দোহার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত কাতার স্পোর্টস ক্লাব। স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে নয়টা। তখনই সূর্যের উত্তাপের তাপ ৩৫ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই। এর মধ্যেই রেফারিরা নিজেদের শেষ বারের মতো ঝালিয়ে নিচ্ছেন। মাঠে কয়েকজন ফিফার হেড অফ রেফারিজ পিয়ার লুইজ কলিনার সামনে পরীক্ষা দিচ্ছেন। এর পাশেই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্টের সহকারী রেফারি ক্যাথরিন ন্যাশবিথ ও রুয়ান্ডার রেফারি সালিমা মুকানসাঙ্গা।
কাতার বিশ্বকাপেই প্রথমবারের মতো রেফারিংয়ে নারী। তাই মিক্সড জোনে থাকা অন্য রেফারিদের চেয়ে ক্যাথরিন ও সালিমাকে নিয়েই সবার আগ্রহ। ঢাকা পোস্টের সিনিয়র স্পোর্টস রিপোর্টার আরাফাত জোবায়েরও আলাপ করেছেন দুই নারী রেফারির সঙ্গে। সেই আলোচনার কিছু প্রশ্ন উত্তর তুলে ধরা হলো নিচে:
প্রশ্ন: বিশ্বকাপের জন্য যখন নাম ঘোষণা হয় তখনকার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?
ক্যাথরিন: অসাধারণ অনুভূতি। যেটা আসলে প্রকাশ করার মতো নয়। প্রায় ২০ মিনিটের মতো মনে হচ্ছিল আমি যেন পৃথিবীর বাইরে।এই বিশ্বকাপের মাধ্যমে নারী রেফারিদের নতুন যাত্রা শুরু হবে।
সালিমা: আমরা এখানে এসেছি যোগ্যতা ও সামর্থ্য নিয়েই। আমরা নিজেদের প্রমাণ করে এই স্তরে এসেছি। আমরা এটা ডিজার্ভ করি। কোনো সুযোগ বা অন্য মাধ্যমে এখানে আসিনি।
প্রশ্ন: গরম আবহাওয়া রেফারিদের জন্য অনেক কষ্টকর হবে কিনা ?
সালিমা : না আসলে সে রকম কষ্টের কিছু নেই। আমরা এখানে এসে অনেক দিন থেকেই অনুশীলন করেছি। এই আবহাওয়ার সাথে আমরা অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি। আমরা টুর্নামেন্টের জন্য সর্বোচ্চভাবে প্রস্তুত।
প্রশ্ন: প্রথমবারের মতো নারী রেফারি বিশ্বকাপে। নিশ্চয়ই গর্বের বিষয়?
সালিমা: অবশ্যই গর্বিত। এটা যে কোনো রেফারির জন্য স্বপ্ন বিশ্বকাপের মঞ্চে থাকা।
প্রশ্ন: আপনারা এমন একটি দেশে রেফারিং করবেন যেখানে নারীদের রেফারি হিসেবে দেখতে অভ্যস্ত নয়!
ক্যাথরিন : এটা নিয়ে আসলে চিন্তিত নই। মাঠে আমার দায়িত্বটা সঠিকভাবে পালন করতে চাই। এতেই সর্বোচ্চ মনোযোগ, অন্য কিছুতে নয়।
প্রশ্ন: ফাইনালে রেফারিং করতে চান ?
ক্যাথরিন: অবশ্যই। এখানে যারা এসেছে সবাই ফাইনালে থাকতে চাই। এজন্য অনুশীলনে সেরাটা দিচ্ছে। ম্যাচেও সর্বোচ্চটা দিয়ে ফাইনালে থাকার চেষ্টা করবে।
প্রশ্ন: আপনার রেফারিং ক্যারিয়ার নিয়ে কিছু বলুন
ক্যাথরিন: ১৪ বছর বয়স থেকে রেফারিং করি। প্রায় ২০ বিশ বছরের বেশি রেফারিং ক্যারিয়ার। আমেরিকার পুরুষ লিগে রেফারিং করেছি দীর্ঘদিন। নানা স্তর পেরিয়ে এখানে এসেছি।
প্রশ্ন: শৈশবে রেফারিংয়ে আপনার আইডল কে ছিল? ক্যাথরিন: আমেরিকান রেফারি ক্যারি। সে একজন বিখ্যাত রেফারি। তিনবার বিশ্বকাপে রেফারিং করেছেন।
প্রশ্ন:মাত্র তিন জন নারী রেফারি। রেফারিংয়ে নারী-পুরুষ সমতা নিশ্চিতকরণে এটা প্রথম পদক্ষেপ বলে মনে করেন কিনা?
ক্যাথরিন: হ্যা। এবার নারীরা যাত্রা শুরু করল। সামনের বিশ্বকাপে আশা করি সংখ্যা বাড়বে। এক পর্যায়ে আর সংখ্যায় বেশি ব্যবধান থাকবে না।
প্রশ্ন: ভিএআর ( ভিডিও এসিস্ট্যান্ট রেফারি) এর জন্য রেফারির অনেক সিদ্ধান্ত এখন চ্যালেঞ্জের মুখে। ভিএআরকে কিভাবে দেখছেন ?
ক্যাথরিন: সকল সিদ্ধান্ত মাঠ থেকেই আসবে। বিশেষ কিছু সময় হয়তো ভিএআরের সহায়তা নেয়া হবে। ভিএআর আমাদের সহযোগীই। সিদ্ধান্ত আরো সঠিক ও সুচারুরুপে হওয়ার জন্যই ভিএআর।