ঢাকা ১১:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজবাড়ী আওয়ামী লীগের ১৯ নেতাকর্মী কারাগারে

মোঃ হেলাল উদ্দিন সরদার রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি রাজবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলিবর্ষণের মামলায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ১৯ নেতাকর্মীর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। রোববার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে তারা রাজবাড়ী সদর আমলী আদালতে আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. তামজিদ আহমেদ তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।   কারাগারে পাঠানো নেতাকর্মীরা হলেন- মো. সাজ্জাদুল কবির তানজিম, মো. রফিকুল ইসলাম খোকন, রিপন, মো. দেলোয়াল হোসেন, রিয়াজুল হাসান, মো. নূরে আলম, শামীম আহম্মেদ, নয়ন হোসেন খান, সাইফুদ্দিন আহম্মেদ সুজন, সুমন শেখ, মো. জামাল খান, আমিরুল ইসলাম, শফিক খান বাবু, আল ফারহান ফাহিম, অনিক হাসান খান, মো. আলহাজ শেখ, মো. শাহিন মোল্লা, মো. হাসেম খান ও মো. জসিম। জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলিবর্ষণের অভিযোগে গত ৩০ আগস্ট রাজবাড়ী সদর থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন রাজবাড়ী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী রাজিব মোল্লা। মামলায় রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক এমপি কাজী কেরামত আলী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলীসহ ১৭০ জনের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ জনকে আসামি করা হয়। আজ কারাগারে পাঠানো ১৯ জন এ মামলার এজাহারনামীয় আসামি। সদর উপজেলার মাটিপাড়ার কাউরিয়া গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাক মোল্লার ছেলে রাজিব মোল্লা মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, গত ১৮ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র, অভিভাবক ও শিক্ষকরা রাজবাড়ী শহরের বড়পুল মোড়ে অবস্থান নেন। বিকেলে উল্লেখিত এজাহারনামীয় আসামিরা তাদের সঙ্গীদের সঙ্গে দেশীয় অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে অতর্কিতভাবে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালান। সাবেক সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলীর নির্দেশে এজাহারনামীয় আসামিরা তাদের সঙ্গীদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনকারীদের হত্যার উদ্দেশ্যে বোমা নিক্ষেপ করে ও গুলি করে। এ ছাড়া আন্দোলনকারীদের বেধড়ক মারধর করে গুরুতর জখম করা হয়। আসামিরা আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেননি। আসামিদের আক্রমণে সোনিয়া আক্তার স্মৃতি, নুরুন্নবী, আশিক ইসলাম অভি, রাজিব মোল্লা, মেহেরাব, আলতাফ মাহমুদ সাগর, উৎস সরকার, রিয়াজসহ অসংখ্য আন্দোলনকারী আহত হন। রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আসামিরা মহামান্য হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়েছিলেন। তবে জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তারা হাইকোর্টের শর্ত অনুযায়ী আদালতে হাজির হননি। আদালতের নির্দেশ তারা অমান্য করেছিলেন। আজ তারা রাজবাড়ী সদর আমলী আদালতে আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রাজবাড়ী আওয়ামী লীগের ১৯ নেতাকর্মী কারাগারে

আপডেট সময় ১১:৫৭:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

মোঃ হেলাল উদ্দিন সরদার রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি রাজবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলিবর্ষণের মামলায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ১৯ নেতাকর্মীর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। রোববার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে তারা রাজবাড়ী সদর আমলী আদালতে আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. তামজিদ আহমেদ তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।   কারাগারে পাঠানো নেতাকর্মীরা হলেন- মো. সাজ্জাদুল কবির তানজিম, মো. রফিকুল ইসলাম খোকন, রিপন, মো. দেলোয়াল হোসেন, রিয়াজুল হাসান, মো. নূরে আলম, শামীম আহম্মেদ, নয়ন হোসেন খান, সাইফুদ্দিন আহম্মেদ সুজন, সুমন শেখ, মো. জামাল খান, আমিরুল ইসলাম, শফিক খান বাবু, আল ফারহান ফাহিম, অনিক হাসান খান, মো. আলহাজ শেখ, মো. শাহিন মোল্লা, মো. হাসেম খান ও মো. জসিম। জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলিবর্ষণের অভিযোগে গত ৩০ আগস্ট রাজবাড়ী সদর থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন রাজবাড়ী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী রাজিব মোল্লা। মামলায় রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক এমপি কাজী কেরামত আলী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলীসহ ১৭০ জনের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ জনকে আসামি করা হয়। আজ কারাগারে পাঠানো ১৯ জন এ মামলার এজাহারনামীয় আসামি। সদর উপজেলার মাটিপাড়ার কাউরিয়া গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাক মোল্লার ছেলে রাজিব মোল্লা মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, গত ১৮ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র, অভিভাবক ও শিক্ষকরা রাজবাড়ী শহরের বড়পুল মোড়ে অবস্থান নেন। বিকেলে উল্লেখিত এজাহারনামীয় আসামিরা তাদের সঙ্গীদের সঙ্গে দেশীয় অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে অতর্কিতভাবে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালান। সাবেক সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলীর নির্দেশে এজাহারনামীয় আসামিরা তাদের সঙ্গীদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনকারীদের হত্যার উদ্দেশ্যে বোমা নিক্ষেপ করে ও গুলি করে। এ ছাড়া আন্দোলনকারীদের বেধড়ক মারধর করে গুরুতর জখম করা হয়। আসামিরা আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেননি। আসামিদের আক্রমণে সোনিয়া আক্তার স্মৃতি, নুরুন্নবী, আশিক ইসলাম অভি, রাজিব মোল্লা, মেহেরাব, আলতাফ মাহমুদ সাগর, উৎস সরকার, রিয়াজসহ অসংখ্য আন্দোলনকারী আহত হন। রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আসামিরা মহামান্য হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়েছিলেন। তবে জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তারা হাইকোর্টের শর্ত অনুযায়ী আদালতে হাজির হননি। আদালতের নির্দেশ তারা অমান্য করেছিলেন। আজ তারা রাজবাড়ী সদর আমলী আদালতে আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।