ঢাকা ০৭:১২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

দ্রুত নির্বাচন চায় বিএনপি ও মিত্ররা

দেশে বিদ্যমান সংকটময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত নির্বাচন চায় বিএনপি ও তার মিত্র দলগুলো। সোমবার রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে মিত্রদের বৈঠক হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দ্রুত নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন মিত্র দলগুলোর শীর্ষ নেতারা। এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে সার্বিক সহযোগিতার ভিত্তিতে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা যা করা দরকার তা করবেন তারা।

সূত্র আরও জানায়, আগামী জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমার বিষয়ে জোট নেতাদের মতামত জানতে চায় বিএনপি। এ সময় মিত্র দলগুলোর নেতারা অভিন্ন সুরে বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোনোভাবেই ২০২৫ সাল অতিক্রম করতে পারে না। এ সময়ের মধ্যে নির্বাচন না হলে দেশে অস্থিরতা বাড়বে। ফ্যাসিবাদের দোসররা আরও শক্তি সঞ্চয় করে গভীর ষড়যন্ত্র করতে সক্ষম হবে। এতে দেশ ও জাতির বড় ক্ষতি হবে’।

বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সরকার থেকে নির্বাচনের যে সময়ের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, এটা আমাদের কারও জানা ছিল না। এ নিয়ে কারও সঙ্গে আলোচনাও হয়নি। আমরা মনে করি, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আগামীর নির্বাচন। সে ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে যে কথা হচ্ছে, এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। সুতরাং আমরা অবগত নই, কি কারণে এত দীর্ঘ সময়ের কথা বলা হলো। এটা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। আমরা যে যৌক্তিক সময়ের কথা বলেছিলাম, সেই বিষয়টা আমরা দেখতে পাচ্ছি না।

আমির খসরু বলেন, সংস্কারের বিষয়ে আমরা সবাই মিলে যে আলোচনা করেছি, তার প্রথম সংস্কার হওয়া দরকার। সেটা হচ্ছে- আগামীদিনে যে নির্বাচনটা হবে, সেই নির্বাচনের সংস্কারটা সবার আগে হওয়া উচিত ছিল। এর মধ্যে অন্যান্য সংস্কারের কথা উঠে এসেছে। কিন্তু সংস্কার মূলত হতে হবে সংসদে। সুতরাং কি সংস্কার নির্বাচনের আগে করতে পারেন, সেটা দেখা যাক। ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে সংস্কার প্রয়োজন আছে, সেটা এই কম সময়ের মধ্যে করতে হবে। আর যেখানে ঐকমত্য হবে না, সেগুলো নিয়ে আগামী নির্বাচনে জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণের সমর্থন নিয়ে আমাদের সেই কাজগুলো করতে হবে। সংস্কারের কথা বলে আপনি বিভিন্ন কমিটির রিপোর্ট দেবেন এবং আবার বসবেন। এ বিষয়গুলো দীর্ঘায়িত করার প্রয়োজনীয়তা নেই।

বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদষ্টোর বক্তব্য নিয়ে আলোচনা হয়। নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়ে বলা হয়, কেউ ৬ মাসের মধ্যে নির্বাচনের চায় না। কিন্তু নির্বাচনসংক্রান্ত সংস্কারগুলো করে অতি দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে। অন্যথায় যে সমস্যা ও সংকট তৈরি হচ্ছে তা দূর হবে না। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারই পারে এ সমস্যা ও সংকট দূর করতে। আর জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া নির্বাচনকে আরও প্রলম্বিত করবে।

পৃথক লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, মহাসচিব মোমিনুল আমিন, উচ্চ পরিষদ সদস্য হুমায়ুন পারভেজ খান, ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফারুক-উজ-জামান চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম ও দপ্তর সম্পাদক জাবেদুর রহমান। গণঅধিকার পরিষদ একাংশের পক্ষে দলটির আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান, সদস্য সচিব ফারুক হাসান, উচ্চতর পরিষদের সদস্য ব্যারিস্টার জিসান মহসিন, অ্যাডভোকেট শিরিন আকতার, যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রহমান, সদস্য আরিফ বিল্লাহ, ইমামউদ্দিন, শফিকুল ইসলাম রতন, ইঞ্জিনিয়ার থোয়াই চিং মং চাক, সাকিব হোসাইন প্রমুখ।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

দ্রুত নির্বাচন চায় বিএনপি ও মিত্ররা

আপডেট সময় ১২:২২:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

দেশে বিদ্যমান সংকটময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত নির্বাচন চায় বিএনপি ও তার মিত্র দলগুলো। সোমবার রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে মিত্রদের বৈঠক হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দ্রুত নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন মিত্র দলগুলোর শীর্ষ নেতারা। এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে সার্বিক সহযোগিতার ভিত্তিতে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা যা করা দরকার তা করবেন তারা।

সূত্র আরও জানায়, আগামী জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমার বিষয়ে জোট নেতাদের মতামত জানতে চায় বিএনপি। এ সময় মিত্র দলগুলোর নেতারা অভিন্ন সুরে বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোনোভাবেই ২০২৫ সাল অতিক্রম করতে পারে না। এ সময়ের মধ্যে নির্বাচন না হলে দেশে অস্থিরতা বাড়বে। ফ্যাসিবাদের দোসররা আরও শক্তি সঞ্চয় করে গভীর ষড়যন্ত্র করতে সক্ষম হবে। এতে দেশ ও জাতির বড় ক্ষতি হবে’।

বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সরকার থেকে নির্বাচনের যে সময়ের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, এটা আমাদের কারও জানা ছিল না। এ নিয়ে কারও সঙ্গে আলোচনাও হয়নি। আমরা মনে করি, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আগামীর নির্বাচন। সে ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে যে কথা হচ্ছে, এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। সুতরাং আমরা অবগত নই, কি কারণে এত দীর্ঘ সময়ের কথা বলা হলো। এটা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। আমরা যে যৌক্তিক সময়ের কথা বলেছিলাম, সেই বিষয়টা আমরা দেখতে পাচ্ছি না।

আমির খসরু বলেন, সংস্কারের বিষয়ে আমরা সবাই মিলে যে আলোচনা করেছি, তার প্রথম সংস্কার হওয়া দরকার। সেটা হচ্ছে- আগামীদিনে যে নির্বাচনটা হবে, সেই নির্বাচনের সংস্কারটা সবার আগে হওয়া উচিত ছিল। এর মধ্যে অন্যান্য সংস্কারের কথা উঠে এসেছে। কিন্তু সংস্কার মূলত হতে হবে সংসদে। সুতরাং কি সংস্কার নির্বাচনের আগে করতে পারেন, সেটা দেখা যাক। ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে সংস্কার প্রয়োজন আছে, সেটা এই কম সময়ের মধ্যে করতে হবে। আর যেখানে ঐকমত্য হবে না, সেগুলো নিয়ে আগামী নির্বাচনে জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণের সমর্থন নিয়ে আমাদের সেই কাজগুলো করতে হবে। সংস্কারের কথা বলে আপনি বিভিন্ন কমিটির রিপোর্ট দেবেন এবং আবার বসবেন। এ বিষয়গুলো দীর্ঘায়িত করার প্রয়োজনীয়তা নেই।

বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদষ্টোর বক্তব্য নিয়ে আলোচনা হয়। নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়ে বলা হয়, কেউ ৬ মাসের মধ্যে নির্বাচনের চায় না। কিন্তু নির্বাচনসংক্রান্ত সংস্কারগুলো করে অতি দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে। অন্যথায় যে সমস্যা ও সংকট তৈরি হচ্ছে তা দূর হবে না। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারই পারে এ সমস্যা ও সংকট দূর করতে। আর জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া নির্বাচনকে আরও প্রলম্বিত করবে।

পৃথক লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, মহাসচিব মোমিনুল আমিন, উচ্চ পরিষদ সদস্য হুমায়ুন পারভেজ খান, ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফারুক-উজ-জামান চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম ও দপ্তর সম্পাদক জাবেদুর রহমান। গণঅধিকার পরিষদ একাংশের পক্ষে দলটির আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান, সদস্য সচিব ফারুক হাসান, উচ্চতর পরিষদের সদস্য ব্যারিস্টার জিসান মহসিন, অ্যাডভোকেট শিরিন আকতার, যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রহমান, সদস্য আরিফ বিল্লাহ, ইমামউদ্দিন, শফিকুল ইসলাম রতন, ইঞ্জিনিয়ার থোয়াই চিং মং চাক, সাকিব হোসাইন প্রমুখ।