ঢাকা ০৯:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোটা আন্দোলন নিয়ে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান যা বললেন

শিক্ষার্থীদের চলমান কোটা বিষয়ক আন্দোলন জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সার্বিক পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে। এ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সহিংসতামুক্ত ও শান্তিপূর্ণ হওয়ায় কমিশন সাধুবাদ জানায়। একই সঙ্গে কোটা বিষয়ক সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে শিক্ষার্থীদের আন্তরিক আহ্বান জানাচ্ছে কমিশন।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন জাতীয় পর্যায়ে মেধাভিত্তিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ গঠনকে গুরুত্ব প্রদান করে। এ জন্য সুচিন্তিত ও সুবিবেচনাপ্রসূত নিয়োগ ব্যবস্থা চলমান রাখা প্রয়োজন। এদেশের ছাত্রসমাজ যুগ যুগ ধরেই অধিকার আদায়ের আন্দোলনে অগ্রপথিকের ভূমিকা পালন করছে। বিপুল ত্যাগ-তিতিক্ষা ও ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতা অর্জন করে এবং এতে মূল্যবান অবদান রেখেছিল ছাত্রসমাজ।

গত ১ জুলাই থেকে শিক্ষার্থীরা কোটাবিরোধী আন্দোলন পরিচালনা করেছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সড়ক ও মহাসড়ক অবরোধে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। চরম বিঘ্ন ঘটছে পণ্য পরিবহন ও রোগীদের চিকিৎসায়। যার ফলে জনদুর্ভোগ চরম অবস্থায় পৌঁছেছে।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, সকলের অধিকার এবং অন্তর্ভুক্তিকে কেন্দ্রবিন্দুতে রেখে মেধাভিত্তিক জাতীয় সংস্কৃতির বিকাশ হতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোটা সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ের যথার্থ সমন্বয় ও সামঞ্জস্য বিধান করা গুরুত্বপূর্ণ।জ্ঞানভিত্তিক সমাজ সৃষ্টির প্রচেষ্টায় মেধার যথাযথ মূল্যায়ন আবশ্যক। অপরপক্ষে কোটাব্যবস্থার সাথে কর্মসংস্থানের অধিকার, প্রতিবন্ধীসহ অন্যান্য অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর অধিকার ও জাতীয় চেতনার সংশ্লিষ্ট বিষয় রয়েছে। কমিশন মনে করে, ২০১৮ এর পরিপত্র বাস্তবায়নে শিক্ষার্থীদের দাবির যৌক্তিক সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে স্থায়ীত্বশীল সমাধান আসতে পারে।

সুপ্রিম কোর্ট সামগ্রিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে তা সৃষ্ট সংকট সমাধানে একটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ। সুপ্রিম কোর্টের গতকালের সাময়িক নির্দেশনা পরিপূর্ণ আস্থা ও শ্রদ্ধার দাবী রাখে এবং একইসাথে উদ্ভূত সমস্যা সমাধানের একটি উজ্জ্বল প্রত্যাশার সৃষ্টি করে। আমাদের সংবিধান এবং সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের প্রতি পরিপূর্ণ আস্থা ও সম্মান রাখা আমাদের জাতীয় জীবনের পাথেয়। এ অবস্থায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ও সহনশীলতার সাথে অপেক্ষা করা এবং দায়িত্বশীল আচরণ করা সমীচীন।

স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বজায় রাখার প্রয়াসে সকল পক্ষকে আন্তরিক, সুবিবেচনাপ্রসূত এবং কল্যাণমূলক অবস্থান গ্রহণের জন্য আন্দোলনকারী ছাত্রদের প্রতি আহ্বান জানায় কমিশন। কমিশনের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের প্রতি পরিপূর্ণ আস্থা রেখে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাওয়া, উপযুক্ত শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখা এবং জনদুর্ভোগ নিরসনের উদ্দেশ্যে ধৈর্য ধারণ পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। কমিশন বিশ্বাস করে, দ্রুতই শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসবে এবং ক্লাস-পরীক্ষা নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠিত হবে।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কোটা আন্দোলন নিয়ে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান যা বললেন

আপডেট সময় ১১:৪২:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০২৪

শিক্ষার্থীদের চলমান কোটা বিষয়ক আন্দোলন জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সার্বিক পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে। এ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সহিংসতামুক্ত ও শান্তিপূর্ণ হওয়ায় কমিশন সাধুবাদ জানায়। একই সঙ্গে কোটা বিষয়ক সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে শিক্ষার্থীদের আন্তরিক আহ্বান জানাচ্ছে কমিশন।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন জাতীয় পর্যায়ে মেধাভিত্তিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ গঠনকে গুরুত্ব প্রদান করে। এ জন্য সুচিন্তিত ও সুবিবেচনাপ্রসূত নিয়োগ ব্যবস্থা চলমান রাখা প্রয়োজন। এদেশের ছাত্রসমাজ যুগ যুগ ধরেই অধিকার আদায়ের আন্দোলনে অগ্রপথিকের ভূমিকা পালন করছে। বিপুল ত্যাগ-তিতিক্ষা ও ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতা অর্জন করে এবং এতে মূল্যবান অবদান রেখেছিল ছাত্রসমাজ।

গত ১ জুলাই থেকে শিক্ষার্থীরা কোটাবিরোধী আন্দোলন পরিচালনা করেছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সড়ক ও মহাসড়ক অবরোধে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। চরম বিঘ্ন ঘটছে পণ্য পরিবহন ও রোগীদের চিকিৎসায়। যার ফলে জনদুর্ভোগ চরম অবস্থায় পৌঁছেছে।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, সকলের অধিকার এবং অন্তর্ভুক্তিকে কেন্দ্রবিন্দুতে রেখে মেধাভিত্তিক জাতীয় সংস্কৃতির বিকাশ হতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোটা সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ের যথার্থ সমন্বয় ও সামঞ্জস্য বিধান করা গুরুত্বপূর্ণ।জ্ঞানভিত্তিক সমাজ সৃষ্টির প্রচেষ্টায় মেধার যথাযথ মূল্যায়ন আবশ্যক। অপরপক্ষে কোটাব্যবস্থার সাথে কর্মসংস্থানের অধিকার, প্রতিবন্ধীসহ অন্যান্য অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর অধিকার ও জাতীয় চেতনার সংশ্লিষ্ট বিষয় রয়েছে। কমিশন মনে করে, ২০১৮ এর পরিপত্র বাস্তবায়নে শিক্ষার্থীদের দাবির যৌক্তিক সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে স্থায়ীত্বশীল সমাধান আসতে পারে।

সুপ্রিম কোর্ট সামগ্রিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে তা সৃষ্ট সংকট সমাধানে একটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ। সুপ্রিম কোর্টের গতকালের সাময়িক নির্দেশনা পরিপূর্ণ আস্থা ও শ্রদ্ধার দাবী রাখে এবং একইসাথে উদ্ভূত সমস্যা সমাধানের একটি উজ্জ্বল প্রত্যাশার সৃষ্টি করে। আমাদের সংবিধান এবং সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের প্রতি পরিপূর্ণ আস্থা ও সম্মান রাখা আমাদের জাতীয় জীবনের পাথেয়। এ অবস্থায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ও সহনশীলতার সাথে অপেক্ষা করা এবং দায়িত্বশীল আচরণ করা সমীচীন।

স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বজায় রাখার প্রয়াসে সকল পক্ষকে আন্তরিক, সুবিবেচনাপ্রসূত এবং কল্যাণমূলক অবস্থান গ্রহণের জন্য আন্দোলনকারী ছাত্রদের প্রতি আহ্বান জানায় কমিশন। কমিশনের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের প্রতি পরিপূর্ণ আস্থা রেখে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাওয়া, উপযুক্ত শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখা এবং জনদুর্ভোগ নিরসনের উদ্দেশ্যে ধৈর্য ধারণ পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। কমিশন বিশ্বাস করে, দ্রুতই শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসবে এবং ক্লাস-পরীক্ষা নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠিত হবে।