ঢাকা ০১:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মিয়ানমারের সঙ্গে হওয়া চুক্তিতে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি না থাকা বড় ভুল পটুয়াখালীতে ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিশাল জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত শহীদ জিয়া স্মৃতি পদক পেলেন জাতীয়তাবাদী বিএনপির রাজশাহী জেলার সদস্য সচিব গণতন্ত্রের স্বার্থেই নির্বাচন জরুরি : যুবদল সভাপতি মোনায়েম মুন্না তাঁতীলীগের সভাপতি ইকবালের যত কান্ড, জনমনে প্রশ্ন কে এই ইকবাল? সিএমপির পাহাড়তলী থানার মাদক বিরোধী অভিযানে ভুয়া সাংবাদিক ফারুক মাদকসহ গ্রেফতার অন্তর্বতী সরকারের ১শ দিন পার হলেও সচিবালয় সহ বিভিন্ন দপ্তরের এখনও আওয়ামী লীগের দোসরা বহাল পূর্বাচলে দুর্নীতির রাজত্ব গড়েছেন নায়েব আলী শরীফ ডঃ মোশাররফ ফাউন্ডেশন কলেজ নবীনবরণ উৎসব ২০২৪ পালিত। মুগদায় ১০ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেফতার

খালেদা জিয়া ফের হাসপাতালে

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আবারও রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। শারীরিক কিছু জটিলতার কারণে বুধবার রাতে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে আছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত ৯টা) তার শারীরিক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছিল।

খালেদা জিয়ার ব্যাক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার অংশ হিসেবে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) বাসায় ফিরবেন নাকি তাঁকে হাসপাতালে থাকতে হবে, এ ব্যাপারে মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে।

এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে গুলশানের বাসা থেকে রওনা দেন খালেদা জিয়া। রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাসপাতালে পৌঁছান। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, এভার কেয়ার হাসপাতালে নেওয়ার পর খালেদা জিয়ার ফুসফুসের পানি অপসারণও করা হয়।

এদিকে, দলীয় প্রধানের হাসপাতালে যাওয়ার খবরে বিএনপি ও অঙ্গ- সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বাসা ও হাসপাতাল এলাকায় ভিড় করেন। হাসপাতালে যাওয়ার পথে নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের সঙ্গে থেকে তার মুক্তি চেয়ে নানা স্লোগাণ দেন। এ সময় নেতাদের মধ্যে ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা মহাগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির প্রমুখ।

এর আগে গত ৮ ফেব্র“য়ারি নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর ফুসফুসের পানি অপসারণের পর এক্স-রে, ইসিজি, আল্ট্রসনোগ্রাফিসহ কিছু পরীক্ষা করানো হয়। পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে মেডিকেল বোর্ড তাকে বাসায় যাওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর ওইদিনই রাতে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন। বাসায় থেকেই তার চিকিৎসা চলছিল।

গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়। গত ৯ আগস্ট শারীরিক অসুস্থতার কারণে আবারও খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পাঁচ মাসেরও বেশি সময় চিকিৎসা শেষে গত ১১ জানুয়ারি গুলশানে ভাড়া বাসা ফিরোজায় ফেরেন খালেদা জিয়া।

উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে তার পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও অনুমতি পাওয়া যায়নি। এমন পরিপ্রেক্ষিতে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে তার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তার স্বাস্থ্য কিছুটা স্থিতিশীল হলে সে দফায় পাঁচ মাসের বেশি সময় পর তাকে বাসায় নেওয়া হয়।

খালেদা জিয়া হার্টের সমস্যা, লিভারসিরোসিস ছাড়াও নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতা রয়েছে তার। কারাগার থেকে বেরোনোর পর চিকিৎসার জন্য কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন তিনি।

দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্র“য়ারি কারাগারে নেওয়া হয়। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দী ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়। তখন থেকে ছয় মাস পরপর তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মিয়ানমারের সঙ্গে হওয়া চুক্তিতে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি না থাকা বড় ভুল

খালেদা জিয়া ফের হাসপাতালে

আপডেট সময় ১২:৩৭:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আবারও রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। শারীরিক কিছু জটিলতার কারণে বুধবার রাতে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে আছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত ৯টা) তার শারীরিক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছিল।

খালেদা জিয়ার ব্যাক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার অংশ হিসেবে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) বাসায় ফিরবেন নাকি তাঁকে হাসপাতালে থাকতে হবে, এ ব্যাপারে মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে।

এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে গুলশানের বাসা থেকে রওনা দেন খালেদা জিয়া। রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাসপাতালে পৌঁছান। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, এভার কেয়ার হাসপাতালে নেওয়ার পর খালেদা জিয়ার ফুসফুসের পানি অপসারণও করা হয়।

এদিকে, দলীয় প্রধানের হাসপাতালে যাওয়ার খবরে বিএনপি ও অঙ্গ- সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বাসা ও হাসপাতাল এলাকায় ভিড় করেন। হাসপাতালে যাওয়ার পথে নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের সঙ্গে থেকে তার মুক্তি চেয়ে নানা স্লোগাণ দেন। এ সময় নেতাদের মধ্যে ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা মহাগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির প্রমুখ।

এর আগে গত ৮ ফেব্র“য়ারি নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর ফুসফুসের পানি অপসারণের পর এক্স-রে, ইসিজি, আল্ট্রসনোগ্রাফিসহ কিছু পরীক্ষা করানো হয়। পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে মেডিকেল বোর্ড তাকে বাসায় যাওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর ওইদিনই রাতে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন। বাসায় থেকেই তার চিকিৎসা চলছিল।

গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়। গত ৯ আগস্ট শারীরিক অসুস্থতার কারণে আবারও খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পাঁচ মাসেরও বেশি সময় চিকিৎসা শেষে গত ১১ জানুয়ারি গুলশানে ভাড়া বাসা ফিরোজায় ফেরেন খালেদা জিয়া।

উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে তার পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও অনুমতি পাওয়া যায়নি। এমন পরিপ্রেক্ষিতে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে তার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তার স্বাস্থ্য কিছুটা স্থিতিশীল হলে সে দফায় পাঁচ মাসের বেশি সময় পর তাকে বাসায় নেওয়া হয়।

খালেদা জিয়া হার্টের সমস্যা, লিভারসিরোসিস ছাড়াও নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতা রয়েছে তার। কারাগার থেকে বেরোনোর পর চিকিৎসার জন্য কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন তিনি।

দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্র“য়ারি কারাগারে নেওয়া হয়। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দী ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়। তখন থেকে ছয় মাস পরপর তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।