শরীয়তপুরের জাজিরায় মো: দিদার সরদার নামে এক ছাত্রলীগ নেতা পদ থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন।
বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। মো: দিদার সরদার জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
দিদার সরদার জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়নের মনাই ছৈয়ালের কান্দি এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক সরদারের ছেলে।
ফেসবুক লাইভের ক্যাপশনে দিদার লেখেন, মুক্তিযোদ্ধারা আমার কাছে সবচেয়ে সম্মান এবং শ্রদ্ধার। তারা জাতীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ দেশের ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। তা অমান্য করার কোন সুযোগ কারো নেই। ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে প্রাণে আওয়ামীলীগকেই পছন্দ করি। তাই আমি ছাত্রলীগের একজন কর্মী ছিলাম। ছাত্রলীগ আমার আবেগ ছিলো। আমি ছাত্রলীগের বড় ভাইদের আইডল মনে করতাম। ছাত্রলীগের কর্মী হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ব করতাম। কিন্তু আজ এই ছাত্রলীগের হাতেই সাধারণ ছাত্র ছাত্রী এভাবে মার খাবে, হত্যা হবে এটা কখনো ভাবতে পারিনি। তারা অধিকার চেয়েছিল। এটাই তাদের অপরাধ। এজন্য যদি তাদের উপর ছাত্রলীগ এভাবে দেশীয় অস্ত্র লাঠি, বন্ধুক, বোমা ইত্যাদি নিয়ে হামলা করতে পারে তাহলে তারা আর কি না করতে পারবে। এই ছাত্রলীগ হচ্ছে ছাত্র ছাত্রীদের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করবে। কিন্তু তারা এসব কি করছে।
আজকে এই ছাত্রলীগ পরিচয় দিয়ে আমার বাবা মাকে গালি শুনাতে চাই নাহ। আমার বাবা মা আমাকে ন্যায়ের শিক্ষা দিয়েছেন।
আমি জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। আমি আজ স্ব-জ্ঞানে, স্ব-ইচ্ছায় ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ গ্রহণ করলাম। আমি আমার লাইফে আর কোন দল বা রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে জড়াবো নাহ্। ভালো থেকো প্রাণের সংগঠন।
নিজেদের ভুল গুলো সংশোধন করে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীর সাথে কাজ করার আহবান রইলো।
জানা যায়, দিদার সরদার স্কুল জীবন থেকেই ছাত্র রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়। এরপর উচ্চমাধ্যমিকে অধ্যায়নরত অবস্থায় তার নিজ এলাকা বড়কান্দি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক পদের দায়িত্ব পালন করেন। এরপরে ২০২০ সালে জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক পদে দায়িত্ব পান।
বিষয়টি নিয়ে দিদার সরদার এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি কালবেলাকে বলেন, যে পরিচয় দিলে বাবা মাকে বকা শুনতে হয় সেই পরিচয় থেকে নাম টা মুছে নিলাম। ভালো থাকুক প্রাণের সংগঠন।
এ বিষয়ে শরীয়তপুর জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন আহবায়ক রাশেদুজ্জামান আমাদের মাতৃভূমিকে বলেন, ছাত্রলীগের কোন নেতাকর্মী স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বের বিপক্ষে এবং মুক্তিযোদ্ধার বিপক্ষে যাইতে পারে না। যদি কেউ ছাত্রলীগের অনুপ্রবেশকারী হয়ে থাকে তাহলে তাদের স্বার্থ হাসিল হয়ে গেলে তারা যেতে পারে। কারণ আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে এরা বিএনপি-জামাত সহ বিভিন্ন দল থেকে ছাত্রলীগ এসে যোগ দিয়েছিল।