সোরিয়াসিস হলো ইমিউন সিস্টেমের সঙ্গে সম্পর্কিত রোগ। এই রোগে হয় প্রদাহ আর এর সঙ্গে ইমিউন সিস্টেমের কর্মক্ষমতার বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। সোরিয়াসিস পাঁচ রকমের হয়ে থাকে। এই রোগ ছোঁয়াচে নয়।ত্বকের এই অসুখ সম্বন্ধে ধারণা দিতে গোড়ার কথা বলি।
ত্বকের স্তর দুটি—
১. ওপরের স্তর হলো এপিডার্মিস বা বহিঃত্বক
২. ভেতরের ত্বক হলো ডার্মিস বা অন্তঃত্বক
বহিঃত্বকের ঠিক ওপরের অংশ হলো কেরাটিন, যা এক ধরনের প্রোটিন। নির্দিষ্ট সময় অন্তর কেরাটিন খসে যায় আর এর নিচের সজীব কোষ উঠে আসে। সময় হলে এরাও খসে পড়ে। চক্রাকারে এমন চলতেই থাকে। ত্বকবিজ্ঞানে একে বলে এপিডার্মিস টার্নওভার। এই নিরন্তর চলতে থাকা প্রক্রিয়ায় বিশৃঙ্খলা হলে সোরিয়াসিস দেখা দেয়। এমন অদলবদল বা টার্নওভার সমাপ্ত হতে সময় লাগে ২৮ দিন। মানে এ সময়ের মধ্যেই বহিঃত্বকের আয়ু শেষ হয়।
কিন্তু এই সময়ের বদলে যদি পরিবর্তনটা দ্রুত ঘটে, অর্থাৎ তিন থেকে চার দিন লাগে, তবে ইমিউন সিস্টেম অতি সক্রিয় হওয়ায় ত্বকের কোষের বৃদ্ধি খুব দ্রুত হয়।
কারণ : এর কারণ খুব স্পষ্ট নয়। কিছু জিনিস একে ট্রিগার করতে বা উসকে দিতে পারে। ট্রিগারের কারণ ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে।
লক্ষণ : শরীরের নানা অংশ থেকে ছাল উঠতে শুরু করে। শুধু ছাল ওঠার মধ্যেই এই সমস্যা সীমাবদ্ধ থাকে না। এর সঙ্গে থাকে ভয়ংকর চুলকানি, র্যাশ, ব্যথা, চুলকাতে চুলকাতে সংক্রমণ হয়ে ঘা হতে পারে।
শরীরের অন্যান্য জায়গার তুলনায় কনুই, হাঁটু আর করোটি ত্বকে বেশি পরিমাণে ছাল ওঠে। প্রদাহ হয়, আর তাই মাছের আঁশের মতো ত্বকের ছাল ওঠে। মাথায় বাড়াবাড়ি রকমের খুশকি হতে পারে। নখে এর প্রভাব পড়াতে গর্ত হয়ে যেতে পারে। ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সের মধ্যে এই রোগের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। আবার যেকোনো বয়সে যে কেউ এতে আক্রান্ত হতে পারে।
চিকিৎসা : এই রোগ কখনো নিরাময় হয় না। তবে চিকিৎসার নানা বিকল্প আছে। তাই উপসর্গ দেখলে দ্রুত ত্বক বিশেষজ্ঞকে দেখাতে হবে। রোগের লক্ষণ অনুযায়ী বিশেষ ধরনের স্টেরয়েড ওষুধ দিয়ে রোগ আটকে দেওয়া যায়।
স্কিন বায়োপসি করে রোগ সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়া যায়। শুরুতে চিকিৎসা করা খুব জরুরি। রোগ চুপসে থাকলেও আবার ঘুরে-ফিরে আসে। এই রোগ স্ট্রেস উসকে দেয়। তাই স্ট্রেস কমানো চিকিৎসার অন্যতম অংশ।