ঢাকা ০১:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪, ৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাদকাসক্তি নিরাময়ে দেশ সেরা পুলিশের ওয়েসিস; পুরস্কার গ্রহণ করলেন ডিএমপি কমিশনার

মাদকাসক্তি নিরাময় ও মাদকবিরোধী কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় দেশ সেরার পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট পরিচালিত মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র ওয়েসিস।

রবিবার (১৪ জুলাই ২০২৪) সকালে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে এক আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খানের কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন ওয়েসিসের চেয়ারম্যান ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বিপিএম-বার, পিপিএম-বার।

অনুষ্ঠানে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে নির্বাচিত সেরা প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়। মাদকবিরোধী কর্মকাণ্ডে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লাইসেন্সপ্রাপ্ত বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র ও নিবন্ধিত এনজিওগুলোর মধ্যে ৯টি প্রতিষ্ঠানকে এ বছর পুরস্কৃত করা হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো ‘মাদকের আগ্রাসন দৃশ্যমান, প্রতিরোধেই এর সমাধান।’

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমদ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মশিউর রহমান।

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করেছেন। সেই নির্দেশনা আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করছে। সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনও সংস্কার করা হয়েছে। মাদকদ্রব্য যে ভয়ানক নেশা সেটা বোঝানোর জন্য বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে শিশুদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে ওয়েসিস ছাড়াও বারাকা বাংলাদেশ মাদকাসক্তি চিকিৎসা সহায়তা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রমিসেস মেডিকেল লিমিটেড মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র, বিওয়াইএফসি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র, সেফ হোম মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্র, হেল্প মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র, আসক্ত পুনর্বাসন সংস্থা (আপস) এবং মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা মানস-কে পুরস্কার প্রদান করা হয়।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের অক্টোবরে তৎকালীন ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি ও বর্তমান ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বিপিএম-বার, পিপিএম-বার এর আন্তরিক উদ্যোগ ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় রাজধানীর অদূরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে মাদকাসক্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে গড়ে তোলা হয় ওয়েসিস। উন্নত ও মানসম্মত সেবা দিয়ে তিন বছরের কম সময়ে ব্যাপক প্রশংসিত ও মানুষের আস্থা লাভ করতে সক্ষম হয় প্রতিষ্ঠানটি।

দেশের সবচেয়ে অত্যাধুনিক মাদক নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র ওয়েসিস। মনোমুগ্ধকর ও নান্দনিক পরিবেশে উন্নত ব্যবস্থাপনায় এখানকার চিকিৎসা পদ্ধতি ও সবার আন্তরিকতা মাদকাসক্তদের দ্রুত পুনর্বাসনে সহায়তা করে। এখানে দেশের বিশেষজ্ঞ মনোরোগ চিকিৎসক, সাইকো থেরাপিস্ট, ফিজিওথেরাপিস্ট, ইয়োগা এক্সপার্ট ও অভিজ্ঞ এডিকশন কাউন্সিলরগণের মাধ্যমে সর্বাধুনিক ও সমন্বিত চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটি দুই শতাধিক মাদকাসক্ত নারী-পুরুষকে চিকিৎসা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে এনেছে। মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রটি মাদকাসক্তদের সেবা প্রদান করার মাধ্যমে দেশের সকল মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের মধ্যে এবার প্রথম স্থান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মাদকাসক্তি নিরাময়ে দেশ সেরা পুলিশের ওয়েসিস; পুরস্কার গ্রহণ করলেন ডিএমপি কমিশনার

আপডেট সময় ০৯:৫৭:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জুলাই ২০২৪

মাদকাসক্তি নিরাময় ও মাদকবিরোধী কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় দেশ সেরার পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট পরিচালিত মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র ওয়েসিস।

রবিবার (১৪ জুলাই ২০২৪) সকালে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে এক আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খানের কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন ওয়েসিসের চেয়ারম্যান ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বিপিএম-বার, পিপিএম-বার।

অনুষ্ঠানে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে নির্বাচিত সেরা প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়। মাদকবিরোধী কর্মকাণ্ডে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লাইসেন্সপ্রাপ্ত বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র ও নিবন্ধিত এনজিওগুলোর মধ্যে ৯টি প্রতিষ্ঠানকে এ বছর পুরস্কৃত করা হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো ‘মাদকের আগ্রাসন দৃশ্যমান, প্রতিরোধেই এর সমাধান।’

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমদ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মশিউর রহমান।

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করেছেন। সেই নির্দেশনা আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করছে। সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনও সংস্কার করা হয়েছে। মাদকদ্রব্য যে ভয়ানক নেশা সেটা বোঝানোর জন্য বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে শিশুদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে ওয়েসিস ছাড়াও বারাকা বাংলাদেশ মাদকাসক্তি চিকিৎসা সহায়তা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রমিসেস মেডিকেল লিমিটেড মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র, বিওয়াইএফসি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র, সেফ হোম মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্র, হেল্প মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র, আসক্ত পুনর্বাসন সংস্থা (আপস) এবং মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা মানস-কে পুরস্কার প্রদান করা হয়।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের অক্টোবরে তৎকালীন ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি ও বর্তমান ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বিপিএম-বার, পিপিএম-বার এর আন্তরিক উদ্যোগ ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় রাজধানীর অদূরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে মাদকাসক্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে গড়ে তোলা হয় ওয়েসিস। উন্নত ও মানসম্মত সেবা দিয়ে তিন বছরের কম সময়ে ব্যাপক প্রশংসিত ও মানুষের আস্থা লাভ করতে সক্ষম হয় প্রতিষ্ঠানটি।

দেশের সবচেয়ে অত্যাধুনিক মাদক নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র ওয়েসিস। মনোমুগ্ধকর ও নান্দনিক পরিবেশে উন্নত ব্যবস্থাপনায় এখানকার চিকিৎসা পদ্ধতি ও সবার আন্তরিকতা মাদকাসক্তদের দ্রুত পুনর্বাসনে সহায়তা করে। এখানে দেশের বিশেষজ্ঞ মনোরোগ চিকিৎসক, সাইকো থেরাপিস্ট, ফিজিওথেরাপিস্ট, ইয়োগা এক্সপার্ট ও অভিজ্ঞ এডিকশন কাউন্সিলরগণের মাধ্যমে সর্বাধুনিক ও সমন্বিত চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটি দুই শতাধিক মাদকাসক্ত নারী-পুরুষকে চিকিৎসা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে এনেছে। মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রটি মাদকাসক্তদের সেবা প্রদান করার মাধ্যমে দেশের সকল মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের মধ্যে এবার প্রথম স্থান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।