ঢাকা ১২:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
গাজায় ৯০ শতাংশ যুদ্ধবিরতি আলোচনা সম্পন্ন: ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহনের সংঘর্ষ, হতাহত ১৫ ধামরাইয়ে বাস-অটোরিকশার সংঘর্ষ, স্বামী-স্ত্রী নিহত নিষিদ্ধ এলাকায় বাজছে গাড়ির হর্ন, নেই দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল ঘিরে এখনও চাঁদাবাজির তান্ডব চালাচ্ছে শেখ হাসিনার আস্থাভাজন গোলাম মোস্তফা  মিঠাপুকুরে এমপিএইসভিওয়ের ১১তম বর্ষে পদার্পন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মঠবাড়িয়া আসনে লড়তে চান ক্যানাডা প্রবাসী ব্যারিস্টার আলমগীর বৈষম্য নিরসনের দাবিতে ৫ দফা কর্মসূচি ঘোষণা মঠবাড়িয়ার দাউদখালী ইউনিয়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত ফসলের সাথে শত্রুতা, ১১ বিঘা আলু গম সরিষা হালচাষ দিয়ে নষ্ট করলো প্রতিপক্ষ

বাংলাদেশে কেউ হিন্দুদের ওপর নির্যাতন করছে না, আবার সরব কবীর সুমন

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ‘নির্যাতনের’ অভিযােগ তুলে পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ হচ্ছে। গত সোমবার হঠাৎই আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, ভাঙচুর ও পতাকা নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলার ঘটনা ঘটে।  এতে আরো উত্তেজনা তৈরি হয় দুদেশের মধ্যে।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যুতে ভারতের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের গীতিকার এবং সঙ্গীতশিল্পী কবীর সুমন।

কিছুদিন আগে পতাকা অবমাননা নিয়ে ফেলানী হত্যার প্রসঙ্গ টেনে কবীর সুমন প্রশ্ন তুলেছেন, ‘সীমান্তের কাঁটাতার-বেড়া থেকে ফেলানী যখন ঝুলছিলেন, কিসের কার অবমাননা হচ্ছিল তখন?’

এবার তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে এক হিন্দু ব্যক্তি তাকে চিঠি লিখেছেন।  ওই চিঠিতে তাকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি হিন্দুরা ভালো আছেন। মুসলিমদের কেউ তার পরিবারের ওপর নির্যাতন করেননি। কবীর সুমন ওই হিন্দু ব্যক্তিকে স্নেহভাজন এক নবীন বাংলাদেশি বন্ধু বলে অভিহিত করেছেন।

শনিবার নিজের ফেসবুক পোস্টে কবীর সুমন লিখেন, ‘আমি হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছি। কিন্তু আমি মানুষ হতে চাই।  মুসলমানেরা আমার ও আমার পরিবারের উপরে অত্যাচার করেনি জেঠু।  আমার প্রনাম নিবেন।  কথাগুলি একটু আগে আমায় লিখে জানিয়েছেন, আমার স্নেহভাজন এক নবীন বাংলাদেশি বন্ধু’।

কবির সুমন লিখেন, ‘তার নাম আমি প্রকাশ করছি না।  মাঝেমাঝে তিনি কলকাতায় এসে আমার সঙ্গে দেখা করে যান।  তার পরিচয় জানলে আমার দেশে তাঁর কপালে কী জুটবে কে জানে’।

বাংলাদেশের মুসলমান আর হিন্দুদের সম্পর্কে মিথ্যে কথা প্রচার হচ্ছে বলেছেন কবীর সুমন।  তার ভাষ্য, মিথ্যা প্রচার শেষ পর্যন্ত পরাজিত হবে।

তিনি আরো লিখেন, ‘ভারত থেকে যারা বাংলাদেশের মুসলমান আর হিন্দুদের সম্পর্কে মিথ্যে কথা প্রচার করে চলেছে তারা জেনে রাখুক মিথ্যে প্রচারে শেষ পর্যন্ত কোনও কাজই হয় না, পশ্চিমবঙ্গের সন্দেশখালি এবং আরজি কর নিয়ে অকথ্য অনর্গল মিথ্যে প্রচার যেমন প্রচারকদের কোনও সুবিধেই ডেকে আনেনি’।

শেষ কবির সুমন লেখা শেষ করেন এভাবে, ‘জয় ভালবাসা! কবীর’।

জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থান চলাকালীনও ছাত্র-জনতার দাবির পক্ষে সমর্থন জানিয়ে একাধিক পোস্ট দিয়েছেন কবীর সুমন। জানিয়েছেন বাংলাদেশের মানুষের প্রতি তার ভালোলাগা এবং ভালোবাসার কথা। ৫ আগস্টের পরও সেই ধারা অব্যাহত রেখেছেন তিনি।

কবীর সুমন একজন ভারতীয় বাঙালি গায়ক, গীতিকার, অভিনেতা, বেতার সাংবাদিক, গদ্যকার ও সাবেক সংসদ সদস্য।  তার পূর্বনাম সুমন চট্টোপাধ্যায়।  ২০০০ সালে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে তিনি তার পুরনো নাম পরিত্যাগ করেন।  কবীর সুমন একজন বিশিষ্ট আধুনিক ও রবীন্দ্রসংগীত গায়ক। ১৯৯২ সালে তার তোমাকে চাই অ্যালবামের মাধ্যমে তিনি বাংলা গানে এক নতুন ধারার প্রবর্তন করেন।

তার স্বরচিত গানের অ্যালবামের সংখ্যা বিশ এর উপরে। সঙ্গীত রচনা, সুরারোপ, সংগীতায়োজন ও কণ্ঠদানের পাশাপাশি গদ্যরচনা ও অভিনয় ক্ষেত্রেও তিনি স্বকীয় প্রতিভার সাক্ষর রেখেছেন। তিনি একাধিক প্রবন্ধ, উপন্যাস ও ছোটোগল্পের রচয়িতা এবং হারবার্ট ও চতুরঙ্গ প্রভৃতি মননশীল ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের রূপদানকারী।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

গাজায় ৯০ শতাংশ যুদ্ধবিরতি আলোচনা সম্পন্ন: ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা

বাংলাদেশে কেউ হিন্দুদের ওপর নির্যাতন করছে না, আবার সরব কবীর সুমন

আপডেট সময় ১২:১১:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ‘নির্যাতনের’ অভিযােগ তুলে পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ হচ্ছে। গত সোমবার হঠাৎই আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, ভাঙচুর ও পতাকা নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলার ঘটনা ঘটে।  এতে আরো উত্তেজনা তৈরি হয় দুদেশের মধ্যে।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যুতে ভারতের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের গীতিকার এবং সঙ্গীতশিল্পী কবীর সুমন।

কিছুদিন আগে পতাকা অবমাননা নিয়ে ফেলানী হত্যার প্রসঙ্গ টেনে কবীর সুমন প্রশ্ন তুলেছেন, ‘সীমান্তের কাঁটাতার-বেড়া থেকে ফেলানী যখন ঝুলছিলেন, কিসের কার অবমাননা হচ্ছিল তখন?’

এবার তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে এক হিন্দু ব্যক্তি তাকে চিঠি লিখেছেন।  ওই চিঠিতে তাকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি হিন্দুরা ভালো আছেন। মুসলিমদের কেউ তার পরিবারের ওপর নির্যাতন করেননি। কবীর সুমন ওই হিন্দু ব্যক্তিকে স্নেহভাজন এক নবীন বাংলাদেশি বন্ধু বলে অভিহিত করেছেন।

শনিবার নিজের ফেসবুক পোস্টে কবীর সুমন লিখেন, ‘আমি হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছি। কিন্তু আমি মানুষ হতে চাই।  মুসলমানেরা আমার ও আমার পরিবারের উপরে অত্যাচার করেনি জেঠু।  আমার প্রনাম নিবেন।  কথাগুলি একটু আগে আমায় লিখে জানিয়েছেন, আমার স্নেহভাজন এক নবীন বাংলাদেশি বন্ধু’।

কবির সুমন লিখেন, ‘তার নাম আমি প্রকাশ করছি না।  মাঝেমাঝে তিনি কলকাতায় এসে আমার সঙ্গে দেখা করে যান।  তার পরিচয় জানলে আমার দেশে তাঁর কপালে কী জুটবে কে জানে’।

বাংলাদেশের মুসলমান আর হিন্দুদের সম্পর্কে মিথ্যে কথা প্রচার হচ্ছে বলেছেন কবীর সুমন।  তার ভাষ্য, মিথ্যা প্রচার শেষ পর্যন্ত পরাজিত হবে।

তিনি আরো লিখেন, ‘ভারত থেকে যারা বাংলাদেশের মুসলমান আর হিন্দুদের সম্পর্কে মিথ্যে কথা প্রচার করে চলেছে তারা জেনে রাখুক মিথ্যে প্রচারে শেষ পর্যন্ত কোনও কাজই হয় না, পশ্চিমবঙ্গের সন্দেশখালি এবং আরজি কর নিয়ে অকথ্য অনর্গল মিথ্যে প্রচার যেমন প্রচারকদের কোনও সুবিধেই ডেকে আনেনি’।

শেষ কবির সুমন লেখা শেষ করেন এভাবে, ‘জয় ভালবাসা! কবীর’।

জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থান চলাকালীনও ছাত্র-জনতার দাবির পক্ষে সমর্থন জানিয়ে একাধিক পোস্ট দিয়েছেন কবীর সুমন। জানিয়েছেন বাংলাদেশের মানুষের প্রতি তার ভালোলাগা এবং ভালোবাসার কথা। ৫ আগস্টের পরও সেই ধারা অব্যাহত রেখেছেন তিনি।

কবীর সুমন একজন ভারতীয় বাঙালি গায়ক, গীতিকার, অভিনেতা, বেতার সাংবাদিক, গদ্যকার ও সাবেক সংসদ সদস্য।  তার পূর্বনাম সুমন চট্টোপাধ্যায়।  ২০০০ সালে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে তিনি তার পুরনো নাম পরিত্যাগ করেন।  কবীর সুমন একজন বিশিষ্ট আধুনিক ও রবীন্দ্রসংগীত গায়ক। ১৯৯২ সালে তার তোমাকে চাই অ্যালবামের মাধ্যমে তিনি বাংলা গানে এক নতুন ধারার প্রবর্তন করেন।

তার স্বরচিত গানের অ্যালবামের সংখ্যা বিশ এর উপরে। সঙ্গীত রচনা, সুরারোপ, সংগীতায়োজন ও কণ্ঠদানের পাশাপাশি গদ্যরচনা ও অভিনয় ক্ষেত্রেও তিনি স্বকীয় প্রতিভার সাক্ষর রেখেছেন। তিনি একাধিক প্রবন্ধ, উপন্যাস ও ছোটোগল্পের রচয়িতা এবং হারবার্ট ও চতুরঙ্গ প্রভৃতি মননশীল ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের রূপদানকারী।