ভারতকে কাঁপিয়েই দিয়েছিলেন লিটন দাস। তবে এরপরও বাংলাদেশের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়েনি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে জয়টা রয়ে গেছে অধরাই। তবে লিটন হাল ছাড়েননি, এবার হুঙ্কার ছেড়ে বললেন, পাকিস্তান ম্যাচেও একই চেষ্টা থাকবে সবার।
বুধবার ভারতকে পেয়ে শুরু থেকেই ভিন্ন এক মেজাজে দেখা যায় লিটনকে। প্রিয় পজিশন ওপেনিংয়ে নেমে সেই সহজাত ব্যাটিং, চার ছক্কার ফোয়ারা। তাকে আটকাতে কত কী যে করলেন রোহিত শর্মা। বোলিংয়ে একের পর এক পরিবর্তন। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। বাংলাদেশের এই ওপেনার উড়লেন। তাণ্ডব চালালেন। ঝড় বইয়ে দেন অ্যাডিলেড ওভালে। ভারতের কোনো বোলারই যেন আটকাতে পারছিলেন না তাকে। সেই অপ্রতিরোধ্য লিটনের ঝড়ে বাঁধ সাধল বৃষ্টি। তারপরই তার ইনিংস শেষ হলো এক রানআউটে। এরপর বাংলাদেশ লড়েছে, তবে শেষ হাসিটা হেসেছে ভারতই, সব সময়ের মতো। ডাকওয়ার্থ লুইস স্টার্ন পদ্ধতিতে ৫ রানে হারের বিষাদ সঙ্গী হয় বাংলাদেশের।
এমন লড়াইয়ের পরেও জয় আসেনি, তাতে আফসোস যে হচ্ছে লিটনের, তা বলাই বাহুল্য। তবে এই লড়াইটা শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষেও চালিয়ে যাবেন, হুঙ্কার দিলেন বাংলাদেশ ওপেনার। টুইটারে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে তিনি জানালেন এই কথা। লিখলেন, ‘জয়ের খুব কাছে এসেও আমরা হেরেছি। পরের ম্যাচেও চেষ্টার কমতি থাকবে না।’ভারতের কাছে হারের ফলে সমীকরণটা কঠিনই হয়ে গেছে বাংলাদেশের। শেষ ম্যাচে যদি পাকিস্তানকে হারাতেও পারে, তাহলেও নিশ্চিত হবে না সাকিবদের সেমিফাইনালে খেলা। তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য সব ম্যাচের দিকে।
গত রাতের এই ম্যাচের শেষে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় গ্রুপের শীর্ষে উঠে গেছে ভারত। চার ম্যাচ শেষে দলটির জয় তিনটি, ছয় পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের চূড়ায় আছে দলটি। দক্ষিণ আফ্রিকা আছে দুইয়ে, তাদের পয়েন্ট ৫। ৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে বাংলাদেশ, ৩ পয়েন্ট নিয়ে এর পরের অবস্থানটা জিম্বাবুয়ের। সবশেষ ম্যাচে জয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে পাকিস্তান আছে তালিকার পাঁচে, যদিও বাবর আজমদের হাতে আছে আরও দুই ম্যাচ। সমান পয়েন্ট নিয়েও নেট রান রেটে পিছিয়ে নেদারল্যান্ডস আছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে।
এই অবস্থান থেকে শীর্ষ দুই নিশ্চিত করে সেমিফাইনালে খেলতে হলে বাংলাদেশের পক্ষে মিলে যেতে হবে অনেক সমীকরণ। শীর্ষে থাকা ভারত যদি শেষ ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হেরে যায় দুই-তিন ওভার বাকি থাকতে কিংবা ১৫-২০ রানে, আর বাংলাদেশ যদি তার চেয়েও বেশি ব্যবধানে হারায় পাকিস্তানকে, তাহলে অন্য আর কোনো ম্যাচের হিসেব ছাড়াই শেষ চারে চলে যাবে বাংলাদেশ, কপাল পুড়বে ভারতের।
দক্ষিণ আফ্রিকার দুর্ভাগ্যের সুযোগও নিতে পারে বাংলাদেশ। প্রোটিয়ারা যদি নিজেদের শেষ দুই ম্যাচেই হারে, তাহলে পাকিস্তানকে হারালেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাবে দলের। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা নিজেদের শেষ দুই ম্যাচ খেলবে পাকিস্তান আর নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। যদিও নিজেদের মান ধরে রেখে খেলতে পারলে ভারতের জিম্বাবুয়ের কাছে হারার কথা নয়, নেদারল্যান্ডসও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে পারার কথা নয়! সে কারণেই বলা যায়, কাগজে কলমে হিসাবটা টিকে থাকলেও আসলে সুযোগটা হারিয়েই বসেছে বাংলাদেশ।