নিজেদের পঞ্চম বিশ্বকাপের যাত্রা আজ শুরু করল জার্মানি। তবে ম্যাচ শুরুর পরই ভিন্ন এক কারণে শিরোনামে এলো দলটি। চার বারের চ্যাম্পিয়নরা আজ যখন জাপানের মুখোমুখি হলো, তার আগের ফটোসেশনে করল অদ্ভুত এক কাণ্ড। দলীয় সেই ফটোসেশনে হাত দিয়ে মুখ লুকালেন সবাই!
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে এমন কাণ্ড করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার জন্মই দিয়ে বসেছে জার্মান জাতীয় দল। কেন এমন কাজ করল জার্মানি, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
তবে এই প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে আছে ফিফার এক নিয়মে। বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ড, ওয়েলসসহ আরও পাঁচ দেশ সমকামী, রূপান্তরকামীদের সমর্থনে ‘ওয়ান লাভ’ নামের আর্মব্যান্ড পরে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছিল, তাতে ছিল জার্মানির নামও। ফিফা তাতে বাঁধ সাধে। জানানো হয়, ফিফার বেঁধে দেওয়া আর্মব্যান্ড পরেই নামতে হবে মাঠে।
এমনিতে ফিফার আর্মব্যান্ডেও ঐক্য আর সমতার কথা বলা হয়েছে। প্রতি রাউন্ডে বদলে যাবে এই ব্যান্ডের স্লোগান। সঙ্গে একটা নিয়মও বেঁধে দিয়েছে। এই বাহুবন্ধনীর বাইরে কিছু পরলে তাকে দেখানো হবে হলুদ কার্ড, মাঠে নামার আগেই!
এখন বিশ্বকাপে দুই ম্যাচে যদি হলুদ কার্ড দেখেন কেউ, পরের ম্যাচে তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিষিদ্ধ হয়ে যাবেন তিনি। ওয়ান লাভ ব্যান্ড পরে মাঠে নেমে হলুদ কার্ড দেখলে অধিনায়ককে ছাড়াই শেষ গ্রুপ ম্যাচে মাঠে নামতে হতে পারে দলগুলোকে।
তবে জার্মানির রাগটা শেষ হয়ে যায়নি। ফিফার এই নিয়মকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে আজ। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচের আগে তাদের এই কাণ্ডটা তারই একটা অংশ।
ফটোসেশনে থমাস মুলার-ম্যানুয়েল নয়্যাররা মুখ লুকানো যে ‘ওয়ান লাভ’ ব্যান্ড পরতে না দেওয়ার জন্যেই, সেটা নিশ্চিত করা হলো জার্মান দলের এক বিবৃতিতে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘আমাদের জার্মান জাতীয় দল যে বৈচিত্র্য ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার মূল্যবোধ ধারণ করে, তাত পাশে দাঁড়াতে আমরা আমাদের অধিনায়কের বাহুবন্ধনিটাকে ব্যবহার করতে চেয়েছিলাম। অন্য সব দেশের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা আওয়াজ তুলতে চেয়েছিলাম।’
‘বিষয়টা কোনো রাজনৈতিক বিবৃতি গোছের কিছু ছিল না; বিষয়টা মানবাধিকারের, আর এই বিষয়টা মোটে ছাড় দেওয়ার মতো কোনো বিষয় নয়। বিষয়টা সাধারণ একটা বিষয় হিসেবেই দেখা উচিত, কিন্তু বাস্তবে এখনো সেভাবে দেখা হচ্ছে না। সে কারণে এই বার্তাটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
‘আমাদেরকে আমাদের ইচ্ছেমতো বাহুবন্ধনি পরতে না দিয়ে আমাদের বাকস্বাধীনতায় বাগড়া দেওয়া হয়েছে। আমরা আমাদের অবস্থানে অটল আছি।’
এমন বিবৃতির পর জার্মান দলের ওপর ফিফার কোনো খড়্গ এসে পড়ে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।