বিরামহীন পেশাদারিত্বের ছকবাঁধা জীবনকে কয়েকঘন্টার জন্য দূরে ঠেলে দিয়ে মেতে উঠেছিলো গণমাধ্যম কর্মীরা ঈদ আড্ডা ও সঙ্গীত সন্ধ্যায়। শৈশব-কিশোর বয়সের ঈদ নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন নবীন-প্রবীণ সাংবাদিক ও আমন্ত্রিত অতিথিরা। আর এই ব্যতিক্রমী আয়োজন করেন সাংবাদিকদের সৃজনশীল সংগঠন সিটি প্রেসক্লাব রংপুর। রোববার সন্ধ্যায় শুল্কগোয়েন্দা ক্যাম্পাসে গণমাধ্যমকর্মীদের ঈদ আড্ডা ও সঙ্গীত সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সম্মানিত অতিথি ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. প্রফেসর মো: শওকাত আলী, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ মজিদ আলী, সাংবাদিক ইউনিয়ন রংপুরের সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেক, সিটি প্রেসক্লাব রংপুরের আজীবন সদস্য ও যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ওয়াজকুরনী সজিব, আজীবন সদস্য তানভীর আহমেদ তুষার ও সঙ্গীত শিল্পী অন্তর রহমান, ক্লাবের আইন উপদেষ্টা এডভোকেট পলাশ কান্তি নাগ। সভাপতিত্ব করেন ক্লাব সভাপতি স্বপন চৌধুরী।
শৈশবের ঈদ স্মৃতিচারণে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. প্রফেসর মো: শওকাত আলী বলেন, শৈশবের ঈদে অনেক বেশি আনন্দ ছিলো। কোন যান্ত্রিকতা ছিলো না। সবার মাঝে সাম্য আর সম্প্রীতির বন্ধন ছিলো। সেই সময় বিনোদন বলতে ফুটবল খেলা, কাবাডি, সময়বয়সীদের আড্ডা স্কুল মাঠে দেয়া, সিনেমা হলে সিনেমা দেখা। আত্মীয়ের বাড়িতে ঘুরে বেড়ানো ছিলো পারিবারিক ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। এখন এসব যান্ত্রিকতা গ্যাঁড়াকলে বন্ধি। এখন কিশোররা মোবাইল যান্ত্রিকতায় ব্যস্ত। তরুণদের উদ্দেশ্যে ভিসি বলেন, বড় বড় স্বপ্ন দেখতে হবে। স্বপ্ন দেখলে একসময় তা বাস্তবতা পাবে। তিনি ১৯৫২, ১৯৭১ ও ২০২৪ এ তরুণদের ভুমিকার প্রশংসা করেন।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ মজিদ আলী বলেন, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ঈদের এক মাস আগে থেকে পরিকল্পনা হতো, ঈদে কোন আত্মীয়ের বাড়িতে যাবো। কোথায় গিয়ে বেশি আড্ডা দেয়া যাবে। একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের সাথে শৈশবে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়া হতো। সৃজনশীল সিনেমা নাটক উপভোগে ঈদের আনন্দের অংশ ছিলো। এখন সেই সৃজনশীলতা হারিয়ে গেছে সিনেমা নাটক থেকে। এখন সেই সব দিনও আর নেই। সবাই এখন একাকী পরিবার নিয়ে ব্যস্ত। পারিবারিক সম্প্রীতির বন্ধন নেই। সমাজ ও পরিবার জীবনে পারিবারিক সম্প্রীতি দরকার।
ঈদ আড্ডায় সঙ্গীত পরিবেশন করেন ফারহান শাহীল লিয়ন, মারিয়া সুলতানা, তৈয়বুর রহমান ডিকু, শাহ আলম, হাসান ফেরদৌস রাসেল। কবিতায় অংশ নেন ক্লাবের সহসভাপতি হামীম আব্দুল্লাহ, সদস্য রকিফুল ইসলাম সাবুল, মৌসুমী শংকর ঋতা। সঞ্চালনা করেন ক্লাব সেক্রেটারী হুমায়ুন কবীর মানিক ও কোষাধ্যক্ষ রেজাউল করিম জীবন। সঙ্গীত পরিবেশনের পাশাপাশি নবীন-প্রবীণ ও আমন্ত্রিত অতিথিরা ঈদ আড্ডায় শৈশবের স্মৃতিচারণ করেন। ঈদ আড্ডায় রংপুরের গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে সকলে নৈশভোজে অংশ নেন।