ঢাকা ০৫:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
তাসাউফ রিয়েল এস্টেট লিঃ এর চেয়ারম্যান ভূমি দস্যু শরীফ বিন আকবর খান সাদুল্লাপুরের এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম ‘জিনের বাদশা’ আবু বকর অবৈধ সম্পদেও বাদশা জাজিরায় বালুর নিচে পুঁতে রাখা অজ্ঞাত এক নারীর লাশ উদ্ধার গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাবের অসাংবিধানিক নির্বাচন বাতিলের দাবি মিঠাপুকুরে শিক্ষকদের মানববন্ধন ও শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান রাজনৈতিক চাপে ধামাচাপা পড়েছে ফাইল গাজীপুর কাস্টমসের পিওন কাওসারের কোটি টাকার সম্পত্তি ক্ষমতার সান্নিধ্যে বিত্তবান সাবেক সচিব খাইরুল কুমিল্লায় হাসপাতাল দখলের অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে কেজি দরে বিআরটিসির বাস বিক্রি করে দিয়েছেন কর্মকর্তা

সামুরাই-রামদাসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধারের পর খুলল হাবিপ্রবির হল

দুই দিন ধরে অস্ত্র উদ্ধার অভিযানের পর বুধবার সন্ধ্যা থেকে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা থেকে হলগুলোতে প্রবেশ করতে শুরু করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এদিকে গত দুই দিনে হাবিপ্রবির ৯টি আবাসিক হলের মধ্যে ৪টি হলে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র। উদ্ধার হয়েছে মদের বোতল, গাঁজা ও মাদক সেবনের সামগ্রীও।

বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার প্রফেসর মো. সাইফুর রহমান।

হাবিপ্রবি সূত্রে জানা যায়, গত ১২ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি আবাসিক হল খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন; কিন্তু বিরাজমান পরিস্থিতিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ১২ আগস্ট হলগুলো খুলে দেওয়া হয়নি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে হাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার প্রফেসর মো. সাইফুর রহমান সিদ্ধান্ত নেন, হলগুলোতে যাতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তার মধ্যে অবস্থান করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করেই শিক্ষার্থীদের হলে তোলা হবে। কারণ বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যমতে, বেশ কয়েকটি আবাসিক হলে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই বিভিন্ন আবাসিক হলে শুরু হয় অস্ত্র উদ্ধার অভিযান। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন হল থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। একইসঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে মদের বোতল ও মাদক গ্রহণের সামগ্রীও।

হাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার প্রফেসর মো. সাইফুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার ও বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি হলের মধ্যে তাজউদ্দীন আহমদ হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হল, শেখ রাসেল হলে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ সামুরাই, লোহার পাইপ, রড, রাম দা, হকিস্টিক, চাকু, বাঁশের লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও উদ্ধার করা হয় বেশ কয়েকটি মদের বোতল, গাঁজা ও মাদক গ্রহণের সামগ্রী।

প্রথম দিন তাজউদ্দীন হলের মাত্র একটি ফ্লোর থেকেই উদ্ধার হয় ১৪৩টি বাঁশের লাঠি, ১৬টি লোহার রড, ২২টি লোহার পাইপ, ৬টি সামুরাই, ২টি লোহার চেইন, খালি মদের বোতল ৩টি ও মাদক সামগ্রী।

বুধবার শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হল থেকে ৯টি সামুরাই, ৫০টি এসএস পাইপ, ৪০টি বাঁশের লাঠি, ৩৬টি কাঠের লাঠি, ৭২টি রড ও প্লাস্টিকের পাইপ, একটি মদের বোতল এবং গাঁজা ও মাদক গ্রহণের সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।

এছাড়াও অন্য হলগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

একটি সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে দমন করতেই এসব অস্ত্রশস্ত্র জড়ো করা হয় হাবিপ্রবির আবাসিক হলগুলোতে।

হাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার বলেন, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও ছাত্রদের মনিটরিং সেলের নেতাদের নিয়ে এ অভিযান চালানো হয়। তবে ভার্সিটির বাইরে বিজিবি ও সেনাবাহিনী মোতায়েন ছিল।

তিনি জানান, এসব অস্ত্রশস্ত্র থাকলে শিক্ষার্থীদের জন্য হলগুলো নিরাপদ ছিল না। তাই দুদিন ধরে উদ্ধার অভিযান শেষ করেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের হলে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

এদিকে হলগুলো থেকে অস্ত্র উদ্ধার অভিযানের প্রায় শেষ হওয়ার পর বুধবার সন্ধ্যা থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। ফলে বুধবার সন্ধ্যার পর শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলে প্রবেশ করতে শুরু করে।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

তাসাউফ রিয়েল এস্টেট লিঃ এর চেয়ারম্যান ভূমি দস্যু শরীফ বিন আকবর খান সাদুল্লাপুরের এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম

সামুরাই-রামদাসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধারের পর খুলল হাবিপ্রবির হল

আপডেট সময় ০১:০৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৪

দুই দিন ধরে অস্ত্র উদ্ধার অভিযানের পর বুধবার সন্ধ্যা থেকে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা থেকে হলগুলোতে প্রবেশ করতে শুরু করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এদিকে গত দুই দিনে হাবিপ্রবির ৯টি আবাসিক হলের মধ্যে ৪টি হলে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র। উদ্ধার হয়েছে মদের বোতল, গাঁজা ও মাদক সেবনের সামগ্রীও।

বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার প্রফেসর মো. সাইফুর রহমান।

হাবিপ্রবি সূত্রে জানা যায়, গত ১২ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি আবাসিক হল খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন; কিন্তু বিরাজমান পরিস্থিতিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ১২ আগস্ট হলগুলো খুলে দেওয়া হয়নি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে হাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার প্রফেসর মো. সাইফুর রহমান সিদ্ধান্ত নেন, হলগুলোতে যাতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তার মধ্যে অবস্থান করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করেই শিক্ষার্থীদের হলে তোলা হবে। কারণ বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যমতে, বেশ কয়েকটি আবাসিক হলে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই বিভিন্ন আবাসিক হলে শুরু হয় অস্ত্র উদ্ধার অভিযান। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন হল থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। একইসঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে মদের বোতল ও মাদক গ্রহণের সামগ্রীও।

হাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার প্রফেসর মো. সাইফুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার ও বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি হলের মধ্যে তাজউদ্দীন আহমদ হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হল, শেখ রাসেল হলে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ সামুরাই, লোহার পাইপ, রড, রাম দা, হকিস্টিক, চাকু, বাঁশের লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও উদ্ধার করা হয় বেশ কয়েকটি মদের বোতল, গাঁজা ও মাদক গ্রহণের সামগ্রী।

প্রথম দিন তাজউদ্দীন হলের মাত্র একটি ফ্লোর থেকেই উদ্ধার হয় ১৪৩টি বাঁশের লাঠি, ১৬টি লোহার রড, ২২টি লোহার পাইপ, ৬টি সামুরাই, ২টি লোহার চেইন, খালি মদের বোতল ৩টি ও মাদক সামগ্রী।

বুধবার শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হল থেকে ৯টি সামুরাই, ৫০টি এসএস পাইপ, ৪০টি বাঁশের লাঠি, ৩৬টি কাঠের লাঠি, ৭২টি রড ও প্লাস্টিকের পাইপ, একটি মদের বোতল এবং গাঁজা ও মাদক গ্রহণের সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।

এছাড়াও অন্য হলগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

একটি সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে দমন করতেই এসব অস্ত্রশস্ত্র জড়ো করা হয় হাবিপ্রবির আবাসিক হলগুলোতে।

হাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার বলেন, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও ছাত্রদের মনিটরিং সেলের নেতাদের নিয়ে এ অভিযান চালানো হয়। তবে ভার্সিটির বাইরে বিজিবি ও সেনাবাহিনী মোতায়েন ছিল।

তিনি জানান, এসব অস্ত্রশস্ত্র থাকলে শিক্ষার্থীদের জন্য হলগুলো নিরাপদ ছিল না। তাই দুদিন ধরে উদ্ধার অভিযান শেষ করেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের হলে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

এদিকে হলগুলো থেকে অস্ত্র উদ্ধার অভিযানের প্রায় শেষ হওয়ার পর বুধবার সন্ধ্যা থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। ফলে বুধবার সন্ধ্যার পর শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলে প্রবেশ করতে শুরু করে।