ঢাকা ০৯:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ইমরান খানের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে বড় অভিযান চালানোর শঙ্কা

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে সোচ্চার পাকিস্তান তেহরিক-এ-ইনসাফ (পিটিআই) কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশটির পরিস্থিতি।

দেশটির প্রশাসনিক কেন্দ্র খ্যাত ডি-চকের দখল নিতে মরিয়া হয়ে ওঠা পিটিআই কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে ইসলামাবাদের সব মার্কেট তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যে কারণে রাতে পিটিআইয়ের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এর আগে ব্যারিকেড ভেঙে রাজধানী ইসলামাবাদে প্রবেশ করেছে পাকিস্তানের কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের হাজারও সমর্থক। মঙ্গলবার সকালেই রাজধানীর চারপাশে স্থাপিত ব্যারিকেড ভেঙে ইসলামাবাদে প্রবেশ করেন তারা।

এ সময় তারা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন এবং ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। সংঘর্ষে ইতোমধ্যে ছয়জনের নিহতের খবর পাওয়া গেছে।

ডি-চকের চারপাশ ঘিরে নিরাপত্তা বাহিনীর তৈরি করা প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে সেখানে পৌঁছান কিছু বিক্ষোভকারী। বিক্ষোভকারীদের বাধা দিতে সড়ক-মহাসড়কে বিশাল আকারের কনটেইনারের প্রাচীর তৈরি করা হয়েছে। তবে বিক্ষোভকারীরা এসব কনটেইনারের ওপরে উঠে পড়েন।

এ সময় পাক রেঞ্জার্সের সদস্যদের বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে তাজা গুলি ছুড়তে দেখা যায়। তবে সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়ানো থেকে বিরত রয়েছেন।

এ সময় আধা-সামরিক বাহিনী রেঞ্জার্সের সদস্যরা তাজা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেন। কিছুক্ষণ পর বিক্ষোভকারীরা আবারও ডি-চকে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে রেড জোন এলাকা ডি-চকের প্রত্যেকটি প্রবেশমুখের নিয়ন্ত্রণ নেয় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।

দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন বলছে, সন্ধ্যার দিকে রেঞ্জার্সের কর্মীরা ডি-চকের সব প্রবেশমুখে অবস্থান নিয়েছেন। তবে পিটিআইয়ের কর্মী-সমর্থকরা আবারও ডি-চকের কাছাকাছি আসার চেষ্টা করছেন। দেশটির অত্যন্ত সুরক্ষিত ও স্পর্শকাতর এই এলাকায় সমবেত হওয়ার ঘোষণা দিয়ে ইসলামাবাদের চতুর্দিক থেকে পিটিআইয়ের কর্মী-সমর্থকরা মিছিল নিয়ে আসছেন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন—এর খবরে বলা হয়েছে, বিক্ষোভ ঠেকাতে পাকিস্তান সরকার সারা দেশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর করেছে, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে এবং রাজধানীতে প্রবেশের প্রধান সড়কগুলোতে ব্যারিকেড স্থাপন করেছিল, যাতে বিক্ষোভকারীরা প্রবেশ করতে না পারে। এর আগে ইমরান খান তার সমর্থকদের পার্লামেন্ট অভিমুখে মিছিল করার আহ্বান জানান।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি সাংবাদিকদের জানান, বিক্ষোভকারীরা ইসলামাবাদের উপকণ্ঠে অবস্থান করতে পারে, তবে তারা শহরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন।

পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে চারিদিক। বিপুল পরিমাণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ইসলামাবাদের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় বিশালায়তন শিপিং কন্টেনার এবং ব্যারিকেড বসিয়ে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। গোটা ইসলামাবাদ জুড়ে জায়জায়গায় ৭০০-র মতো শিপিং কন্টেনার বসানো হয়েছে, উদ্দেশ্য একটাই পিটিআই কর্মীদের ডি চকে ঢুকতে বাধা দেওয়া।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ইমরান খানের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে বড় অভিযান চালানোর শঙ্কা

ইমরান খানের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে বড় অভিযান চালানোর শঙ্কা

আপডেট সময় ০৯:৪০:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে সোচ্চার পাকিস্তান তেহরিক-এ-ইনসাফ (পিটিআই) কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশটির পরিস্থিতি।

দেশটির প্রশাসনিক কেন্দ্র খ্যাত ডি-চকের দখল নিতে মরিয়া হয়ে ওঠা পিটিআই কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে ইসলামাবাদের সব মার্কেট তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যে কারণে রাতে পিটিআইয়ের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এর আগে ব্যারিকেড ভেঙে রাজধানী ইসলামাবাদে প্রবেশ করেছে পাকিস্তানের কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের হাজারও সমর্থক। মঙ্গলবার সকালেই রাজধানীর চারপাশে স্থাপিত ব্যারিকেড ভেঙে ইসলামাবাদে প্রবেশ করেন তারা।

এ সময় তারা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন এবং ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। সংঘর্ষে ইতোমধ্যে ছয়জনের নিহতের খবর পাওয়া গেছে।

ডি-চকের চারপাশ ঘিরে নিরাপত্তা বাহিনীর তৈরি করা প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে সেখানে পৌঁছান কিছু বিক্ষোভকারী। বিক্ষোভকারীদের বাধা দিতে সড়ক-মহাসড়কে বিশাল আকারের কনটেইনারের প্রাচীর তৈরি করা হয়েছে। তবে বিক্ষোভকারীরা এসব কনটেইনারের ওপরে উঠে পড়েন।

এ সময় পাক রেঞ্জার্সের সদস্যদের বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে তাজা গুলি ছুড়তে দেখা যায়। তবে সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়ানো থেকে বিরত রয়েছেন।

এ সময় আধা-সামরিক বাহিনী রেঞ্জার্সের সদস্যরা তাজা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেন। কিছুক্ষণ পর বিক্ষোভকারীরা আবারও ডি-চকে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে রেড জোন এলাকা ডি-চকের প্রত্যেকটি প্রবেশমুখের নিয়ন্ত্রণ নেয় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।

দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন বলছে, সন্ধ্যার দিকে রেঞ্জার্সের কর্মীরা ডি-চকের সব প্রবেশমুখে অবস্থান নিয়েছেন। তবে পিটিআইয়ের কর্মী-সমর্থকরা আবারও ডি-চকের কাছাকাছি আসার চেষ্টা করছেন। দেশটির অত্যন্ত সুরক্ষিত ও স্পর্শকাতর এই এলাকায় সমবেত হওয়ার ঘোষণা দিয়ে ইসলামাবাদের চতুর্দিক থেকে পিটিআইয়ের কর্মী-সমর্থকরা মিছিল নিয়ে আসছেন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন—এর খবরে বলা হয়েছে, বিক্ষোভ ঠেকাতে পাকিস্তান সরকার সারা দেশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর করেছে, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে এবং রাজধানীতে প্রবেশের প্রধান সড়কগুলোতে ব্যারিকেড স্থাপন করেছিল, যাতে বিক্ষোভকারীরা প্রবেশ করতে না পারে। এর আগে ইমরান খান তার সমর্থকদের পার্লামেন্ট অভিমুখে মিছিল করার আহ্বান জানান।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি সাংবাদিকদের জানান, বিক্ষোভকারীরা ইসলামাবাদের উপকণ্ঠে অবস্থান করতে পারে, তবে তারা শহরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন।

পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে চারিদিক। বিপুল পরিমাণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ইসলামাবাদের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় বিশালায়তন শিপিং কন্টেনার এবং ব্যারিকেড বসিয়ে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। গোটা ইসলামাবাদ জুড়ে জায়জায়গায় ৭০০-র মতো শিপিং কন্টেনার বসানো হয়েছে, উদ্দেশ্য একটাই পিটিআই কর্মীদের ডি চকে ঢুকতে বাধা দেওয়া।