পারে না। তার ভালো কাজের সুনাম-খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। আবার মন্দ কাজ করে কেউ চাইলেও মানুষের ভালোবাসা কুড়াতে পারে না।
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘বলুন ইয়া আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম শক্তির অধিকারী। তুমি যাকে ইচ্ছা রাজ্য দান কর আর যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজ্য ছিনিয়ে নাও এবং যাকে ইচ্ছা সম্মান দান কর আর যাকে ইচ্ছা অপমান কর। তোমারই হাতে রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ। নিশ্চয়ই তুমি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল। ’ -(সূরা আল ইমরান : ২৬)
ইসলাম যেভাবে মানুষের জীবনের প্রতিটি বিষয় নিয়ে সীমারেখা বেধে দিয়েছে ঠিক তেমনি কারও প্রশংসা বা সমালোচনা করার ক্ষেত্রেও ভারসাম্য রক্ষার নির্দেশ দিয়েছে; বিশেষত ব্যক্তিপ্রশংসার ব্যাপারে সীমা রক্ষা করার এবং শরিয়তের মূলনীতি মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছে।
শরিয়তের মূলনীতির মধ্যে থেকে কোনো ব্যক্তির প্রশংসা করা বৈধ। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ একাধিক নবীর প্রশংসা করেছেন। যেমন ইয়াহইয়া (আ.)-এর ব্যাপারে ইরশাদ হয়েছে, ‘সে হবে আল্লাহর বাণীর সমর্থক, নেতা, স্ত্রী বিরাগী এবং পুণ্যবানদের মধ্যে একজন নবী। ’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৩৯)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-ও তাঁর সাহাবিদের প্রশংসা করেছেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩২৯৪)
কোন ব্যক্তির প্রশংসা ও গুণাবলী বর্ণনার সময় তার সম্পর্কে নিজের ধারণা বলতে হবে এবং তার সম্পর্কে প্রকৃত জ্ঞান শুধুমাত্র আল্লাহরই আছে বলে উল্লেখ করতে হবে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের যদি কখনো কাউকে প্রশংসা করতেই হয় তাহলে বলবে,
أَحْسِبُ فُلَانًا وَاللَّهُ حَسِيبُهُ وَلَا أُزَكِّي عَلَى اللَّهِ أَحَدًا أَحْسِبُهُ كَذَا وَكَذَا
অর্থঃ আমি অমুককে এইরূপ মনে করি, আল্লাহই তাকে ভালো জানেন (তার পরিপূর্ণ হিসাব সংরক্ষক), আল্লাহর উপরে আমি কাউকে ভালো বলছি না। আমি তাকে অমুক অমুক গুণের অধিকারী বলে মনে করি। -(সহীহ বুখারী ২/৯৪৬, ৫/২২৮১, সহীহ মুসলিম ৪/২২৯৬)
যার প্রশংসা করা হবে সে এই দোয়া পড়বে-
اللَّهُمَّ لَا تُؤَاخِذْنِي بِمَا يَقُولُونَ، وَاغْفِرْ لِي مَا لَا يَعْلَمُونَ، وَاجْعَلْنِي خَيْرًا مِمَّا يَظُنُّونَ
অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! তারা যা বলে সেজন্য আমাকে অভিযুক্ত করো না এবং তারা যে ব্যাপারে জ্ঞাত নয় সে ব্যাপারে আমাকে ক্ষমা করো। (বুখারী, আল-আদাবুল মুফরাদ ১/২৬৭, বাইহাকী, শু’আবুল ঈমান ৪/২২৭, ২২৮)