ঢাকা ১০:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

চার জেলায় ১৬ মামলা, আসামি বিএনপির ৭ হাজার নেতাকর্মী

পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় চার জেলায় বিএনপির সাত হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করে ১৬টি মামলা করা হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় নোয়াখালীর পাঁচ উপজেলায় ১৩টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক সংসদ-সদস্য ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দীন খোকনসহ ৪ হাজার ৬২০ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

এছাড়া পুলিশ ও আওয়ামী লীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনায় কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিনসহ দেড় হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সংঘর্ষের ঘটনায় বরগুনার পাথরঘাটায় সাবেক সংসদ-সদস্য নুরুল ইসলাম মনিসহ ৪০০ জনকে এবং ফরিদপুরে ৫০০ জনকে আসামি করে হামলা হয়েছে। এসব মামলার পর বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ সম্পর্কে ব্যুরো ও প্রতিনিধির পাঠানো খবর-

নোয়াখালী : পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধা এবং জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অভিযোগে নোয়াখালীর পাঁচ জেলায় ১৩টি মামলা হয়েছে। সুধারাম থানায় তিনটি, বেগমগঞ্জ থানায় দুটি, সোনাইমুড়ী থানায় চারটি, সেনবাগ থানায় দুটি এবং চাটখিল থানায় দুটি মামলা করেছে পুলিশ। এতে কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক সংসদ-সদস্য ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দীন খোকন, জেলা বিএনপি সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হায়দার বিএসসি, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জাকারিয়া, অ্যাডভোকেট আবদুর রহমানসহ বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের ১ হাজার ২২০ জনের নামসহ ৪ হাজার ৬২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এসব মামলা হওয়ার পর হাজার হাজার নেতাকর্মী ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আবার যেসব নেতাকর্মী কোনো মামলার আসামি নন, তারাও গ্রেফতার আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে লুকিয়ে থাকছেন। এরই মধ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিএনপির ১৩৮ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান জানান, আদালত থেকে জামিন নেওয়ার পরও বিএনপি নেতাদের পুলিশ গ্রেফতার করছে। তিনি বলেন, সদর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়াউর রহমান বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়েছেন। অথচ শনিবার নোয়াখালী সুপার মার্কেটের দোকান থেকে তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এছাড়া রোববার রাতে সুধারাম, বেগমগঞ্জ, সেনবাগ ও চাটখিল, সোনাইমুড়ির ৩০-৪০ জন নেতাকর্মীর বাড়িতে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ হানা দিয়েছে। বাড়িতে নেতাকর্মীদের না পেলে তাদের বৃদ্ধ বাবা-মাকে অপমান ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে অপমান করা হচ্ছে।

এদিকে পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অভিযান চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন বলেন, এটা বিএনপির জুজুর ভয়। জামিনপ্রাপ্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি জানিয়ে সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম জানান, গ্রেফতার জিয়াউর একটি মামলায় জামিন নিয়েছেন। কিন্তু একই দিন করা আরেকটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ : পাকুন্দিয়ায় বিএনপির সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনায় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন এবং যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিনসহ দেড় হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ। শনিবার বিএনপির সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে পাকুন্দিয়া উপজেলা সদর এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় ১০০ নেতাকর্মী পুলিশের গুলিতে অথবা লাঠিচার্জে গুরুতর আহত হয়। শনিবার রাতে পাকুন্দিয়া থানার উপপরিদর্শক শাহ কামাল মামলাটি করেন। এরই মধ্যে ২৪ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের রোববার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পাকুন্দিয়ায় ত্রিমুখী সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ মজিবুরকে দেখতে এসেছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। শনিবার পাকুন্দিয়া উপজেলায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলায় মাইজহাটি গ্রামের মজিবুর আহত হন। তাকে দেখতে আসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম।

এদিকে সোমবার বাজিতপুর উপজেলার সরারচর শিবনাথ উচ্চবিদ্যালয় এলাকায় জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে বিএনপি। তবে পথে পথে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা করে ও বাধা দেয়। বাজিতপুর উপজেলা বিএনপি সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল বলেন, আওয়ামী লীগের হামলায় পৌর ও ইউনিয়ন বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। অনেক গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে। তিনি বলেন, গুলি করে এবং হত্যার ভয় দেখিয়ে রাজপথ থেকে বিএনপিকে আর সরানো যাবে না। পথে পথে হামলার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

বরগুনা : পাথরঘাটায় রোববার আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য ও বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম মনি ও তার ভাই সাইফুল ইসলাম জামাল, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ ফারুক, বিএনপি নেতা সেলিম পহলান, আবুল হোসেনসহ ৪০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আলাউদ্দিন পল্টুর করা মামলায় ৯৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ফায়জুল মালেক সজিব, পাথরঘাটা পৌর ছাত্রদলের সদস্যসচিব খায়রুল ইসলাম শরীফ, রায়হানপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তসলিম হোসেন, ছাত্রদলকর্মী হাসিব ও শাওনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রোববার পাথরঘাটার রায়হানপুরে বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম মনির গাড়িবহর ও নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা করেছে বলে বিএনপির অভিযোগ। সোমবার ডাকা সমাবেশে যোগ দিতে মনি পাথরঘাটায় আসার পথে এ ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ৫০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুরসহ দুটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। রোববার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে সমাবেশ স্থগিত করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম ফারুক মোল্লা জানান, নুরুল ইসলাম মনি বরগুনা-২ আসনে তিনবার জিতেছেন। সোমবার দলীয় কর্মসূচিতে তার যোগ দেওয়ার কথা ছিল।

পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাবির হোসেন বলেন, বিএনপির নৈরাজ্যের প্রতিবাদে সোমবার উপজেলা আওয়ামী লীগ বিক্ষোভ সমাবেশ ডেকেছিল। রোববার বিকলে ছাত্রলীগ নেতারা উপজেলার রায়হানপুর এলাকায় নেতাকর্মীদের দাওয়াত দিতে গেলে বিএনপি তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আটজন কর্মী আহত হয়েছেন। এ বিষয়ে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম তারেক রহমান জানান, পাথরঘাটায় হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় ৯৯ জনকে এজাহারভুক্ত এবং আরও ৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

ফরিদপুর : বিএনপির সমাবেশে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের হামলার ঘটনায় কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামসহ ৩১ জনের নামসহ ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। সোমবার ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদ ফকির মামলাটি করেন। মামলার এজাহারে পাঁচ পুলিশ সদস্যের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল দৈনিক আমাদের মাতৃভূমি কে বলেন, বিএনপির সমাবেশ উপলক্ষ্যে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ইমরান খানের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে বড় অভিযান চালানোর শঙ্কা

চার জেলায় ১৬ মামলা, আসামি বিএনপির ৭ হাজার নেতাকর্মী

আপডেট সময় ০৫:৪৩:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় চার জেলায় বিএনপির সাত হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করে ১৬টি মামলা করা হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় নোয়াখালীর পাঁচ উপজেলায় ১৩টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক সংসদ-সদস্য ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দীন খোকনসহ ৪ হাজার ৬২০ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

এছাড়া পুলিশ ও আওয়ামী লীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনায় কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিনসহ দেড় হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সংঘর্ষের ঘটনায় বরগুনার পাথরঘাটায় সাবেক সংসদ-সদস্য নুরুল ইসলাম মনিসহ ৪০০ জনকে এবং ফরিদপুরে ৫০০ জনকে আসামি করে হামলা হয়েছে। এসব মামলার পর বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ সম্পর্কে ব্যুরো ও প্রতিনিধির পাঠানো খবর-

নোয়াখালী : পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধা এবং জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অভিযোগে নোয়াখালীর পাঁচ জেলায় ১৩টি মামলা হয়েছে। সুধারাম থানায় তিনটি, বেগমগঞ্জ থানায় দুটি, সোনাইমুড়ী থানায় চারটি, সেনবাগ থানায় দুটি এবং চাটখিল থানায় দুটি মামলা করেছে পুলিশ। এতে কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক সংসদ-সদস্য ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দীন খোকন, জেলা বিএনপি সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হায়দার বিএসসি, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জাকারিয়া, অ্যাডভোকেট আবদুর রহমানসহ বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের ১ হাজার ২২০ জনের নামসহ ৪ হাজার ৬২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এসব মামলা হওয়ার পর হাজার হাজার নেতাকর্মী ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আবার যেসব নেতাকর্মী কোনো মামলার আসামি নন, তারাও গ্রেফতার আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে লুকিয়ে থাকছেন। এরই মধ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিএনপির ১৩৮ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান জানান, আদালত থেকে জামিন নেওয়ার পরও বিএনপি নেতাদের পুলিশ গ্রেফতার করছে। তিনি বলেন, সদর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়াউর রহমান বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়েছেন। অথচ শনিবার নোয়াখালী সুপার মার্কেটের দোকান থেকে তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এছাড়া রোববার রাতে সুধারাম, বেগমগঞ্জ, সেনবাগ ও চাটখিল, সোনাইমুড়ির ৩০-৪০ জন নেতাকর্মীর বাড়িতে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ হানা দিয়েছে। বাড়িতে নেতাকর্মীদের না পেলে তাদের বৃদ্ধ বাবা-মাকে অপমান ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে অপমান করা হচ্ছে।

এদিকে পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অভিযান চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন বলেন, এটা বিএনপির জুজুর ভয়। জামিনপ্রাপ্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি জানিয়ে সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম জানান, গ্রেফতার জিয়াউর একটি মামলায় জামিন নিয়েছেন। কিন্তু একই দিন করা আরেকটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ : পাকুন্দিয়ায় বিএনপির সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনায় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন এবং যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিনসহ দেড় হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ। শনিবার বিএনপির সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে পাকুন্দিয়া উপজেলা সদর এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় ১০০ নেতাকর্মী পুলিশের গুলিতে অথবা লাঠিচার্জে গুরুতর আহত হয়। শনিবার রাতে পাকুন্দিয়া থানার উপপরিদর্শক শাহ কামাল মামলাটি করেন। এরই মধ্যে ২৪ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের রোববার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পাকুন্দিয়ায় ত্রিমুখী সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ মজিবুরকে দেখতে এসেছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। শনিবার পাকুন্দিয়া উপজেলায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলায় মাইজহাটি গ্রামের মজিবুর আহত হন। তাকে দেখতে আসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম।

এদিকে সোমবার বাজিতপুর উপজেলার সরারচর শিবনাথ উচ্চবিদ্যালয় এলাকায় জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে বিএনপি। তবে পথে পথে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা করে ও বাধা দেয়। বাজিতপুর উপজেলা বিএনপি সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল বলেন, আওয়ামী লীগের হামলায় পৌর ও ইউনিয়ন বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। অনেক গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে। তিনি বলেন, গুলি করে এবং হত্যার ভয় দেখিয়ে রাজপথ থেকে বিএনপিকে আর সরানো যাবে না। পথে পথে হামলার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

বরগুনা : পাথরঘাটায় রোববার আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য ও বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম মনি ও তার ভাই সাইফুল ইসলাম জামাল, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ ফারুক, বিএনপি নেতা সেলিম পহলান, আবুল হোসেনসহ ৪০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আলাউদ্দিন পল্টুর করা মামলায় ৯৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ফায়জুল মালেক সজিব, পাথরঘাটা পৌর ছাত্রদলের সদস্যসচিব খায়রুল ইসলাম শরীফ, রায়হানপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তসলিম হোসেন, ছাত্রদলকর্মী হাসিব ও শাওনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রোববার পাথরঘাটার রায়হানপুরে বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম মনির গাড়িবহর ও নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা করেছে বলে বিএনপির অভিযোগ। সোমবার ডাকা সমাবেশে যোগ দিতে মনি পাথরঘাটায় আসার পথে এ ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ৫০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুরসহ দুটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। রোববার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে সমাবেশ স্থগিত করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম ফারুক মোল্লা জানান, নুরুল ইসলাম মনি বরগুনা-২ আসনে তিনবার জিতেছেন। সোমবার দলীয় কর্মসূচিতে তার যোগ দেওয়ার কথা ছিল।

পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাবির হোসেন বলেন, বিএনপির নৈরাজ্যের প্রতিবাদে সোমবার উপজেলা আওয়ামী লীগ বিক্ষোভ সমাবেশ ডেকেছিল। রোববার বিকলে ছাত্রলীগ নেতারা উপজেলার রায়হানপুর এলাকায় নেতাকর্মীদের দাওয়াত দিতে গেলে বিএনপি তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আটজন কর্মী আহত হয়েছেন। এ বিষয়ে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম তারেক রহমান জানান, পাথরঘাটায় হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় ৯৯ জনকে এজাহারভুক্ত এবং আরও ৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

ফরিদপুর : বিএনপির সমাবেশে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের হামলার ঘটনায় কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামসহ ৩১ জনের নামসহ ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। সোমবার ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদ ফকির মামলাটি করেন। মামলার এজাহারে পাঁচ পুলিশ সদস্যের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল দৈনিক আমাদের মাতৃভূমি কে বলেন, বিএনপির সমাবেশ উপলক্ষ্যে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে।