ঢাকা ০২:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসাসহ সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে বগুড়ায় জাতীয় শিক্ষক ফোরামের মানবন্ধন

আজ ৫ আগস্ট শনিবার বিকেল ৪ টায় দেশব্যাপী জাতীয় শিক্ষক ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষিত মানববন্ধন কর্মসূচির অংশ হিসেবে বগুড়া জেলা শাখা আয়োজিত মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয় ।

প্রধান অতিথির হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শিক্ষক ফোরাম এর সেক্রেটারী জেনারেল প্রভাষক আব্দুস সবুর । তিনি তার বক্তব্যে বলেছেন, “শিক্ষকরা জাতি গড়ার কারিগর। আদর্শ সমাজ, আদর্শ প্রজন্ম গড়তে শিক্ষকদের ভূমিকা অতুলনীয় অথচ শিক্ষকরাই আজ অবহেলিত।সামাজিক এবং অর্থনৈতিকভাবে বৈষম্যের শিকার। বিদ্যমান শিক্ষাব্যবস্থার মাঝে বৈষম্য বজায় রেখে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। বৈষম্য দূর করতে হলে সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ করা সময়ের দাবী।”

জেলা সভাপতি মাওলানা আলতাফ আলীর সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারী প্রভাষক মু. শাহজাহান তালুকদার এর পরিচালনায় বগুড়া প্রেসক্লাব চত্ত্বরে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসাসহ সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ,শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলককরণ এবং মাদরাসা শিক্ষার স্বকীয়তা বজায় রাখার দাবীতে আয়োজিত মানববন্ধনে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম বগুড়া জেলা শাখার উপদেষ্টা সহ-সুপার মাওলানা আ ন ম মামুনুর রশিদ বলেন, “জাতীয় শিক্ষক ফোরাম শুধু মাধ্যমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ চায় তাই নয় বরং মাদরাসা শিক্ষা ধারায় ইবতেদায়ী থেকে কামিল পর্যন্ত এবং জেনারেল শিক্ষা ধারায় মাধ্যমিক থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত সকল বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জাতীয়করণ চায়।” এ লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছে।

ইবতেদায়ী মাদরাসা প্রসঙ্গে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম বগুড়া জেলা শাখার উপদেষ্টা প্রভাষক শফিকুল ইসলাম বলেন,”ইবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলো আজ চরমভাবে অবহেলিত। মাদ্রাসাগুলো অবকাঠামোগত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং সরকারের অভ্যন্তরে থাকা একটি মহলের অনীহার কারণে ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন বৈষ্যম্যের শিকার। জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০,ইবতেদায়ী মাদরাসা নীতিমালা-২০১৮,ক্ষমতাসীন সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার-২০১৮,বাংলাদেশের সংবিধান প্রদত্ত অধিকার এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশনএর নির্দেশনা এসব কোনো কিছুই ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষার ভাগ্য বদলাতে পারেনি।প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী ৮৯৫৬টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা থাকলেও নানা শর্তের বেড়াজালে পতিত হয়ে মাত্র ১৫১৯ টি মাদ্রাসা সরকারি অনুদান প্রাপ্ত হয়েছে। স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতন ভাতা প্রদানে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির পরেও প্রায় ৯ প্রতিষ্ঠানের ৪৫ হাজার শিক্ষক কর্মচারী বিনা বেতনে পাঠদান করছে অথচ তাদেরকে কোন বেতন ভাতা দেওয়া হচ্ছে না । কাদের ইশারায় আজকে ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষকরা মানবেতর জীবনযাপন করছে তার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন । আজকের এই মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে দেশের সকল স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসাসহ বেসরকারি এমপিও ভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের জোর দাবি জানাচ্ছি। সেই সাথে কমপক্ষে ৩০ হাজার স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।”

বক্তৃতায় আরও বলেন, “সরকার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আশ্বস্ত করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফেরত পাঠিয়েছে। আমরা দ্রুত এর বাস্তবায়ন দেখতে চাই। এর পাশাপাশি ধর্মী শিক্ষা গ্রহণ এদেশের মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। ধর্মীয় শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। শুধু তাই নয়, মাদরাসা শিক্ষার স্বকীয়তা বজায় রাখতে আলিয়া মাদরাসা শিক্ষা সিলেবাসে অযাচিত, অযৌক্তিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। মাদরাসা শিক্ষার স্বকীয়তা বজায় রাখতে ইসলামী স্কলারদের সহায়তায় ইসলামী আদর্শ নির্ভর শিক্ষা সিলেবাস অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে।”

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসাসহ সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে বগুড়ায় জাতীয় শিক্ষক ফোরামের মানবন্ধন

আপডেট সময় ০৯:২১:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অগাস্ট ২০২৩

আজ ৫ আগস্ট শনিবার বিকেল ৪ টায় দেশব্যাপী জাতীয় শিক্ষক ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষিত মানববন্ধন কর্মসূচির অংশ হিসেবে বগুড়া জেলা শাখা আয়োজিত মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয় ।

প্রধান অতিথির হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শিক্ষক ফোরাম এর সেক্রেটারী জেনারেল প্রভাষক আব্দুস সবুর । তিনি তার বক্তব্যে বলেছেন, “শিক্ষকরা জাতি গড়ার কারিগর। আদর্শ সমাজ, আদর্শ প্রজন্ম গড়তে শিক্ষকদের ভূমিকা অতুলনীয় অথচ শিক্ষকরাই আজ অবহেলিত।সামাজিক এবং অর্থনৈতিকভাবে বৈষম্যের শিকার। বিদ্যমান শিক্ষাব্যবস্থার মাঝে বৈষম্য বজায় রেখে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। বৈষম্য দূর করতে হলে সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ করা সময়ের দাবী।”

জেলা সভাপতি মাওলানা আলতাফ আলীর সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারী প্রভাষক মু. শাহজাহান তালুকদার এর পরিচালনায় বগুড়া প্রেসক্লাব চত্ত্বরে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসাসহ সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ,শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলককরণ এবং মাদরাসা শিক্ষার স্বকীয়তা বজায় রাখার দাবীতে আয়োজিত মানববন্ধনে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম বগুড়া জেলা শাখার উপদেষ্টা সহ-সুপার মাওলানা আ ন ম মামুনুর রশিদ বলেন, “জাতীয় শিক্ষক ফোরাম শুধু মাধ্যমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ চায় তাই নয় বরং মাদরাসা শিক্ষা ধারায় ইবতেদায়ী থেকে কামিল পর্যন্ত এবং জেনারেল শিক্ষা ধারায় মাধ্যমিক থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত সকল বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জাতীয়করণ চায়।” এ লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছে।

ইবতেদায়ী মাদরাসা প্রসঙ্গে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম বগুড়া জেলা শাখার উপদেষ্টা প্রভাষক শফিকুল ইসলাম বলেন,”ইবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলো আজ চরমভাবে অবহেলিত। মাদ্রাসাগুলো অবকাঠামোগত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং সরকারের অভ্যন্তরে থাকা একটি মহলের অনীহার কারণে ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন বৈষ্যম্যের শিকার। জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০,ইবতেদায়ী মাদরাসা নীতিমালা-২০১৮,ক্ষমতাসীন সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার-২০১৮,বাংলাদেশের সংবিধান প্রদত্ত অধিকার এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশনএর নির্দেশনা এসব কোনো কিছুই ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষার ভাগ্য বদলাতে পারেনি।প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী ৮৯৫৬টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা থাকলেও নানা শর্তের বেড়াজালে পতিত হয়ে মাত্র ১৫১৯ টি মাদ্রাসা সরকারি অনুদান প্রাপ্ত হয়েছে। স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতন ভাতা প্রদানে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির পরেও প্রায় ৯ প্রতিষ্ঠানের ৪৫ হাজার শিক্ষক কর্মচারী বিনা বেতনে পাঠদান করছে অথচ তাদেরকে কোন বেতন ভাতা দেওয়া হচ্ছে না । কাদের ইশারায় আজকে ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষকরা মানবেতর জীবনযাপন করছে তার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন । আজকের এই মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে দেশের সকল স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসাসহ বেসরকারি এমপিও ভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের জোর দাবি জানাচ্ছি। সেই সাথে কমপক্ষে ৩০ হাজার স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।”

বক্তৃতায় আরও বলেন, “সরকার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আশ্বস্ত করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফেরত পাঠিয়েছে। আমরা দ্রুত এর বাস্তবায়ন দেখতে চাই। এর পাশাপাশি ধর্মী শিক্ষা গ্রহণ এদেশের মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। ধর্মীয় শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। শুধু তাই নয়, মাদরাসা শিক্ষার স্বকীয়তা বজায় রাখতে আলিয়া মাদরাসা শিক্ষা সিলেবাসে অযাচিত, অযৌক্তিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। মাদরাসা শিক্ষার স্বকীয়তা বজায় রাখতে ইসলামী স্কলারদের সহায়তায় ইসলামী আদর্শ নির্ভর শিক্ষা সিলেবাস অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে।”