ঢাকা: বাংলাদেশে নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে উল্লেখ করে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে রিপোর্ট পেশ করেছে সরকার। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘন করলে তাদের বিষয়েও পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউ (ইউপিআর) ওয়ার্কিং গ্রুপের নিকট বাংলাদেশ রিপোর্ট পেশ করেছে। রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, দুর্নীতি দমন প্রতিরোধে ২০০৭ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইন সংশোধন করা হয়েছে। এর ফলে দুদক জেলা পর্যায়ের অফিসের মাধ্যমে নিজেই দুর্নীতির মামলা দায়ের করতে পারে। এতে দুর্নীতি দমন কমিশন আগের চেয়ে বেশি স্বাধীনতা লাভ করছে।
এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোন সদস্য আইন ভঙ্গ করে শক্তি প্রয়োগ করলে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়। ২০১৫ সাল থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ১৭০০ সদস্যের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ৮ হাজার ৫০০ পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের অপব্যবহার রোধ করতে এই আইনের কিছু ধারা সংশোধন করে নতুন সাইবার সিকিউরিটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।
জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউ (ইউপিআর) ওয়ার্কিং গ্রুপ আগামীকাল সোমবার ( ১৩ নভেম্বর ) বাংলাদেশের মানবাধিকার রেকর্ড পর্যালোচনা করবে।
জেনেভায় চতুর্থবারের মতো এই বৈঠকে বাংলাদেশের মানবাধিকার ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে। এবারের বৈঠকে বাংলাদেশের গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, হেফাজতে মৃত্যু,
বিরোধী রাজনৈতিক কর্মী ও বিক্ষোভকারীদের নির্বিচারে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আলোচনা উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া জাতিসংঘের সনদ অনুসারে শ্রম অধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, লিঙ্গ সমতা এবং মানব পাচারের বিষয়গুলোও স্থান পাবে।
জেনেভায় ইউপিআর রিভিউ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক গত ৬ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে। এই বৈঠক আগামী ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অংশ নেবেন আইন মন্ত্রী আনিসুল হক ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
এবারের ইউপিআর ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে ১৪ দেশের মানবাধিকার পর্যালোচনা করা হবে, এর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এর আগে বাংলাদেশের প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ইউপিআর পর্যালোচনা হয়েছিল যথাক্রমে ২০০৯, ২০১৩ ও ২০১৮ সালে। মানবাধিকার কাউন্সিলের ৪৭টি দেশ ইউপিআর ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য। তবে
জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য দেশের প্রত্যেকেই এই পর্যালোচনায় অংশ নিতে পারে।