ঢাকা ০৩:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কৃষকের ছেলে”চেয়ারম্যান”সুদখোর সাইফুলের ঘরে আলাদিনের চেরাগ!

সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুর উপজেলার গাঁড়াদাহ ইউনিয়নের মশিপুর গ্রামের কৃষক শাহাদৎ হোসেন অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করে চালাতো স্বামী স্ত্রী ও ৬ ছেলে-মেয়ের সংসার।কৃষক শাহাদাৎ হোসেন এর সংসারে ৩/টি ছেলে এবং ৩/টি মেয়ে। এদের মধ্যে সবার বড় সাইফুল ইসলাম। সেই কৃষক শাহদাৎ হোসেনের ছেলে সাইফুলের ঘরে আলাদিনের চেরাগ!ছোট বেলা থেকেই সাইফুল ইসলাম ছিলেন দুর্দান্ত বুদ্ধিমান এবং দুঃসাহসী সেই সুবাদে স্থান পায় স্বৈরাচার সরকারের সিরাজগঞ্জ-আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত হাসিবুর রহমান স্বপনের সন্ত্রাসী বাহিনীতে জায়গা পেয়ে যায়। এরপর প্রয়াত হাসিবুর রহমান স্বপনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত হয়েই শুরু হয় সাইফুলের অনিয়ম-দুর্নীতি জবরদখল,সন্ত্রাসীসহ নানান অপকর্মের কার্যক্রম।

স্থানীয় বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়,গত দেড় যুগ আগে সাইফুল ইসলাম তারই নিজ গ্রামে এক কৃষকের গরু চুরি করেন, এসময় এলাকাবাসীর হাতে আটক হন। এরপর যেকোন উপায়ে তাদের হাত থেকে পালিয়ে পাড়ি জমান ঢাকায় সুত্র জানায়,ঢাকায় যাওয়ার পর দীর্ঘদিন ছিলেন বেকার একসময় এলাকার পরিচিত একজন ব্যক্তি মধ্যমে পেয়ে যায় গার্মেন্টসে চাকরি তবে বেশিদিন চাকরি করতে হয়নি সাইফুল ইসলামকে।

৩/৪ বছর চাকরি করে ফিরে ছিলেন নিজ গ্রামে। ঢাকায় চাকরিরত অবস্থায় কিছু টাকা সঞ্চয় করেছিলেন সাইফুল ইসলাম। সেই টাকা দিয়েই শুরু হয় তার সুদের ব্যবসা এবং সুদে টাকা দেওয়ার নামে তৈরী করেন ভয়ংকর ফাঁদ!সেই ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হয়েছে হাজারো অসহায় গরীব মানুষ।
তবে তাঁর সুদে টাকা দেওয়ার ছিলো এক ভিন্নতা,তিনি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টাকা দিতেন জুয়া খেলোয়াড়দের কারন তাঁরা অনেক লাভে টাকা নিতেন,এভাবেই শুরু হয় সাইফুল ইসলাম এ-র সুদের ব্যবসা।

সাইফুল ইসলামের নিজ এলাকাসহ আসেপাশের কয়েেটি এলাকায় ও তার এই সুদের ব্যবসা চলতো,তবে এলাকার কিছু লোকজন নিয়ে তৈরী করে একটি বাহিনী যে বাহিনী দিয়েই নিয়ন্ত্রণ করতো সুদের ব্যবসাসহ জুয়ার আসর। জানা যায়,এরপট জুয়া খেলোয়াড়দের কে সুদে টাকা দেওয়া শুরু করেন,তবে টাকা দেওয়া দেড়ি হলেই শুরু হয় তার সুদের টাকা তুলার নির্যাতন, এতে করে নিঃস্ব হয়ে পড়ে এলাকার অসংখ্য পরিবার। সাইফুল সুদের টাকা না পেলে মানুষকে মারধর সহ ভুক্তভোগীর বাড়ি থেকে গরু ও ধান জোর করে নিয়ে যাওয়ারও অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান সাইফুল ইসলামের বাড়িতে ছিল দোচালা একটি টিনের ঘর,এখন সেই গ্রামে তার আলিশান বাড়ি। শুধু এই বাড়ি-ই নয়,সাইফুল ইসলামের নামে রয়েছে কোটি কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ।
সাইফুল ইসলাম কোনো গুপ্ত ধন পাননি। ব্যবসা-বাণিজ্য করে ছোট থেকে বড় হয়েছেন,এমন দেখা বা জানা যায়নি। তার এত সম্পদশালী হয়ে উঠার পেছনে আওয়ামী লীগের রাজনীতি।

এলাকায় সুদ কারবার করে মানুষের উপরে জোর জুলুম করে অবৈধ টাকা আয়ের একমাত্র উৎস ছিলো স্বৈরাচার সরকারের রাজনীতি করতেন তিনি। রাজনীতি করার জন্য চেয়ারম্যান হওয়ার পরে সে নাকি বিএ পাশের ভুয়া সাটিফিকেট রাজশাহী বোর্ড থেকে তৈরী করেছেন এমনটা জানান,তার সহকর্মী আওয়ামীলীগ এক নেতা জানান,সাইফুল ছিল মূর্খ, অশিক্ষিত, সুদখোর এবং এককালের চোর।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এলে সে বছরে দলীয় মনোনয়ন টাকার বিনিময়ে বাগিয়ে নেন সাইফুল ইসলাম এরপর তিনি প্রথম বারের মতো শাহজাদপুর উপজেলার গাঁড়াদহ ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তার পর থেকেই সাইফুল ইসলামের ঘরে আলাদিনের চেরাগ।

টানা তিন মেয়াদে গাঁড়াদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এর মধ্যে একবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে অন্য দুটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে জোরজবরদস্তি করে হারিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘ ১৬ বছর স্বৈরাচার সরকার আওয়ামীলীগের ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন সাইফুল ইসলাম।

আমাদের মাতৃভূমির অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসে তার সম্পদের পাহাড়। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে সাইফুলের অঢেল সম্পদের এসব তথ্য পাওয়া যায়। সাইফুল ইসলামের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তার নিজ গ্রাম মশিপুরে ২৮/৩০ শতাংশ জমির উপর ৩ তলা ভবন, তার নিজ বাড়ির সামনেই রয়েছে দুইটি অবৈধ ইটের ভাটার স্থাপনা কোটি টাকা মূল্যের জমি,১০ টি ট্রাক,মশিপুর গ্রামেই রয়েছে প্রায় ৩০ বিঘা কৃষি জমি,উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নামে বেনামে খামার বাড়ি সহ কোটি কোটি টাকার সম্পদ এ যেন ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখার মত কিন্তু এটাই বাস্তবতা! সাইফুল ও তার স্ত্রীর নামে বিভিন্ন ব্যাংকে প্রচুর টাকাসহ আনুমানিক ৮৯/৯০ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। এ ছাড়া নিজ ও স্ত্রীর নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ রয়েছে।

এলাকাবাসী ও আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ প্রবীন ব্যক্তিবর্গের অনেক এর কাছ থেকে জানা যায়,সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত হাসিবুর রহমান স্বপন এর ঘনিষ্ঠ হওয়ায় সাইফুল ইসলাম শাহজাদপুর উপজেলার অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি হয়ে উঠেন। এলাকার কাউকেই তোয়াক্কা করতেন না তিনি, মানতে রাজি ছিলেন না দেশের আইন-শৃঙ্খলা।
সাইফুলের কথাই ছিল আইন!

আরো জানা যায়,প্রথম বার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই স্বৈরাচার সরকারের ক্ষমতার দাপটে গাঁড়াদহ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে যাত্রা,জুয়া,মাদকাহ সব ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন সাইফুল ইসলাম।

অবৈধ ভাবে নদী খনন, ইট ভাটার মাটির জন্য জোর পূর্বক জমি দখল করে মাটি উত্তোলন। এ ছাড়াও রাতে দিনে মাটি ও বালু ট্রাক চালিয়ে অমানবিক অত্যাচার করেছেন এ যেন ফেরাউন কেও হার মানিয়েছে এই কথা বলতে বলতে
কান্নায় ভেঙে পড়েন এক বৃদ্ধ ব্যক্তি।

এছাড়াও এ-র আগে ২০২৩ সালের ১২ মে সাইফুল ইসলামকে তার স্ত্রীর ও তার উপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, দায়দেনা, আয়ের উৎস ও সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে বললে সঠিক তথ্য না দেওয়ায় চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী জোমেলা খাতুনের বিরুদ্ধে অজ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা করে ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)।

মামলার অভিযোগে বলে ছিলেন সাইফুল ইসলাম সম্পদ বিবরণীতে স্থাবর-অস্থাবর মোট ৩ কোটি ২০ লাখ ৭ হাজার ৮৫৯ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। একই সঙ্গে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ৩ কোটি ২০ লাখ ৭ হাজার ৮৫৯ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রেখেছেন,যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অন্যদিকে সাইফুল ইসলামের স্ত্রী জোমেলা খাতুন সম্পদ বিবরণীতে স্থাবর ও অস্থাবর মোট ৩৪ লাখ ৩০ হাজার ৭৯৯ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছিলেন।

এছাড়াও বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় স্বৈরাচার সরকারের নির্দেশে এই অবৈধ সম্পদশালী সাইফুলের ব্যক্তিগত অবৈধ অস্ত্রসহ তিনিসহ তার নেতৃত্বে এক দল সন্ত্রাসী বাহিনী ছাত্রজনতা উপর গুলি চালিয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

যৌথবাহিনীর অভিযানে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি মাদক চোরাচালানে জড়িত গডফাদারদেরও এই বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বন্ধ হয়েছে দেশের অসংখ্য অবৈধ কার্যকলাপ।
অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বলেছিলেন ,মাদক নিয়ন্ত্রণ আমাদের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার। আমরা মাদক গডফাদারদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছি এবং তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য কাজ করছি। তবে এতো অনিয়ম-দুর্নীতি করেও অদৃশ্য ক্ষমতার দাপটে অবৈধ অস্ত্র বহনকারী সাইফুল ইসলাম এখনো ধরাছোঁয়ার বাহিরে!

এসব বিষয়ে জানতে সাইফুল ইসলামের সাথে কথার বলতে তার নিজ বাড়ীতে গিয়ে তাকে যাওয়া যায়নি।এছাড়াও তার ব্যক্তি মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন করলে তিনি রিসিভ করেনি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

কৃষকের ছেলে”চেয়ারম্যান”সুদখোর সাইফুলের ঘরে আলাদিনের চেরাগ!

আপডেট সময় ০১:৩৩:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুর উপজেলার গাঁড়াদাহ ইউনিয়নের মশিপুর গ্রামের কৃষক শাহাদৎ হোসেন অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করে চালাতো স্বামী স্ত্রী ও ৬ ছেলে-মেয়ের সংসার।কৃষক শাহাদাৎ হোসেন এর সংসারে ৩/টি ছেলে এবং ৩/টি মেয়ে। এদের মধ্যে সবার বড় সাইফুল ইসলাম। সেই কৃষক শাহদাৎ হোসেনের ছেলে সাইফুলের ঘরে আলাদিনের চেরাগ!ছোট বেলা থেকেই সাইফুল ইসলাম ছিলেন দুর্দান্ত বুদ্ধিমান এবং দুঃসাহসী সেই সুবাদে স্থান পায় স্বৈরাচার সরকারের সিরাজগঞ্জ-আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত হাসিবুর রহমান স্বপনের সন্ত্রাসী বাহিনীতে জায়গা পেয়ে যায়। এরপর প্রয়াত হাসিবুর রহমান স্বপনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত হয়েই শুরু হয় সাইফুলের অনিয়ম-দুর্নীতি জবরদখল,সন্ত্রাসীসহ নানান অপকর্মের কার্যক্রম।

স্থানীয় বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়,গত দেড় যুগ আগে সাইফুল ইসলাম তারই নিজ গ্রামে এক কৃষকের গরু চুরি করেন, এসময় এলাকাবাসীর হাতে আটক হন। এরপর যেকোন উপায়ে তাদের হাত থেকে পালিয়ে পাড়ি জমান ঢাকায় সুত্র জানায়,ঢাকায় যাওয়ার পর দীর্ঘদিন ছিলেন বেকার একসময় এলাকার পরিচিত একজন ব্যক্তি মধ্যমে পেয়ে যায় গার্মেন্টসে চাকরি তবে বেশিদিন চাকরি করতে হয়নি সাইফুল ইসলামকে।

৩/৪ বছর চাকরি করে ফিরে ছিলেন নিজ গ্রামে। ঢাকায় চাকরিরত অবস্থায় কিছু টাকা সঞ্চয় করেছিলেন সাইফুল ইসলাম। সেই টাকা দিয়েই শুরু হয় তার সুদের ব্যবসা এবং সুদে টাকা দেওয়ার নামে তৈরী করেন ভয়ংকর ফাঁদ!সেই ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হয়েছে হাজারো অসহায় গরীব মানুষ।
তবে তাঁর সুদে টাকা দেওয়ার ছিলো এক ভিন্নতা,তিনি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টাকা দিতেন জুয়া খেলোয়াড়দের কারন তাঁরা অনেক লাভে টাকা নিতেন,এভাবেই শুরু হয় সাইফুল ইসলাম এ-র সুদের ব্যবসা।

সাইফুল ইসলামের নিজ এলাকাসহ আসেপাশের কয়েেটি এলাকায় ও তার এই সুদের ব্যবসা চলতো,তবে এলাকার কিছু লোকজন নিয়ে তৈরী করে একটি বাহিনী যে বাহিনী দিয়েই নিয়ন্ত্রণ করতো সুদের ব্যবসাসহ জুয়ার আসর। জানা যায়,এরপট জুয়া খেলোয়াড়দের কে সুদে টাকা দেওয়া শুরু করেন,তবে টাকা দেওয়া দেড়ি হলেই শুরু হয় তার সুদের টাকা তুলার নির্যাতন, এতে করে নিঃস্ব হয়ে পড়ে এলাকার অসংখ্য পরিবার। সাইফুল সুদের টাকা না পেলে মানুষকে মারধর সহ ভুক্তভোগীর বাড়ি থেকে গরু ও ধান জোর করে নিয়ে যাওয়ারও অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান সাইফুল ইসলামের বাড়িতে ছিল দোচালা একটি টিনের ঘর,এখন সেই গ্রামে তার আলিশান বাড়ি। শুধু এই বাড়ি-ই নয়,সাইফুল ইসলামের নামে রয়েছে কোটি কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ।
সাইফুল ইসলাম কোনো গুপ্ত ধন পাননি। ব্যবসা-বাণিজ্য করে ছোট থেকে বড় হয়েছেন,এমন দেখা বা জানা যায়নি। তার এত সম্পদশালী হয়ে উঠার পেছনে আওয়ামী লীগের রাজনীতি।

এলাকায় সুদ কারবার করে মানুষের উপরে জোর জুলুম করে অবৈধ টাকা আয়ের একমাত্র উৎস ছিলো স্বৈরাচার সরকারের রাজনীতি করতেন তিনি। রাজনীতি করার জন্য চেয়ারম্যান হওয়ার পরে সে নাকি বিএ পাশের ভুয়া সাটিফিকেট রাজশাহী বোর্ড থেকে তৈরী করেছেন এমনটা জানান,তার সহকর্মী আওয়ামীলীগ এক নেতা জানান,সাইফুল ছিল মূর্খ, অশিক্ষিত, সুদখোর এবং এককালের চোর।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এলে সে বছরে দলীয় মনোনয়ন টাকার বিনিময়ে বাগিয়ে নেন সাইফুল ইসলাম এরপর তিনি প্রথম বারের মতো শাহজাদপুর উপজেলার গাঁড়াদহ ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তার পর থেকেই সাইফুল ইসলামের ঘরে আলাদিনের চেরাগ।

টানা তিন মেয়াদে গাঁড়াদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এর মধ্যে একবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে অন্য দুটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে জোরজবরদস্তি করে হারিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘ ১৬ বছর স্বৈরাচার সরকার আওয়ামীলীগের ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন সাইফুল ইসলাম।

আমাদের মাতৃভূমির অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসে তার সম্পদের পাহাড়। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে সাইফুলের অঢেল সম্পদের এসব তথ্য পাওয়া যায়। সাইফুল ইসলামের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তার নিজ গ্রাম মশিপুরে ২৮/৩০ শতাংশ জমির উপর ৩ তলা ভবন, তার নিজ বাড়ির সামনেই রয়েছে দুইটি অবৈধ ইটের ভাটার স্থাপনা কোটি টাকা মূল্যের জমি,১০ টি ট্রাক,মশিপুর গ্রামেই রয়েছে প্রায় ৩০ বিঘা কৃষি জমি,উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নামে বেনামে খামার বাড়ি সহ কোটি কোটি টাকার সম্পদ এ যেন ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখার মত কিন্তু এটাই বাস্তবতা! সাইফুল ও তার স্ত্রীর নামে বিভিন্ন ব্যাংকে প্রচুর টাকাসহ আনুমানিক ৮৯/৯০ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। এ ছাড়া নিজ ও স্ত্রীর নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ রয়েছে।

এলাকাবাসী ও আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ প্রবীন ব্যক্তিবর্গের অনেক এর কাছ থেকে জানা যায়,সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত হাসিবুর রহমান স্বপন এর ঘনিষ্ঠ হওয়ায় সাইফুল ইসলাম শাহজাদপুর উপজেলার অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি হয়ে উঠেন। এলাকার কাউকেই তোয়াক্কা করতেন না তিনি, মানতে রাজি ছিলেন না দেশের আইন-শৃঙ্খলা।
সাইফুলের কথাই ছিল আইন!

আরো জানা যায়,প্রথম বার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই স্বৈরাচার সরকারের ক্ষমতার দাপটে গাঁড়াদহ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে যাত্রা,জুয়া,মাদকাহ সব ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন সাইফুল ইসলাম।

অবৈধ ভাবে নদী খনন, ইট ভাটার মাটির জন্য জোর পূর্বক জমি দখল করে মাটি উত্তোলন। এ ছাড়াও রাতে দিনে মাটি ও বালু ট্রাক চালিয়ে অমানবিক অত্যাচার করেছেন এ যেন ফেরাউন কেও হার মানিয়েছে এই কথা বলতে বলতে
কান্নায় ভেঙে পড়েন এক বৃদ্ধ ব্যক্তি।

এছাড়াও এ-র আগে ২০২৩ সালের ১২ মে সাইফুল ইসলামকে তার স্ত্রীর ও তার উপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, দায়দেনা, আয়ের উৎস ও সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে বললে সঠিক তথ্য না দেওয়ায় চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী জোমেলা খাতুনের বিরুদ্ধে অজ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা করে ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)।

মামলার অভিযোগে বলে ছিলেন সাইফুল ইসলাম সম্পদ বিবরণীতে স্থাবর-অস্থাবর মোট ৩ কোটি ২০ লাখ ৭ হাজার ৮৫৯ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। একই সঙ্গে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ৩ কোটি ২০ লাখ ৭ হাজার ৮৫৯ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রেখেছেন,যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অন্যদিকে সাইফুল ইসলামের স্ত্রী জোমেলা খাতুন সম্পদ বিবরণীতে স্থাবর ও অস্থাবর মোট ৩৪ লাখ ৩০ হাজার ৭৯৯ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছিলেন।

এছাড়াও বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় স্বৈরাচার সরকারের নির্দেশে এই অবৈধ সম্পদশালী সাইফুলের ব্যক্তিগত অবৈধ অস্ত্রসহ তিনিসহ তার নেতৃত্বে এক দল সন্ত্রাসী বাহিনী ছাত্রজনতা উপর গুলি চালিয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

যৌথবাহিনীর অভিযানে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি মাদক চোরাচালানে জড়িত গডফাদারদেরও এই বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বন্ধ হয়েছে দেশের অসংখ্য অবৈধ কার্যকলাপ।
অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বলেছিলেন ,মাদক নিয়ন্ত্রণ আমাদের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার। আমরা মাদক গডফাদারদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছি এবং তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য কাজ করছি। তবে এতো অনিয়ম-দুর্নীতি করেও অদৃশ্য ক্ষমতার দাপটে অবৈধ অস্ত্র বহনকারী সাইফুল ইসলাম এখনো ধরাছোঁয়ার বাহিরে!

এসব বিষয়ে জানতে সাইফুল ইসলামের সাথে কথার বলতে তার নিজ বাড়ীতে গিয়ে তাকে যাওয়া যায়নি।এছাড়াও তার ব্যক্তি মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন করলে তিনি রিসিভ করেনি।