ঢাকা ১০:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

আওয়ামীলীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল চট্টগ্রাম

ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালিয়ে হত্যা ও নির্যাতনের অপরাধে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

এ দাবিতে শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেল তিনটা থেকে চট্টগ্রামের প্রেস ক্লাবে বিক্ষোভ করছেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী। সমাবেশ থেকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন কার‌্যালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন শিক্ষার্থীরা
এর আগে শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) মধ্যরাতে চট্টগ্রামের জামালখানে ছাত্রলীগের মিছিলের প্রতিবাদে এ বিক্ষোভের ডাক দেন শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভ থেকে ‌‘আবার ভাই কবরে খুনি কেন ভারতে খুনি হাসিনার দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান ‘মুক্তিযুদ্ধের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’ স্লোগান দেওয়া হচ্ছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন যারা জুলাই অভ্যুত্থানে আমাদের ওপর গুলি চালিয়েছে, আমাদের ভাই-বোনদের হত্যা করেছে। নির্বিচারে গুলি চালিয়েছ। আমরা দেখতে পাচ্ছি তারা এখনো অবাধে ঘোরাফেরা করছে। তারই ফলসরূপ আমরা দেখেছি তারা হাইকোর্টে খুনি হাসিনার পক্ষে স্লোগান দেয়।

রাতের আঁধারে ছাত্রলীগ হাসিনার জন্য স্লোগান দেয় তারা ভেবেছিল আমরা ঘুমাইয়া গেছি, তারা বুঝেনি আমরা তাদের গর্ত থেকে বের হওয়ার সুযোগ দিয়েছি। আমরা পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই। যারা এখনো খুনি হাসিনার পক্ষ নিয়ে, স্বৈরাচারের পক্ষ নিয়ে তারা জুলাই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত। তারা কোনো না কোনোভাবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই অতিদ্রুত তাদের খুঁজে বের করে বিষদাঁত ভেঙে দিতে। প্রশাসনের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে দ্রুতসময়ের মধ্যে যারা সন্ত্রাসী আছে, জুলাই অভ্যুত্থানে হামলায় সরাসরি জড়িত তাদের গ্রেফতার করে যথাযথ শাস্তি দিতে হবে।’

এখনো শহীদের রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি উল্লেখ করে খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, ‘যে চট্টগ্রামের মাটিতে শহীদ ওয়াসিম, শহীদ শান্ত এবং শহীদ হৃদয় তরুয়ার রক্ত লেগে আছে। সেই রাজপথে তারা স্লোগান দেওয়ার মত দুঃসাহস দেখিয়েছে। আমরা মনে করি এখানে প্রশাসনের ব্যর্থতা রয়েছে।এর আগে বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিকেল ৩ টা থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রেস ক্লাব চত্বরে সমবেত হতে থাকেন। বিকেল চারটার দিকে প্রেস ক্লাব চত্বরে ছাড়িয়ে জামালখান পর‌্যন্ত ছাড়িয়ে যায় সমাবেশ। বিক্ষোভে অংশ নেন অনক নারী শিক্ষার্থীও।

আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের আরেক সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেন, যারা এ দেশের ছাত্র–জনতার ওপর গণহত্যা চালিয়েছে, খুন করেছে, গুম করেছে তাদের এ দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। চকবাজার, কোতোয়ালী এবং পাঁচলাইশ থানার ওসিসহ সিএমপি কমিশনারকে আল্টিমেটাম দিয়ে রাসেল বলেন, এখন পর্যন্ত আপনারা ছাত্রলীগ–যুবলীগের খুনি–সন্ত্রাসীদের পুলিশ আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারেননি, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের আওতায় আনতে ব্যর্থ হলে পদত্যাগ করতে হবে। যদি তা না হয় আমরা আগামীকাল (রোববার) কঠোর কর্মসূচি দেব।

জানা যায়, ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিলের প্রতিবাদে নগরের মোড়ে মোড়ে বিএনপি ও তাদের অঙ্গ সংগঠনসহ অন্যান্যরা এর প্রতিবাদ জানিয়েছে। এই ঘটনার পর কোতোয়ালী থানা পুলিশ চারজনকে আটক করেছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে তিনজনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ইমরান খানের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে বড় অভিযান চালানোর শঙ্কা

আওয়ামীলীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল চট্টগ্রাম

আপডেট সময় ১০:৫০:২০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪

ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালিয়ে হত্যা ও নির্যাতনের অপরাধে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

এ দাবিতে শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেল তিনটা থেকে চট্টগ্রামের প্রেস ক্লাবে বিক্ষোভ করছেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী। সমাবেশ থেকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন কার‌্যালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন শিক্ষার্থীরা
এর আগে শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) মধ্যরাতে চট্টগ্রামের জামালখানে ছাত্রলীগের মিছিলের প্রতিবাদে এ বিক্ষোভের ডাক দেন শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভ থেকে ‌‘আবার ভাই কবরে খুনি কেন ভারতে খুনি হাসিনার দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান ‘মুক্তিযুদ্ধের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’ স্লোগান দেওয়া হচ্ছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন যারা জুলাই অভ্যুত্থানে আমাদের ওপর গুলি চালিয়েছে, আমাদের ভাই-বোনদের হত্যা করেছে। নির্বিচারে গুলি চালিয়েছ। আমরা দেখতে পাচ্ছি তারা এখনো অবাধে ঘোরাফেরা করছে। তারই ফলসরূপ আমরা দেখেছি তারা হাইকোর্টে খুনি হাসিনার পক্ষে স্লোগান দেয়।

রাতের আঁধারে ছাত্রলীগ হাসিনার জন্য স্লোগান দেয় তারা ভেবেছিল আমরা ঘুমাইয়া গেছি, তারা বুঝেনি আমরা তাদের গর্ত থেকে বের হওয়ার সুযোগ দিয়েছি। আমরা পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই। যারা এখনো খুনি হাসিনার পক্ষ নিয়ে, স্বৈরাচারের পক্ষ নিয়ে তারা জুলাই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত। তারা কোনো না কোনোভাবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই অতিদ্রুত তাদের খুঁজে বের করে বিষদাঁত ভেঙে দিতে। প্রশাসনের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে দ্রুতসময়ের মধ্যে যারা সন্ত্রাসী আছে, জুলাই অভ্যুত্থানে হামলায় সরাসরি জড়িত তাদের গ্রেফতার করে যথাযথ শাস্তি দিতে হবে।’

এখনো শহীদের রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি উল্লেখ করে খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, ‘যে চট্টগ্রামের মাটিতে শহীদ ওয়াসিম, শহীদ শান্ত এবং শহীদ হৃদয় তরুয়ার রক্ত লেগে আছে। সেই রাজপথে তারা স্লোগান দেওয়ার মত দুঃসাহস দেখিয়েছে। আমরা মনে করি এখানে প্রশাসনের ব্যর্থতা রয়েছে।এর আগে বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিকেল ৩ টা থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রেস ক্লাব চত্বরে সমবেত হতে থাকেন। বিকেল চারটার দিকে প্রেস ক্লাব চত্বরে ছাড়িয়ে জামালখান পর‌্যন্ত ছাড়িয়ে যায় সমাবেশ। বিক্ষোভে অংশ নেন অনক নারী শিক্ষার্থীও।

আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের আরেক সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেন, যারা এ দেশের ছাত্র–জনতার ওপর গণহত্যা চালিয়েছে, খুন করেছে, গুম করেছে তাদের এ দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। চকবাজার, কোতোয়ালী এবং পাঁচলাইশ থানার ওসিসহ সিএমপি কমিশনারকে আল্টিমেটাম দিয়ে রাসেল বলেন, এখন পর্যন্ত আপনারা ছাত্রলীগ–যুবলীগের খুনি–সন্ত্রাসীদের পুলিশ আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারেননি, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের আওতায় আনতে ব্যর্থ হলে পদত্যাগ করতে হবে। যদি তা না হয় আমরা আগামীকাল (রোববার) কঠোর কর্মসূচি দেব।

জানা যায়, ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিলের প্রতিবাদে নগরের মোড়ে মোড়ে বিএনপি ও তাদের অঙ্গ সংগঠনসহ অন্যান্যরা এর প্রতিবাদ জানিয়েছে। এই ঘটনার পর কোতোয়ালী থানা পুলিশ চারজনকে আটক করেছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে তিনজনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।