ঢাকা ০৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

সুরা ফাতহে মুমিনদের যে সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে

সুরা ফাতহ পবিত্র কুরআনের ৪৮তম সুরা। ফাতহ অর্থ বিজয়। এ সুরাটি মদিনায় নাজিল হয়েছে। এর আয়াত সংখ্যা ২৯, রুকু ৪টি।

প্রথম রুকু, ১ থেকে ১০ নম্বর আয়াত। সূরার শুরুতে রাসুলের (সা.) মর্যাদা বর্ণনা করা হয়েছে। পরবর্তীতে মুমিনদের প্রশংসা ও তাদের প্রতিদান সম্পর্কে বলা হয়েছে।

দ্বিতীয় রুকু, ১১ থেকে ১৭ নম্বর আয়াত। মুনফিকদের ব্যাপারে সতর্ক-সজাগ করে দেওয়া হয়েছে এ রুকুতে।

তৃতীয় রুকু, ১৮ থেকে ২৬ নম্বর আয়াত। এই রুকুতে আল্লাহ মুমিনদেরকে বিজয় ও ধনসম্পদ দেওয়ার ওয়াদা করেছেন।

চতুর্থ তথা শেষ রুকু। নবীজীকে দেখানো স্বপ্ন আল্লাহ সত্য করেছেন সে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আরো বলা হয়েছে মুমিনরা কাফেরদের ব্যাপারে কঠোর এবং নিজেদের ব্যাপারে কোমল। এভাবে সুরার ইতি টানা হয়েছে।

ষষ্ঠ হিজরিতে হজরত মুহাম্মদ (সা.) ১ হাজার ৪০০ সাহাবি নিয়ে ওমরাহ পালনের জন্য মক্কার দিকে এগিয়ে গেলে হুদায়বিয়াতে কুরাইশরা বাধা দেয়। তখন একটি চুক্তি করে ওই বছর কাবা শরিফ জিয়ারত না করে তারা মদিনায় ফিরে যান। মক্কাবাসী চুক্তি ভঙ্গ করায় মক্কা বিজয়ের ভবিষ্যদ্বাণী দুই বছর পর অষ্টম হিজরিতে বাস্তবায়িত হয়।

ষষ্ঠ হিজরির জিলকদ মাসে মক্কার কাফিরদের সঙ্গে সন্ধি চুক্তি সম্পাদনের পর নবী (সা.) যখন মদিনার দিকে ফিরে যাচ্ছেন, তখন সুরাটি নাজিল হয়।

আল্লাহ হুদায়বিয়ার সন্ধির আকারে নবী করিম (সা.) ও মুসলমানদের যে মক্কায় বিজয় দান করেছিলেন, তার সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে এই সুরায়। মুমিন নরনারীর জন্য জান্নাতের প্রতিশ্রুতি এবং কাফির ও মুনাফিকদের শাস্তি, হুদায়বিয়ার সন্ধিকালে নবীজির সঙ্গে উপস্থিত সাহাবিদের প্রতি আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি ঘোষণা, খায়বার বিজয়ের সুসংবাদ দেওয়া, সব ধর্মের ওপর ইসলামের বিজয় ঘোষণা রয়েছে এই সুরায়।

সুরা ফাতহের গুরুত্ব ও ফজিলত

সুরা ফাতহ ব্যক্তিজীবন এবং জাতীয় অনুষ্ঠানেও পাঠ করা যায়। আব্দুল্লাহ ইবনে মুগাফফাল (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) মক্কা বিজয়ের দিন সুরা ফাতহ সুমধুর কণ্ঠে পাঠ করেছেন । মুআবিয়া (রা.) বলেন, আমি ইচ্ছা করলে নবী কারিম (সা.)-এর কিরাত তোমাদের নকল করে শোনাতে পারি। (বুখারি : ৪৪৭৬)

বহু মুসলিম মনীষী জোহরের পর সুরা ফাতহ তেলাওয়াত করতেন। সুরা ফাতহের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) হজরত ওমর (রা.)-কে বলেন, ‘আজ রাতে আমার ওপর এমন একটি সুরা নাজিল হয়েছে, যা আমার কাছে সূর্যালোকিত সব স্থান থেকে উত্তম। এরপর তিনি সুরা ফাতহের প্রথম আয়াত তেলাওয়াত করেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৪১৭৭)

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাংবাদিক শাহাদাত হোসেনের উপর হামলা ও হত্যার হুমকি নিয়ে চান্দগাঁও থানায় সাধারণ ডায়েরি

সুরা ফাতহে মুমিনদের যে সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে

আপডেট সময় ০৫:৫৭:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪

সুরা ফাতহ পবিত্র কুরআনের ৪৮তম সুরা। ফাতহ অর্থ বিজয়। এ সুরাটি মদিনায় নাজিল হয়েছে। এর আয়াত সংখ্যা ২৯, রুকু ৪টি।

প্রথম রুকু, ১ থেকে ১০ নম্বর আয়াত। সূরার শুরুতে রাসুলের (সা.) মর্যাদা বর্ণনা করা হয়েছে। পরবর্তীতে মুমিনদের প্রশংসা ও তাদের প্রতিদান সম্পর্কে বলা হয়েছে।

দ্বিতীয় রুকু, ১১ থেকে ১৭ নম্বর আয়াত। মুনফিকদের ব্যাপারে সতর্ক-সজাগ করে দেওয়া হয়েছে এ রুকুতে।

তৃতীয় রুকু, ১৮ থেকে ২৬ নম্বর আয়াত। এই রুকুতে আল্লাহ মুমিনদেরকে বিজয় ও ধনসম্পদ দেওয়ার ওয়াদা করেছেন।

চতুর্থ তথা শেষ রুকু। নবীজীকে দেখানো স্বপ্ন আল্লাহ সত্য করেছেন সে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আরো বলা হয়েছে মুমিনরা কাফেরদের ব্যাপারে কঠোর এবং নিজেদের ব্যাপারে কোমল। এভাবে সুরার ইতি টানা হয়েছে।

ষষ্ঠ হিজরিতে হজরত মুহাম্মদ (সা.) ১ হাজার ৪০০ সাহাবি নিয়ে ওমরাহ পালনের জন্য মক্কার দিকে এগিয়ে গেলে হুদায়বিয়াতে কুরাইশরা বাধা দেয়। তখন একটি চুক্তি করে ওই বছর কাবা শরিফ জিয়ারত না করে তারা মদিনায় ফিরে যান। মক্কাবাসী চুক্তি ভঙ্গ করায় মক্কা বিজয়ের ভবিষ্যদ্বাণী দুই বছর পর অষ্টম হিজরিতে বাস্তবায়িত হয়।

ষষ্ঠ হিজরির জিলকদ মাসে মক্কার কাফিরদের সঙ্গে সন্ধি চুক্তি সম্পাদনের পর নবী (সা.) যখন মদিনার দিকে ফিরে যাচ্ছেন, তখন সুরাটি নাজিল হয়।

আল্লাহ হুদায়বিয়ার সন্ধির আকারে নবী করিম (সা.) ও মুসলমানদের যে মক্কায় বিজয় দান করেছিলেন, তার সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে এই সুরায়। মুমিন নরনারীর জন্য জান্নাতের প্রতিশ্রুতি এবং কাফির ও মুনাফিকদের শাস্তি, হুদায়বিয়ার সন্ধিকালে নবীজির সঙ্গে উপস্থিত সাহাবিদের প্রতি আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি ঘোষণা, খায়বার বিজয়ের সুসংবাদ দেওয়া, সব ধর্মের ওপর ইসলামের বিজয় ঘোষণা রয়েছে এই সুরায়।

সুরা ফাতহের গুরুত্ব ও ফজিলত

সুরা ফাতহ ব্যক্তিজীবন এবং জাতীয় অনুষ্ঠানেও পাঠ করা যায়। আব্দুল্লাহ ইবনে মুগাফফাল (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) মক্কা বিজয়ের দিন সুরা ফাতহ সুমধুর কণ্ঠে পাঠ করেছেন । মুআবিয়া (রা.) বলেন, আমি ইচ্ছা করলে নবী কারিম (সা.)-এর কিরাত তোমাদের নকল করে শোনাতে পারি। (বুখারি : ৪৪৭৬)

বহু মুসলিম মনীষী জোহরের পর সুরা ফাতহ তেলাওয়াত করতেন। সুরা ফাতহের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) হজরত ওমর (রা.)-কে বলেন, ‘আজ রাতে আমার ওপর এমন একটি সুরা নাজিল হয়েছে, যা আমার কাছে সূর্যালোকিত সব স্থান থেকে উত্তম। এরপর তিনি সুরা ফাতহের প্রথম আয়াত তেলাওয়াত করেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৪১৭৭)