ঢাকা ০৪:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ঈদ শেষে স্বস্তিতে ঢাকায় ফিরছে মানুষ

ঈদের ছুটি শেষে কর্মজীবী মানুষ ঢাকা ফিরতে শুরু করেছেন। তবে ঈদযাত্রায় ফিরতি ট্রেন-লঞ্চ ও বাসে যাত্রীর চাপ খুব বেশি নেই। এজন্য অনেকটা স্বস্তিতে ফিরছে মানুষ। স্কুল ছুটি থাকায় অনেকে পরিবারকে রেখে একাই ঢাকা ফিরছেন। অন্যদিকে ঈদের আগে যারা বাড়ি যেতে পারেননি তাদের অনেকে এখন ঢাকা ছেড়ে গ্রামে যাচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, সদরঘাট লঞ্চ স্টেশন, গাবতলী, সায়েদাবাদ ও মহাখালী বাস টার্মিনাল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বৃহস্পতিবার সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঈদযাত্রা শেষে ফিরতি মানুষের চেয়ে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষের উপস্থিতি বেশি লক্ষ করা গেছে। তারা ঢাকা ছেড়ে গন্তব্যের উদ্দেশে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। কেউ কেউ আবার টিকিট সংগ্রহ করতে ব্যস্ত।

সিরাজগঞ্জ থেকে এসেছেন বেসরকারি সংস্থার কর্মচারী লালন হোসেন। তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিলাম পরিবারের সদস্যসহ। তবে ছুটি তাড়াতাড়ি শেষ হওয়ায় পরিবারের অন্যদের রেখে এসেছি, এখান থেকে সরাসরি অফিসে চলে যাব। অফিস শেষ করে বাসায় ফিরব।

পাবনা থেকে আসা সিরাজুল ইসলাম বলেন, এবার ঈদে চার দিন ছুটি পেয়েছি। ছুটি শেষ করে বাড়ি থেকে ফিরলাম। কম ছুটিতে তাড়াহুড়া হয়ে যায়। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় না। তারপরও কর্মের কারণে তো ইচ্ছামতো ছুটি কাটানো সম্ভব হয় না।

ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে কথা হয় নাটোরগামী নাজমুস সায়াদাতের সঙ্গে। তিনি জানান, একটি সেবা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। অফিসে একবারে সবাইকে ছুটি দেওয়ার সুযোগ নেই। গত ঈদে তিনি ছুটি কাটানোয় এ ঈদে আগে ছুটি পাননি। আজ থেকে অন্যদের ডিউটি শুরু হয়েছে, আর যারা ঈদে ডিউটি করেছেন তাদের ছুটি হলো। এখন ছুটি না কাটালে পরে আর ছুটি পাওয়া যাবে না। তাই গ্রামে যাচ্ছেন।

সকালে সদরঘাট লঞ্চঘাটেও একই অবস্থা দেখা গেছে। স্বস্তিতে নির্বিঘ্নে ঢাকায় ফিরছে ঈদে গ্রামে যাওয়া মানুষ। যাত্রীর তেমন চাপ নেই। লঞ্চঘাটেও ঈদে যারা যেতে পারেননি তারা এখন গ্রামে যাচ্ছেন। বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ যাচ্ছেন ভোলা। যুগান্তরকে জানান, কোম্পানির ফ্যাক্টরি দেখাশোনার জন্য ছুটির সময়ে কাউকে না কাউকে দায়িত্বে থাকতে হয়। একেক ঈদে এক গ্রুপ ছুটি পায় এবং অন্য গ্রুপ দায়িত্ব পালন করে। গত ঈদে তার ছুটি ছিল, সেবার ঈদের আগে গ্রামে গিয়েছিলেন। আর এবার ঈদে আমি ডিউটি করেছি অন্যরা ছুটি কাটিয়েছেন। এখন ঈদের ছুটি শেষে অন্যরা ফিরেছেন এবং যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, তারা ছুটিতে যাচ্ছেন। এখনো ঈদের আমেজ রয়েছে, গ্রামে গেলে সময়টা ভালোই কাটবে।

যাত্রাবাড়ী-সায়েদাবাদ, গাবতলী এবং মহাখালী বাস টার্মিনাল ও আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঈদে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষরা ঢাকা ফিরছে। তবে খুব বেশি ভিড় নেই। এসব স্পটেও ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষের উপস্থিতি দেখা গেছে। ঢাকায় ফেরা ও ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষের উপস্থিতি সমান সমান মনে হয়েছে।

গাবতলীতে ঢাকায় ফেরা মানুষের তেমন একটা চাপ নেই। বৃহস্পতিবার সরেজমিন গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, অল্প যাত্রী নিয়ে দূরপাল্লার বাস গাবতলীতে ঢুকছে। যানবাহনের চাপ কম থাকায় আমিনবাজার ব্রিজ (পর্বতা) থেকে মাজার রোড পর্যন্ত বেশির ভাগ সময় ফাঁকা ছিল।

ঈদের ছুটির পর অফিস খুললেও বুধবারের মতো বৃহস্পতিবারও ঢিলেঢালা চলেছে। তেমন কোনো কাজ হয়নি। কুশল বিনিময় এবং কে এসেছে, কে আসেনি, কবে আসবে, এমন আলাপ-আলোচনায় দিন পার হয়েছে। আগামী সপ্তাহের কর্মপরিকল্পনা, মিটিং কী করা যায় সেসব নিয়ে কিছু প্রস্তুতিমূলক কাজ হয়েছে। অফিসগুলোতে মানুষের উপস্থিতিও অনেক কম ছিল।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বাইরে মানুষের উপস্থিতি খুবই কম দেখা গেছে। আজ ও কাল অফিস বন্ধ থাকবে। রোববার থেকে অফিসগুলো পুরোদমে জমে উঠবে। তখন শহরে মানুষের উপস্থিতিও বাড়বে। দোকানপাট, শপিংমল এবং গণপরিসরগুলোও জমে উঠবে।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সুদখোর চেয়ারম্যান সাইফুলের ঘরে আলাদিনের চেরাগ!

ঈদ শেষে স্বস্তিতে ঢাকায় ফিরছে মানুষ

আপডেট সময় ১০:১৫:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুন ২০২৪

ঈদের ছুটি শেষে কর্মজীবী মানুষ ঢাকা ফিরতে শুরু করেছেন। তবে ঈদযাত্রায় ফিরতি ট্রেন-লঞ্চ ও বাসে যাত্রীর চাপ খুব বেশি নেই। এজন্য অনেকটা স্বস্তিতে ফিরছে মানুষ। স্কুল ছুটি থাকায় অনেকে পরিবারকে রেখে একাই ঢাকা ফিরছেন। অন্যদিকে ঈদের আগে যারা বাড়ি যেতে পারেননি তাদের অনেকে এখন ঢাকা ছেড়ে গ্রামে যাচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, সদরঘাট লঞ্চ স্টেশন, গাবতলী, সায়েদাবাদ ও মহাখালী বাস টার্মিনাল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বৃহস্পতিবার সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঈদযাত্রা শেষে ফিরতি মানুষের চেয়ে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষের উপস্থিতি বেশি লক্ষ করা গেছে। তারা ঢাকা ছেড়ে গন্তব্যের উদ্দেশে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। কেউ কেউ আবার টিকিট সংগ্রহ করতে ব্যস্ত।

সিরাজগঞ্জ থেকে এসেছেন বেসরকারি সংস্থার কর্মচারী লালন হোসেন। তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিলাম পরিবারের সদস্যসহ। তবে ছুটি তাড়াতাড়ি শেষ হওয়ায় পরিবারের অন্যদের রেখে এসেছি, এখান থেকে সরাসরি অফিসে চলে যাব। অফিস শেষ করে বাসায় ফিরব।

পাবনা থেকে আসা সিরাজুল ইসলাম বলেন, এবার ঈদে চার দিন ছুটি পেয়েছি। ছুটি শেষ করে বাড়ি থেকে ফিরলাম। কম ছুটিতে তাড়াহুড়া হয়ে যায়। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় না। তারপরও কর্মের কারণে তো ইচ্ছামতো ছুটি কাটানো সম্ভব হয় না।

ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে কথা হয় নাটোরগামী নাজমুস সায়াদাতের সঙ্গে। তিনি জানান, একটি সেবা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। অফিসে একবারে সবাইকে ছুটি দেওয়ার সুযোগ নেই। গত ঈদে তিনি ছুটি কাটানোয় এ ঈদে আগে ছুটি পাননি। আজ থেকে অন্যদের ডিউটি শুরু হয়েছে, আর যারা ঈদে ডিউটি করেছেন তাদের ছুটি হলো। এখন ছুটি না কাটালে পরে আর ছুটি পাওয়া যাবে না। তাই গ্রামে যাচ্ছেন।

সকালে সদরঘাট লঞ্চঘাটেও একই অবস্থা দেখা গেছে। স্বস্তিতে নির্বিঘ্নে ঢাকায় ফিরছে ঈদে গ্রামে যাওয়া মানুষ। যাত্রীর তেমন চাপ নেই। লঞ্চঘাটেও ঈদে যারা যেতে পারেননি তারা এখন গ্রামে যাচ্ছেন। বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ যাচ্ছেন ভোলা। যুগান্তরকে জানান, কোম্পানির ফ্যাক্টরি দেখাশোনার জন্য ছুটির সময়ে কাউকে না কাউকে দায়িত্বে থাকতে হয়। একেক ঈদে এক গ্রুপ ছুটি পায় এবং অন্য গ্রুপ দায়িত্ব পালন করে। গত ঈদে তার ছুটি ছিল, সেবার ঈদের আগে গ্রামে গিয়েছিলেন। আর এবার ঈদে আমি ডিউটি করেছি অন্যরা ছুটি কাটিয়েছেন। এখন ঈদের ছুটি শেষে অন্যরা ফিরেছেন এবং যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, তারা ছুটিতে যাচ্ছেন। এখনো ঈদের আমেজ রয়েছে, গ্রামে গেলে সময়টা ভালোই কাটবে।

যাত্রাবাড়ী-সায়েদাবাদ, গাবতলী এবং মহাখালী বাস টার্মিনাল ও আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঈদে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষরা ঢাকা ফিরছে। তবে খুব বেশি ভিড় নেই। এসব স্পটেও ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষের উপস্থিতি দেখা গেছে। ঢাকায় ফেরা ও ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষের উপস্থিতি সমান সমান মনে হয়েছে।

গাবতলীতে ঢাকায় ফেরা মানুষের তেমন একটা চাপ নেই। বৃহস্পতিবার সরেজমিন গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, অল্প যাত্রী নিয়ে দূরপাল্লার বাস গাবতলীতে ঢুকছে। যানবাহনের চাপ কম থাকায় আমিনবাজার ব্রিজ (পর্বতা) থেকে মাজার রোড পর্যন্ত বেশির ভাগ সময় ফাঁকা ছিল।

ঈদের ছুটির পর অফিস খুললেও বুধবারের মতো বৃহস্পতিবারও ঢিলেঢালা চলেছে। তেমন কোনো কাজ হয়নি। কুশল বিনিময় এবং কে এসেছে, কে আসেনি, কবে আসবে, এমন আলাপ-আলোচনায় দিন পার হয়েছে। আগামী সপ্তাহের কর্মপরিকল্পনা, মিটিং কী করা যায় সেসব নিয়ে কিছু প্রস্তুতিমূলক কাজ হয়েছে। অফিসগুলোতে মানুষের উপস্থিতিও অনেক কম ছিল।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বাইরে মানুষের উপস্থিতি খুবই কম দেখা গেছে। আজ ও কাল অফিস বন্ধ থাকবে। রোববার থেকে অফিসগুলো পুরোদমে জমে উঠবে। তখন শহরে মানুষের উপস্থিতিও বাড়বে। দোকানপাট, শপিংমল এবং গণপরিসরগুলোও জমে উঠবে।