ঢাকা ০৯:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শাহাবুদ্দিন ও কৃষ্ণ মজুমদার চক্র মানব পাচারকারী দেশে ও বিদেশে সক্রিয়

শাহাবুদ্দিন ও কৃষ্ণ চক্রের খপ্পরে পড়ে গৌরব সাঞ্জারী নামে এক তরুণ আজ সর্বস্ব হারিয়ে পথে পথে। তাকে প্রলোভন দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে নির্যাতন করে ৫০ হাজার ডলার দাবী করে। তা দিতে অস্বীকার করায় তার উপর নির্যাতন চালাতে থাকে আমেরিকার নিউ জার্সির বার্লিন শহরে।

আমেরিকায় ঘুরতে গিয়ে শাহাবউদ্দিন মানব পাচারচক্র ও কণিকা মজুমদার তরুণীর সঙ্গে পরিচয় হয় গৌরব সাঞ্জারী নামে এক তরুণের। বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমে এদের মুখোশ উন্মোচন হওয়ার পরে গৌরবকে হত্যার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ভাড়াটিয়া খুনি দিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে অতর্কিত হামলা চালায়। এজন্য গৌরব স্থানীয় থানায় ও আদলতে অভিযোগ দায়ের করেছে। শাহাবুদ্দিন ও কৃষ্ণ চক্রের প্রবাসী মানব পাচারচক্রের দেহ ব্যবসায়ী শিল্পী কনিকা, রাজীব, বিমল বিভিন্ন সময় আমেরিকা বিভিন্ন নম্বর থেকে হুমকী প্রদান করে। প্রাণে মেরে ফেলার হুমকী প্রদান করে মানব পাচারের শিকার ভিকটিম গৌরব সাঞ্জারীকে।

তিনি তখনো ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি এক ভয়াবহ প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়েছেন। টাকা না দেয়ায় গৌরব সাঞ্জারীকে যুক্তরাষ্ট্রে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেন ও গৌরবের গ্রীণকার্ড ও সকল গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র মানবপাচার চক্র রেখে দেয়। গৌরব সাঞ্জারীকে মামলা তুলে নিতে শাহাব উদ্দিন ও কণিকা মজুমদার চক্রের সদস্যরা অব্যাহত হুমকী প্রদান করে চলেছে বলে জানা যায় এবং মামলা তুলে ফেলারও হুমকী দেয় এবং গৌরবসহ তার পরিবারের সদস্যদেরকে আরো মিথ্যা মামলায় ফাসাবে বলে হুমকী প্রদান করে।

নিউ জার্সির বার্লিন শহরে শাহাব উদ্দিন ও শিল্পী মজুমদার দেহ ব্যবসা করার জন্য বিভিন্ন নরনারীকে ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায় করে। অর্থ দিতে অস্বীকার করলে তাদের স্পর্শকাতর জায়গার ছবি তুলে স্যোশাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেবে বলে হুমকী দেয়। এভাবে তারা গৌরবের শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গার ছবি তুলে রাখে।

বাংলাদেশে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে কনে ফিরে যায় যুক্তরাষ্ট্রে। কিছুদিন পর চট্টগ্রামের তরুণ গৌরবকেও যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়া হয়। এরপরই কনেপক্ষের ফাঁদে আটকা পড়েন তিনি। মারধর আর নির্যাতন করে নেওয়া হয় ২০ হাজার ডলার। এরপর আরও দাবি করা হয় এক কোটি টাকা। স্বল্প আয়ে সংসার চলা গৌরবের পরিবার সেই দাবি মেটাতে পারেননি। আর এ কারণেই মাসের পর মাস বদ্ধ কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতন চালানো হয় গৌরবের ওপর। এমনকি ওই চক্রের সদস্যরা দেশে থাকা গৌরবের বাবা-মাকেও মেরে আহত করে।

জানা যায়, ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ঘুরতে গিয়েছিলেন গৌরব সাঞ্জারী । সেখানে বাঙালি তরুণী পরিচয়ে দেখা হয় কণিকা মজুমদারের সঙ্গে। কথাবার্তা থেকে বিষয়টি প্রেমে গড়ায়। তবে ওই তরুণীর বিরুদ্ধে ছিল বহু অভিযোগ। চুক্তিভিত্তিক বিয়ের নামে বিভিন্ন দেশ থেকে তরুণদের যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়া চক্রে কাজ করত ওই তরুণী।

জানা যায়, কণিকা মজুমদার যুক্তরাষ্ট্রে নানা নামে পরিচিত। কখনো তার নাম কণিকা, কখনো সীমা, কখনো বা সেঁজুতি। তার পরিবারের সদস্যরাও এমন নানা প্রতারণায় জড়িত। কৃষ্ণ মজুমদার, ব্রাজা মজুমদার ও শাহাবুদ্দিন নামধারী এক ব্যক্তি এই প্রতারক চক্রকে নেতৃত্ব দেয়।

নির্যাতনের শিকার গৌরব সাঞ্জারী বলেন, ‘আমেরিকা যাওয়ার পর থেকেই তারা শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন শুরু করে। মারধর করে আমেরিকার ব্যাংক থেকে ৮ হাজার ডলার এবং নগদ প্রায় ৬ হাজার ডলার নিয়ে যায় কণিকা মজুমদার। একপর্যায়ে আরও টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে মারধর করে। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগও বন্ধ করে দেয়। এমনকি গত ২০২২ সালের জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এক মিথ্যা মামলায়ও ফাঁসিয়ে দেয় আমাকে। এরা গৌরবকে বিদেশে শায়েস্তা করতে না পেরে দেশে শায়েস্তা করার মিশন হাতে নিয়েছে, যেকোন উপায়ে গৌরবকে তারা শায়েস্তা করবেই। এজন্য তাকে তারা বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়ে ও হত্যার উদ্দেশ্যে ভাড়াটিয়া খুনী যোগাড় করে রেখেছে। যে কোন সময় তারা গৌরবকে খুন করতে পারে বলে গৌরব আশংকা করছে।

তিনি বলেন, ‘এসব ঘটনা ঘটলেও দেশে থাকা আমার পরিবার কিছুই জানতে পারেনি। কিন্তু কণিকা মজুমদার চক্রের বাংলাদেশে অবস্থানকারী দালালরা যোগাযোগ করে আমার পরিবারের সঙ্গে। তাদের কাছে টাকা দাবি করে, না হলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এমনকি আমার বয়স্ক বাবা-মাকে মারধর করে। ওই চক্রের মারধর এবং অত্যাচারে গুরুতর আহত হন তারা। মারধরের মামলা জজকোর্টে চলমান এবং একজন আসামী প্রণীতা মজুমদার তার দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।

গৌরব অভিযোগ করেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে নির্যাতনের সময় সঞ্জীব মজুমদার ও সুমন মজুমদার আমাকে বলত টাকা না দিয়ে এখান থেকে বের হওয়া যাবে না। এটা আমাদের ব্যবসা। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে আমাকে যাতে ফাঁসানো যায়, এ জন্য দেশে থাকা ওই প্রতারক চক্রের সদস্যরা আমার নামে একটি মিথ্যা মামলা করে, যাতে দেখানো যায় আমি দেশেও অপরাধের সঙ্গে যুক্ত।’ কিন্তু এ মামলার কোন ভিত্তি নেই।

তিনি আরও জানান, ‘শুধু চুক্তিভিত্তিক বিয়ের নামে প্রতারণা নয়, এই চক্রটি শিশুদের দিয়ে পর্নোগ্রাফি তৈরি করে। এমনকি আমাকেও যৌন নির্যাতন করে। জ্ঞান হারানো পর্যন্ত নির্যাতন করত। এ-সংক্রান্ত অনেক তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। এই চক্র বিয়ের নামে প্রতারণা করে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে ভুয়া ভোটার আইডি কার্ড, পাসপোর্ট এবং ভুয়া জন্মনিবন্ধন তৈরি করে।’

জানা গেছে, সংঘবদ্ধ এই চক্রের বাংলাদেশেও একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। যারা মানুষকে যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়ার প্রলোভনে ফেলে। এরপর কৌশলে সে দেশে নিয়ে আটকে রেখে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাঠাতে বাধ্য করে। টাকা দিতে অপারগতা জানালে চলে নির্যাতন। শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে এভাবে লোকজনকে প্রলোভনে ফেলে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে নির্যাতন করা হয়।

গৌরব সাঞ্জারী বলেন, ‘অনেক কষ্টে দেশে ফিরলেও এখনো অতীত ভুলতে পারছি না। এখানেও আমাকে মারার জন্য ওই সিন্ডিকেটের লোকজন খুঁজছে। বেশ কয়েকবার হামলার চেষ্টাও করেছে। দুটি মোবাইল নম্বর থেকে প্রতিনিয়ত দেওয়া হচ্ছে হুমকি-ধমকি। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য শাহাবুদ্দিন ও কৃষ্ণ মজুমদারের সাথে আমেরিকার নাম্বারে অনেক বার ফোন ও ম্যাসেজ দেয়ার পরও তারা কোন সাড়া দেয়নি।

সন্দ্বীপ থানার হাদীর গো বাড়ী নুরুল হুদার পুত্র শাহাবুদ্দিন। মানব পাচার আর স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত আর তিনি হুন্ডির ব্যবসা করে বলে জানা যায়।

নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর থানার খাসের হাট এলাকার নগেন্দ্র মজুমদারে পুত্র কৃষ্ণ মজুমদার আগে তারা জেলের কাজ করতো। এখন মানব পাচার চক্র শাহাবুদ্দিনের সাথে মিলেমিশে সিন্ডিকেট করে দেহ ব্যবসা মানবপাচার, হুন্ডি ব্যবসা, বিয়ের নামে প্রতারণা ও ভুয়া ভোটার ও পাসপোর্ট বানিয়ে নিত্যনতুন ধান্ধা করা তাদের পেশা ও নেশায় পরিণত হয়েছে। মানব জীবন তাদের নিকট ও তাচ্ছিল্য ব্যাপারে পরিণত হয়েছে।

নোয়াখালী জেলার চর জাব্বার থানার হাজীপুর এলাকার অনিবেশ মজুমদার ও মাতা ভগবতি মজুমদারের কন্যা কনিকা মজুমদার একজন পেশাদার নারী দেহ ব্যবসায়ী ও যৌন কর্মী।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শাহাবুদ্দিন ও কৃষ্ণ মজুমদার চক্র মানব পাচারকারী দেশে ও বিদেশে সক্রিয়

আপডেট সময় ১০:৪২:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪

শাহাবুদ্দিন ও কৃষ্ণ চক্রের খপ্পরে পড়ে গৌরব সাঞ্জারী নামে এক তরুণ আজ সর্বস্ব হারিয়ে পথে পথে। তাকে প্রলোভন দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে নির্যাতন করে ৫০ হাজার ডলার দাবী করে। তা দিতে অস্বীকার করায় তার উপর নির্যাতন চালাতে থাকে আমেরিকার নিউ জার্সির বার্লিন শহরে।

আমেরিকায় ঘুরতে গিয়ে শাহাবউদ্দিন মানব পাচারচক্র ও কণিকা মজুমদার তরুণীর সঙ্গে পরিচয় হয় গৌরব সাঞ্জারী নামে এক তরুণের। বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমে এদের মুখোশ উন্মোচন হওয়ার পরে গৌরবকে হত্যার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ভাড়াটিয়া খুনি দিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে অতর্কিত হামলা চালায়। এজন্য গৌরব স্থানীয় থানায় ও আদলতে অভিযোগ দায়ের করেছে। শাহাবুদ্দিন ও কৃষ্ণ চক্রের প্রবাসী মানব পাচারচক্রের দেহ ব্যবসায়ী শিল্পী কনিকা, রাজীব, বিমল বিভিন্ন সময় আমেরিকা বিভিন্ন নম্বর থেকে হুমকী প্রদান করে। প্রাণে মেরে ফেলার হুমকী প্রদান করে মানব পাচারের শিকার ভিকটিম গৌরব সাঞ্জারীকে।

তিনি তখনো ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি এক ভয়াবহ প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়েছেন। টাকা না দেয়ায় গৌরব সাঞ্জারীকে যুক্তরাষ্ট্রে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেন ও গৌরবের গ্রীণকার্ড ও সকল গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র মানবপাচার চক্র রেখে দেয়। গৌরব সাঞ্জারীকে মামলা তুলে নিতে শাহাব উদ্দিন ও কণিকা মজুমদার চক্রের সদস্যরা অব্যাহত হুমকী প্রদান করে চলেছে বলে জানা যায় এবং মামলা তুলে ফেলারও হুমকী দেয় এবং গৌরবসহ তার পরিবারের সদস্যদেরকে আরো মিথ্যা মামলায় ফাসাবে বলে হুমকী প্রদান করে।

নিউ জার্সির বার্লিন শহরে শাহাব উদ্দিন ও শিল্পী মজুমদার দেহ ব্যবসা করার জন্য বিভিন্ন নরনারীকে ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায় করে। অর্থ দিতে অস্বীকার করলে তাদের স্পর্শকাতর জায়গার ছবি তুলে স্যোশাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেবে বলে হুমকী দেয়। এভাবে তারা গৌরবের শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গার ছবি তুলে রাখে।

বাংলাদেশে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে কনে ফিরে যায় যুক্তরাষ্ট্রে। কিছুদিন পর চট্টগ্রামের তরুণ গৌরবকেও যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়া হয়। এরপরই কনেপক্ষের ফাঁদে আটকা পড়েন তিনি। মারধর আর নির্যাতন করে নেওয়া হয় ২০ হাজার ডলার। এরপর আরও দাবি করা হয় এক কোটি টাকা। স্বল্প আয়ে সংসার চলা গৌরবের পরিবার সেই দাবি মেটাতে পারেননি। আর এ কারণেই মাসের পর মাস বদ্ধ কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতন চালানো হয় গৌরবের ওপর। এমনকি ওই চক্রের সদস্যরা দেশে থাকা গৌরবের বাবা-মাকেও মেরে আহত করে।

জানা যায়, ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ঘুরতে গিয়েছিলেন গৌরব সাঞ্জারী । সেখানে বাঙালি তরুণী পরিচয়ে দেখা হয় কণিকা মজুমদারের সঙ্গে। কথাবার্তা থেকে বিষয়টি প্রেমে গড়ায়। তবে ওই তরুণীর বিরুদ্ধে ছিল বহু অভিযোগ। চুক্তিভিত্তিক বিয়ের নামে বিভিন্ন দেশ থেকে তরুণদের যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়া চক্রে কাজ করত ওই তরুণী।

জানা যায়, কণিকা মজুমদার যুক্তরাষ্ট্রে নানা নামে পরিচিত। কখনো তার নাম কণিকা, কখনো সীমা, কখনো বা সেঁজুতি। তার পরিবারের সদস্যরাও এমন নানা প্রতারণায় জড়িত। কৃষ্ণ মজুমদার, ব্রাজা মজুমদার ও শাহাবুদ্দিন নামধারী এক ব্যক্তি এই প্রতারক চক্রকে নেতৃত্ব দেয়।

নির্যাতনের শিকার গৌরব সাঞ্জারী বলেন, ‘আমেরিকা যাওয়ার পর থেকেই তারা শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন শুরু করে। মারধর করে আমেরিকার ব্যাংক থেকে ৮ হাজার ডলার এবং নগদ প্রায় ৬ হাজার ডলার নিয়ে যায় কণিকা মজুমদার। একপর্যায়ে আরও টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে মারধর করে। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগও বন্ধ করে দেয়। এমনকি গত ২০২২ সালের জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এক মিথ্যা মামলায়ও ফাঁসিয়ে দেয় আমাকে। এরা গৌরবকে বিদেশে শায়েস্তা করতে না পেরে দেশে শায়েস্তা করার মিশন হাতে নিয়েছে, যেকোন উপায়ে গৌরবকে তারা শায়েস্তা করবেই। এজন্য তাকে তারা বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়ে ও হত্যার উদ্দেশ্যে ভাড়াটিয়া খুনী যোগাড় করে রেখেছে। যে কোন সময় তারা গৌরবকে খুন করতে পারে বলে গৌরব আশংকা করছে।

তিনি বলেন, ‘এসব ঘটনা ঘটলেও দেশে থাকা আমার পরিবার কিছুই জানতে পারেনি। কিন্তু কণিকা মজুমদার চক্রের বাংলাদেশে অবস্থানকারী দালালরা যোগাযোগ করে আমার পরিবারের সঙ্গে। তাদের কাছে টাকা দাবি করে, না হলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এমনকি আমার বয়স্ক বাবা-মাকে মারধর করে। ওই চক্রের মারধর এবং অত্যাচারে গুরুতর আহত হন তারা। মারধরের মামলা জজকোর্টে চলমান এবং একজন আসামী প্রণীতা মজুমদার তার দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।

গৌরব অভিযোগ করেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে নির্যাতনের সময় সঞ্জীব মজুমদার ও সুমন মজুমদার আমাকে বলত টাকা না দিয়ে এখান থেকে বের হওয়া যাবে না। এটা আমাদের ব্যবসা। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে আমাকে যাতে ফাঁসানো যায়, এ জন্য দেশে থাকা ওই প্রতারক চক্রের সদস্যরা আমার নামে একটি মিথ্যা মামলা করে, যাতে দেখানো যায় আমি দেশেও অপরাধের সঙ্গে যুক্ত।’ কিন্তু এ মামলার কোন ভিত্তি নেই।

তিনি আরও জানান, ‘শুধু চুক্তিভিত্তিক বিয়ের নামে প্রতারণা নয়, এই চক্রটি শিশুদের দিয়ে পর্নোগ্রাফি তৈরি করে। এমনকি আমাকেও যৌন নির্যাতন করে। জ্ঞান হারানো পর্যন্ত নির্যাতন করত। এ-সংক্রান্ত অনেক তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। এই চক্র বিয়ের নামে প্রতারণা করে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে ভুয়া ভোটার আইডি কার্ড, পাসপোর্ট এবং ভুয়া জন্মনিবন্ধন তৈরি করে।’

জানা গেছে, সংঘবদ্ধ এই চক্রের বাংলাদেশেও একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। যারা মানুষকে যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়ার প্রলোভনে ফেলে। এরপর কৌশলে সে দেশে নিয়ে আটকে রেখে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাঠাতে বাধ্য করে। টাকা দিতে অপারগতা জানালে চলে নির্যাতন। শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে এভাবে লোকজনকে প্রলোভনে ফেলে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে নির্যাতন করা হয়।

গৌরব সাঞ্জারী বলেন, ‘অনেক কষ্টে দেশে ফিরলেও এখনো অতীত ভুলতে পারছি না। এখানেও আমাকে মারার জন্য ওই সিন্ডিকেটের লোকজন খুঁজছে। বেশ কয়েকবার হামলার চেষ্টাও করেছে। দুটি মোবাইল নম্বর থেকে প্রতিনিয়ত দেওয়া হচ্ছে হুমকি-ধমকি। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য শাহাবুদ্দিন ও কৃষ্ণ মজুমদারের সাথে আমেরিকার নাম্বারে অনেক বার ফোন ও ম্যাসেজ দেয়ার পরও তারা কোন সাড়া দেয়নি।

সন্দ্বীপ থানার হাদীর গো বাড়ী নুরুল হুদার পুত্র শাহাবুদ্দিন। মানব পাচার আর স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত আর তিনি হুন্ডির ব্যবসা করে বলে জানা যায়।

নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর থানার খাসের হাট এলাকার নগেন্দ্র মজুমদারে পুত্র কৃষ্ণ মজুমদার আগে তারা জেলের কাজ করতো। এখন মানব পাচার চক্র শাহাবুদ্দিনের সাথে মিলেমিশে সিন্ডিকেট করে দেহ ব্যবসা মানবপাচার, হুন্ডি ব্যবসা, বিয়ের নামে প্রতারণা ও ভুয়া ভোটার ও পাসপোর্ট বানিয়ে নিত্যনতুন ধান্ধা করা তাদের পেশা ও নেশায় পরিণত হয়েছে। মানব জীবন তাদের নিকট ও তাচ্ছিল্য ব্যাপারে পরিণত হয়েছে।

নোয়াখালী জেলার চর জাব্বার থানার হাজীপুর এলাকার অনিবেশ মজুমদার ও মাতা ভগবতি মজুমদারের কন্যা কনিকা মজুমদার একজন পেশাদার নারী দেহ ব্যবসায়ী ও যৌন কর্মী।