সময় পেরিয়ে যাচ্ছিল। তথৈবচ প্রথমার্ধ শঙ্কাটা বাড়িয়েই যাচ্ছিল। কিন্তু গোলের দেখা পাচ্ছিল না আলবিসেলেস্তেরা। যে গোল না পেলে বিদায়ের খুব কাছেই চলে যাবে দল। এমন সব মুহূর্তে আর্জেন্টিনা যার দিকে তাকিয়ে থাকে, আজও ছিল তার দিকেই। অবশেষে লিওনেল মেসিই করলেন মহাগুরুত্বপূর্ণ সেই গোলটা। তাতে আর্জেন্টিনার আশার প্রদীপটাও জ্বলে রইল নিভু নিভু করে।
ম্যাচটা যে আর্জেন্টিনার বাঁচা-মরার লড়াই, প্রথমার্ধের খেলাতে অন্তত বোঝা যায়নি। শুরুর ৪৫ মিনিটে আর্জেন্টিনা যে গোলরক্ষক গিলের্মো ওচোয়াকে তেমন পরীক্ষাতেই ফেলতে পারেনি! শট নিয়েছে মোটে একটা, তাও সেটা হয়েছে লক্ষ্যভ্রষ্ট।
দুই দলই একটা করে পেয়েছে ফ্রি কিক, মেক্সিকো বক্সের ডান প্রান্তে পাওয়া ফ্রি কিকটা থেকে মেসির শট অনেকটা অনায়াসেই ঠেকিয়েছেন ওচোয়া। ওদিকে আর্জেন্টিনা বক্সের সামনে পাওয়া ফ্রি কিকটা একটু এদিক ওদিক হলে গোলই হয়ে যেতে পারত। এমিলিয়ানো মার্টিনেজ ছিলেন বলে রক্ষা। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে বলটা আয়ত্বে নিতে হয়েছে তাকে। তাই গোল হজম করে প্রথমার্ধ বিরতিতে যাওয়া থেকে রক্ষা পায় আর্জেন্টিনা।
এই ম্যাচে আর্জেন্টিনার যে জয় চাই, তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু মাঠের পারফর্ম্যান্সে তার ছাপ ছিল না মোটেও। ম্যাচটা জিততে হলে পারফর্ম্যান্সটাকে আমূলেই বদলে ফেলতে হতো দলকে। আমূলে না হলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে সেটা কিছুটা হলেও বদলালেন মেসিরা। বলের দখল বাড়ালেন, বাড়ল প্রতিপক্ষ রক্ষণে মেসি, ডি মারিয়াদের উপস্থিতিও।
কিন্তু যে গোলের জন্য এত কিছু, সে গোলটাই যেন পাচ্ছিল না মেসির দল। অতীতে এমন সব মুহূর্তে বহুবার আর্জেন্টিনাকে পরিত্রাণের পথ দেখিয়েছেন মেসি। আজও মেসি ম্যাজিকের অপেক্ষাতেই যেন ছিল আকাশী-সাদারা।
মেসি সেই আশা পূরণ করলেন এসে ম্যাচের ৬৩ মিনিটে। বক্সের বাইরে বল পেয়ে সঙ্গে একটু স্পেসও পেয়ে গিয়েছিলেন। জাদুটা দেখালেন তখনই। সামনে ছিল মেক্সিকোর পুরো রক্ষণ, গোলরক্ষক গিলের্মো ওচোয়া তো বটেই। রক্ষণের জটলায় একটু ফাঁকা দেখলেন যেন, ট্রিগারটা চেপে বসলেন সঙ্গে সঙ্গে। মেক্সিকান রক্ষণ আর ওচোয়াকে ফাঁকি দিয়ে বলটা গিয়ে জড়ায় জালে। মহাগুরুত্বপূর্ণ গোলের দেখাটা পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যায় মেসিদের দ্বিতীয় রাউন্ডের আশাটাও।