ঢাকা ০১:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সকলে একসাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব: ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি শরীয়তপুরে ছেলের গাছের গোড়ার আঘাতে বাবা নিহত সেই ছেলে গ্রেফতার। ঢাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি কে এই সাদিক শিগগিরই ঢাবি শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা: শিবির সভাপতি চট্টগ্রাম নগর যুবদলের কমিটি বিলুপ্ত, ২ নেতা বহিষ্কার সরকার পতনের পর এই প্রথম মুখ খুললেন সাদ্দাম-ইনান কিস্তির টাকা দিতে না পারায় গরু ছিনিয়ে নিয়ে গেলেন এনজিও মাঠকর্মীরা রংপুরের মিঠাপুকুরে সড়ক দুর্ঘটনায় দুজন নিহত ভোলায় শহীদ পরিবারদের কোটি টাকার সহায়তা দিল- জামায়াতে ইসলাম জাতিসংঘের ৭৯তম অধিবেশন যোগ দিতে নিউইয়র্কে দৈনিক তরুণ কণ্ঠ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শান্ত

কক্সবাজার রেলপথে ট্রেনের প্রথম হুইসেল

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনের উদ্দেশে ট্রেনের প্রথম হুইসেল বেজেছে। এর মাধ্যমে কক্সবাজারের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ হতে চলেছে।

হুইসেল শুনে অনেকে দৌড়ে এসেছেন, সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ এ রুটে ট্রেন দেখে অবাক হয়েছেন। হুইসেলের শব্দে বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা গেছে শিশু-কিশোরদের।
রোববার (৫ নভেম্বর) সকাল ৯টা ২ মিনিটে একটি লোকমোটিভসহ ৮টি কোচের পরীক্ষামূলক ট্রেন লম্বা হুইসেল দিয়ে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ছাড়ে। আর এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের সঙ্গে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুক্ত হলো রেলপথে। এতে আনন্দিত এই অঞ্চলের মানুষ।

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব হচ্ছে ১৫০ কিলোমিটার। দোহাজারী থেকে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, রামু হয়ে পাহাড় ও নদীপথ দিয়ে পর্যটননগর কক্সবাজার পর্যন্ত এই রেললাইন চলে গেছে। এই পথে আছে ৯টি রেলওয়ে স্টেশন, চারটি বড় ও ৪৭টি ছোট সেতু, ১৪৯টি বক্স কালভার্ট এবং ৫২টি রাউন্ড কালভার্ট।

রোববার সকাল ১০টায় ট্রেনটি দোহাজারী স্টেশনে পৌঁছায়। এরপর সেখান থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দেয়। ট্রেনটি বিকেল সাড়ে ৫টায় কক্সবাজার পৌঁছার কথা রয়েছে। রেলওয়ে সূত্র জানায়, রেলের পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কক্সবাজারে অবস্থান করবেন। ৬ নভেম্বর ওই টিম কক্সবাজার রেলস্টেশন ইয়ার্ড পরিদর্শন করবে। ৭ নভেম্বর সকাল ৭টায় তারা চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেবেন।

পরীক্ষামূলক যাত্রার প্রথম এই ট্রেনটি চালাচ্ছেন লোকোমাস্টার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান এবং সহকারী লোকোমাস্টার রুখন মিয়া। ট্রেনে একাধিক গার্ড, রেলওয়ে পুলিশ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য (আরএনবি), রেল ট্র্যাক সংক্রান্ত রেলকর্মী, প্রকৌশল, বাণিজ্যিক ও পরিবহন বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা রয়েছেন।

ট্রেনে জিআইবিআর রুহুল কাদের আজাদ, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. নাজমুল ইসলাম, দোহাজারি-কক্সবাজার রেলপথ প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ সহ পূর্ব রেলের শীর্ষ কর্মকর্তারা রয়েছেন।

জিআইবিআর স্পেশাল ট্রেনে করে সরকারি রেল পরিদর্শক (জিআইবিআর) দোহাজারি-কক্সবাজার রেলপথ প্রকল্পের কারিগরি তদারকি করছেন। ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটি উদ্বোধন করবেন।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, নিয়ম হলো নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হলে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা। আজ ট্রেনটির ট্রায়াল রান না হলেও কক্সবাজারে যাওয়া প্রথম ট্রেন। রেলপথ পরিদর্শন অধিদপ্তরের পরিদর্শকের অনুমোদন ছাড়া প্রকল্প উদ্বোধনের কোনও সুযোগ নেই।

এর আগে শনিবার ৯২ বছরের পুরোনো কালুরঘাট সেতুতে ২২০০, ২৯০০ ও ৩০০০ সিরিজের তিনটি ইঞ্জিনের ট্রায়াল সম্পন্ন করে রেলের প্রকৌশল বিভাগ। চলতি সপ্তাহে আনুষ্ঠানিক ট্রায়াল রান (পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল) শেষে বহুল প্রতীক্ষিত রেলপথটি উদ্বোধন করা হবে।

দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প ২০১০ সালের ৬ জুলাই একনেকে অনুমোদন পায়। ২০১৮ সালে এই রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ৩০ জুন। পরে এক দফা বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ করা হয় ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। এতে ব্যয় ধরা হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। প্রকল্পে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। তবে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও ব্যয় বাড়েনি। এ প্রকল্পের কাজ পুরোদমে চলায় নির্ধারিত সময়ের আগেই তা সমাপ্ত হতে যাচ্ছে।

২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল প্রকল্পটি ‘ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। রেলপথটি নির্মিত হলে মিয়ানমার, চীনসহ ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের করিডোরে যুক্ত হবে বাংলাদেশ।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সকলে একসাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব: ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি

কক্সবাজার রেলপথে ট্রেনের প্রথম হুইসেল

আপডেট সময় ১২:১৬:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ নভেম্বর ২০২৩

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনের উদ্দেশে ট্রেনের প্রথম হুইসেল বেজেছে। এর মাধ্যমে কক্সবাজারের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ হতে চলেছে।

হুইসেল শুনে অনেকে দৌড়ে এসেছেন, সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ এ রুটে ট্রেন দেখে অবাক হয়েছেন। হুইসেলের শব্দে বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা গেছে শিশু-কিশোরদের।
রোববার (৫ নভেম্বর) সকাল ৯টা ২ মিনিটে একটি লোকমোটিভসহ ৮টি কোচের পরীক্ষামূলক ট্রেন লম্বা হুইসেল দিয়ে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ছাড়ে। আর এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের সঙ্গে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুক্ত হলো রেলপথে। এতে আনন্দিত এই অঞ্চলের মানুষ।

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব হচ্ছে ১৫০ কিলোমিটার। দোহাজারী থেকে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, রামু হয়ে পাহাড় ও নদীপথ দিয়ে পর্যটননগর কক্সবাজার পর্যন্ত এই রেললাইন চলে গেছে। এই পথে আছে ৯টি রেলওয়ে স্টেশন, চারটি বড় ও ৪৭টি ছোট সেতু, ১৪৯টি বক্স কালভার্ট এবং ৫২টি রাউন্ড কালভার্ট।

রোববার সকাল ১০টায় ট্রেনটি দোহাজারী স্টেশনে পৌঁছায়। এরপর সেখান থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দেয়। ট্রেনটি বিকেল সাড়ে ৫টায় কক্সবাজার পৌঁছার কথা রয়েছে। রেলওয়ে সূত্র জানায়, রেলের পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কক্সবাজারে অবস্থান করবেন। ৬ নভেম্বর ওই টিম কক্সবাজার রেলস্টেশন ইয়ার্ড পরিদর্শন করবে। ৭ নভেম্বর সকাল ৭টায় তারা চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেবেন।

পরীক্ষামূলক যাত্রার প্রথম এই ট্রেনটি চালাচ্ছেন লোকোমাস্টার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান এবং সহকারী লোকোমাস্টার রুখন মিয়া। ট্রেনে একাধিক গার্ড, রেলওয়ে পুলিশ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য (আরএনবি), রেল ট্র্যাক সংক্রান্ত রেলকর্মী, প্রকৌশল, বাণিজ্যিক ও পরিবহন বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা রয়েছেন।

ট্রেনে জিআইবিআর রুহুল কাদের আজাদ, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. নাজমুল ইসলাম, দোহাজারি-কক্সবাজার রেলপথ প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ সহ পূর্ব রেলের শীর্ষ কর্মকর্তারা রয়েছেন।

জিআইবিআর স্পেশাল ট্রেনে করে সরকারি রেল পরিদর্শক (জিআইবিআর) দোহাজারি-কক্সবাজার রেলপথ প্রকল্পের কারিগরি তদারকি করছেন। ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটি উদ্বোধন করবেন।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, নিয়ম হলো নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হলে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা। আজ ট্রেনটির ট্রায়াল রান না হলেও কক্সবাজারে যাওয়া প্রথম ট্রেন। রেলপথ পরিদর্শন অধিদপ্তরের পরিদর্শকের অনুমোদন ছাড়া প্রকল্প উদ্বোধনের কোনও সুযোগ নেই।

এর আগে শনিবার ৯২ বছরের পুরোনো কালুরঘাট সেতুতে ২২০০, ২৯০০ ও ৩০০০ সিরিজের তিনটি ইঞ্জিনের ট্রায়াল সম্পন্ন করে রেলের প্রকৌশল বিভাগ। চলতি সপ্তাহে আনুষ্ঠানিক ট্রায়াল রান (পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল) শেষে বহুল প্রতীক্ষিত রেলপথটি উদ্বোধন করা হবে।

দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প ২০১০ সালের ৬ জুলাই একনেকে অনুমোদন পায়। ২০১৮ সালে এই রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ৩০ জুন। পরে এক দফা বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ করা হয় ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। এতে ব্যয় ধরা হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। প্রকল্পে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। তবে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও ব্যয় বাড়েনি। এ প্রকল্পের কাজ পুরোদমে চলায় নির্ধারিত সময়ের আগেই তা সমাপ্ত হতে যাচ্ছে।

২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল প্রকল্পটি ‘ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। রেলপথটি নির্মিত হলে মিয়ানমার, চীনসহ ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের করিডোরে যুক্ত হবে বাংলাদেশ।