ঢাকা ০৪:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাজিরায় দু’গ্রুপের সংঘর্ষে আহত অন্তত ১৯ জন

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ১৯ জন আহত হয়েছেন। এ সময় শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দুপুরে উপজেলার বিকেনগর ইউনিয়নের কদম আলী মাদবর কান্দি গ্রামের কোরবান মাদবর গ্রুপ এবং রাজ্জাক সিকদার গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কদম আলী মাদবর কান্দি গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে কোরবান ও রাজ্জাক গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। ইতোপূর্বে তাদের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এরই জের ধরে মঙ্গলবার দুপুরে দুই গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে বিষয়টি গ্রামবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে কয়েকশ’ গ্রামবাসী দুই দলে বিভক্ত হয়ে লাঠিসোঁটা, রাম দা, লোহার রডসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ১৯ জন আহত হন।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক মেডিকেল অফিসার ডাঃ রাবেয়া আক্তার ইভা জানান, আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

জানতে চাইলে কোরবান মাদবর বলেন, কয়েকদিন আগে আমাদের দলের একজনের ঘর কুপিয়েছিলো রাজ্জাক সিকদারের সমর্থকরা। সেখানে আমরা একটি মামলা করেছিলাম। সেই মামলায় তারা জামিনে এসে ক্ষিপ্ত হয়ে কয়েকশ ককটেল বোমা নিয়ে আমাদের সমর্থকদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।

এ বিষয়ে রাজ্জাক সিকদারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে কোরবান মাদবরের সমর্থক ও আমার সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও বাকবিতণ্ডা হয়। পরে কোরবান মাদবরের লোকজন তাদের নিজেদের ঘরবাড়ি নিজেরা ভাঙ্গচুর করে আমাদের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মিথ্যা মামলা করে। সেই মামলায় আমরা হাজিরা দিয়ে আসার সময় কোরবান মাদবরের সমর্থক বজলু মাস্টার আমাদের লোকজনকে কটুক্তি করে কথা বলে। এরপরই বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে কোরবান মাদবরের লোকজন বোমা নিয়ে আমাদের লোকজনের উপর হামলা করে।

জাজিরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও অভিযোগ পাইনি।

উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন দুপুরে কোরবান মাদবর সমর্থক দলিল উদ্দিন মাদবরের বাড়িতে লুকিয়ে রাখা বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তবে উক্ত ঘটনায় কোনো মামলা দায়ের হয় নি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জাজিরায় দু’গ্রুপের সংঘর্ষে আহত অন্তত ১৯ জন

আপডেট সময় ০২:০১:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ১৯ জন আহত হয়েছেন। এ সময় শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দুপুরে উপজেলার বিকেনগর ইউনিয়নের কদম আলী মাদবর কান্দি গ্রামের কোরবান মাদবর গ্রুপ এবং রাজ্জাক সিকদার গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কদম আলী মাদবর কান্দি গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে কোরবান ও রাজ্জাক গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। ইতোপূর্বে তাদের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এরই জের ধরে মঙ্গলবার দুপুরে দুই গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে বিষয়টি গ্রামবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে কয়েকশ’ গ্রামবাসী দুই দলে বিভক্ত হয়ে লাঠিসোঁটা, রাম দা, লোহার রডসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ১৯ জন আহত হন।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক মেডিকেল অফিসার ডাঃ রাবেয়া আক্তার ইভা জানান, আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

জানতে চাইলে কোরবান মাদবর বলেন, কয়েকদিন আগে আমাদের দলের একজনের ঘর কুপিয়েছিলো রাজ্জাক সিকদারের সমর্থকরা। সেখানে আমরা একটি মামলা করেছিলাম। সেই মামলায় তারা জামিনে এসে ক্ষিপ্ত হয়ে কয়েকশ ককটেল বোমা নিয়ে আমাদের সমর্থকদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।

এ বিষয়ে রাজ্জাক সিকদারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে কোরবান মাদবরের সমর্থক ও আমার সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও বাকবিতণ্ডা হয়। পরে কোরবান মাদবরের লোকজন তাদের নিজেদের ঘরবাড়ি নিজেরা ভাঙ্গচুর করে আমাদের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মিথ্যা মামলা করে। সেই মামলায় আমরা হাজিরা দিয়ে আসার সময় কোরবান মাদবরের সমর্থক বজলু মাস্টার আমাদের লোকজনকে কটুক্তি করে কথা বলে। এরপরই বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে কোরবান মাদবরের লোকজন বোমা নিয়ে আমাদের লোকজনের উপর হামলা করে।

জাজিরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও অভিযোগ পাইনি।

উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন দুপুরে কোরবান মাদবর সমর্থক দলিল উদ্দিন মাদবরের বাড়িতে লুকিয়ে রাখা বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তবে উক্ত ঘটনায় কোনো মামলা দায়ের হয় নি।