ঢাকা ০২:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাদারিপুরের ডাসারে লোহার তারে বাঁধা সেতু! আতঙ্কে এলাকাবাসী

মাদারীপুর ডাসারে ব্রিজ হেলে পড়ায় চরম আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীদের মাঝে। উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নে শশিকর বাজারের খালে উপর  নির্মিত ব্রিজটি হেলে পড়ায় কয়েকটি গ্রামের লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করেছে, কখন যেন ব্রিজ ভেঙে পরে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়।
প্রতিদিন এ সড়কে শতাধিক ব্যাটারিচালিত রিকসা ও মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যান চলাচল করে। কিš‘ ব্রিজটি হেলে পড়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে এসব যানবাহন। কিছু কিছু যানবাহন তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই হেলে পড়া  ব্রিজে পারাপার হচ্ছে।  এছাড়াও  রয়েছে ব্রিজের দুই পাশে স্কুল ও কলেজ। এই ব্রিজ দিয়ে হাজারও শিক্ষার্থী ও পথচারী নিয়মিত চলাচল করে। বর্তমানে ব্রিজটির এমন পরিস্থিতিতে  শিক্ষার্থী সহ পথচারিরা চরম আতঙ্কে ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডাসার উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের শশিকর বাজারে খালে উপর  নির্মিত সংযোগ সেতুটির একটি হেলে পড়া পিলারকে লোহার তার দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে।ব্রিজের রেলিং এর কিছু অংশ আগেই ভেঙ্গে পড়েছে। যেকোন সময় লোহার তার ছিড়ে ভেঙে পড়ে যেতে পারে সেতুটি।জীবনের ঝুঁকি নিয়েই হেলে পরা সেতু দিয়ে পার হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাসহ স্কুল,কলেজ মাদরাসার শিক্ষার্থীরা ও বাজারে আসা লোকজন এবং পথচারীরা। এদিকে খালের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আরো আতঙ্কের ভিতর পড়েছে তারা।সরকারের কাছে স্থানীয়দের  দাবি  দ্রুত এই সেতুটি সংস্করন করে দেওয়ার জন্য।
স্থানীয়  সূত্রে জানা গেছে,সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন স্থানীয়  সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি ৩০ বছর আগে নবগ্রাম ইউনিয়নের শশিকর খালের ওপর এ সেতুটি নির্মাণ করে। দীর্ঘদিন সেতুটি সংস্কার না হওয়ায় কয়েকবছর আগে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়েই প্রতিদিন সরকারী শেখ হাসিনা একাডেমি এন্ড উইমেন্স কলেজ,ডি কে আইডিয়াল সৈয়দ আতাহার আলী একাডেমি এন্ড কলেজ, শশিকর বালিকা বিদ্যালয়, শশিকর মাধ্যমিক বিদ্যালয়,শশিকর মহাবিদ্যালয়,সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীসহ কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে আসছেন।দীর্ঘ ছয় বছর আগে সেতুর পাইলিংয়ের প্রথম পিলার আস্তে আস্তে হেলে পরে তখন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যন পাইলিং থেকে পিলার পর্যন্ত লোহার তার দিয়ে বেধে দেয়।কখন যানি পাইলিং থেকে সেতুটি ভেঙে পরে যায়। দীর্ঘদিন ধরে পুরানো সেতুটি নড়বড়ে হে রয়েছে। এটি সংস্কারের অভাবে নড়বড়ে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা  বিরাজ করছিল। এনিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করেছে নবগ্রাম ইউনিয়নবাসীসহ সকল স্তরের লোকজনের মাঝে।
ভূদেব হালদার বলেন,আমাদের এই ব্রীজ দিয়ে যাতায়াতে অনেক ভয় করে। সরকারের কাছে আবেদন সে জানি আমাদের ব্রীজটি একটু করে দেয়।
শশিকর সঃপ্রঃ বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থী তমা বাড়ৈ,সিমা বিশ্বাস বলেন,আমরা প্রতিদিন ব্রীজের উপর দিয়ে স্কুলে যাই, আমাদের অনেক ভয় লাগে,যদি পড়ে যায়। আমাদের একটা নতুন ব্রীজ দেন।
মিঠুন বিশ্বাস নামের আরেক বাসিন্দা  বলেন, এই ব্রীজটি এতই নড়বড়ে, ব্রীজদিয়ে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা চলাফেরা করতে অনেক ভয় পায়। কখন যে ভেঙে পড়ে যায়। আমরা সব সময় এ ব্রীজ নিয়ে আতঙ্কের ভিতরে থাকি। কয়েকটি গ্রামের মানুষ এই ব্রীজ দিয়ে প্রতিদিন চলাফেরা করে আসছে। আমরা আপনাদের মাধ্যমে সরকারের কাছে ব্রীজটি দ্রুত নির্মানের আবেদন করছি।
শশিকর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুনীত কুমার হালদার বলেন, সেতু হেলে পড়ায় জনসাধারণের চলাচলের পাশাপাশি অনেক গুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এব্রীজটি দিয়ে আসা যাওয়া করে। ব্রীজের আসে পাশে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। হাজারও শিক্ষার্থীকে একপ্রকার আতঙ্কের মধ্যে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসতে হচ্ছে ।ব্রীজটি এখন প্রাণের দাবিতে রুপ নিয়েছে।
নবগ্রাম ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারন সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বাবু বিভূতি ভুষন বাড়ৈ জানান, আমি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায়  উপজেলা প্রকৌশলীর মাধ্যমে এ ব্রীজের ড্রয়িং করে পাঠিয়ে ছিলাম এবং ঢাকা থেকে এলজিইডির কর্মকর্তারা এসে ব্রীজটি পরদর্শন করে যায়। এর পরে আর কোন অগ্রগতি দেখা যায়নি।
নবগ্রাম ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল তালুকদার সেতু হেলে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সেতুটি এলজিইডির আওতাধীন শশিকর খালের ওপর ৩০ বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল।  পিলার হেলে পড়লে লোহার তার দিয়ে টানা দেয়া হয়েছে। এখন ব্রীজটি দিয়ে মানুষ আতঙ্কেতে পারাপার হচ্ছে । ব্রীজটি পুনঃনির্মাণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকৌশলী বরাবর লিখিত আবেদন জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুততার সঙ্গে সমাধান হবে।
এ বিষয়ে কালকিনি এলজিইডির উপজেলা প্রকৗশলী মোঃ রেজাউল করিম সেতু হেলে জনদুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন,বিষয়টি আমাকে চেয়াররম্যান অবগত করেছে।  ঘটনাস্থল  পরিদর্শন করে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে সংস্কারের ব্যবস্থা  নেয়া হবে।
Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মাদারিপুরের ডাসারে লোহার তারে বাঁধা সেতু! আতঙ্কে এলাকাবাসী

আপডেট সময় ০৫:২৩:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৩
মাদারীপুর ডাসারে ব্রিজ হেলে পড়ায় চরম আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীদের মাঝে। উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নে শশিকর বাজারের খালে উপর  নির্মিত ব্রিজটি হেলে পড়ায় কয়েকটি গ্রামের লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করেছে, কখন যেন ব্রিজ ভেঙে পরে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়।
প্রতিদিন এ সড়কে শতাধিক ব্যাটারিচালিত রিকসা ও মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যান চলাচল করে। কিš‘ ব্রিজটি হেলে পড়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে এসব যানবাহন। কিছু কিছু যানবাহন তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই হেলে পড়া  ব্রিজে পারাপার হচ্ছে।  এছাড়াও  রয়েছে ব্রিজের দুই পাশে স্কুল ও কলেজ। এই ব্রিজ দিয়ে হাজারও শিক্ষার্থী ও পথচারী নিয়মিত চলাচল করে। বর্তমানে ব্রিজটির এমন পরিস্থিতিতে  শিক্ষার্থী সহ পথচারিরা চরম আতঙ্কে ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডাসার উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের শশিকর বাজারে খালে উপর  নির্মিত সংযোগ সেতুটির একটি হেলে পড়া পিলারকে লোহার তার দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে।ব্রিজের রেলিং এর কিছু অংশ আগেই ভেঙ্গে পড়েছে। যেকোন সময় লোহার তার ছিড়ে ভেঙে পড়ে যেতে পারে সেতুটি।জীবনের ঝুঁকি নিয়েই হেলে পরা সেতু দিয়ে পার হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাসহ স্কুল,কলেজ মাদরাসার শিক্ষার্থীরা ও বাজারে আসা লোকজন এবং পথচারীরা। এদিকে খালের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আরো আতঙ্কের ভিতর পড়েছে তারা।সরকারের কাছে স্থানীয়দের  দাবি  দ্রুত এই সেতুটি সংস্করন করে দেওয়ার জন্য।
স্থানীয়  সূত্রে জানা গেছে,সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন স্থানীয়  সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি ৩০ বছর আগে নবগ্রাম ইউনিয়নের শশিকর খালের ওপর এ সেতুটি নির্মাণ করে। দীর্ঘদিন সেতুটি সংস্কার না হওয়ায় কয়েকবছর আগে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়েই প্রতিদিন সরকারী শেখ হাসিনা একাডেমি এন্ড উইমেন্স কলেজ,ডি কে আইডিয়াল সৈয়দ আতাহার আলী একাডেমি এন্ড কলেজ, শশিকর বালিকা বিদ্যালয়, শশিকর মাধ্যমিক বিদ্যালয়,শশিকর মহাবিদ্যালয়,সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীসহ কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে আসছেন।দীর্ঘ ছয় বছর আগে সেতুর পাইলিংয়ের প্রথম পিলার আস্তে আস্তে হেলে পরে তখন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যন পাইলিং থেকে পিলার পর্যন্ত লোহার তার দিয়ে বেধে দেয়।কখন যানি পাইলিং থেকে সেতুটি ভেঙে পরে যায়। দীর্ঘদিন ধরে পুরানো সেতুটি নড়বড়ে হে রয়েছে। এটি সংস্কারের অভাবে নড়বড়ে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা  বিরাজ করছিল। এনিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করেছে নবগ্রাম ইউনিয়নবাসীসহ সকল স্তরের লোকজনের মাঝে।
ভূদেব হালদার বলেন,আমাদের এই ব্রীজ দিয়ে যাতায়াতে অনেক ভয় করে। সরকারের কাছে আবেদন সে জানি আমাদের ব্রীজটি একটু করে দেয়।
শশিকর সঃপ্রঃ বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থী তমা বাড়ৈ,সিমা বিশ্বাস বলেন,আমরা প্রতিদিন ব্রীজের উপর দিয়ে স্কুলে যাই, আমাদের অনেক ভয় লাগে,যদি পড়ে যায়। আমাদের একটা নতুন ব্রীজ দেন।
মিঠুন বিশ্বাস নামের আরেক বাসিন্দা  বলেন, এই ব্রীজটি এতই নড়বড়ে, ব্রীজদিয়ে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা চলাফেরা করতে অনেক ভয় পায়। কখন যে ভেঙে পড়ে যায়। আমরা সব সময় এ ব্রীজ নিয়ে আতঙ্কের ভিতরে থাকি। কয়েকটি গ্রামের মানুষ এই ব্রীজ দিয়ে প্রতিদিন চলাফেরা করে আসছে। আমরা আপনাদের মাধ্যমে সরকারের কাছে ব্রীজটি দ্রুত নির্মানের আবেদন করছি।
শশিকর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুনীত কুমার হালদার বলেন, সেতু হেলে পড়ায় জনসাধারণের চলাচলের পাশাপাশি অনেক গুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এব্রীজটি দিয়ে আসা যাওয়া করে। ব্রীজের আসে পাশে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। হাজারও শিক্ষার্থীকে একপ্রকার আতঙ্কের মধ্যে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসতে হচ্ছে ।ব্রীজটি এখন প্রাণের দাবিতে রুপ নিয়েছে।
নবগ্রাম ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারন সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বাবু বিভূতি ভুষন বাড়ৈ জানান, আমি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায়  উপজেলা প্রকৌশলীর মাধ্যমে এ ব্রীজের ড্রয়িং করে পাঠিয়ে ছিলাম এবং ঢাকা থেকে এলজিইডির কর্মকর্তারা এসে ব্রীজটি পরদর্শন করে যায়। এর পরে আর কোন অগ্রগতি দেখা যায়নি।
নবগ্রাম ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল তালুকদার সেতু হেলে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সেতুটি এলজিইডির আওতাধীন শশিকর খালের ওপর ৩০ বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল।  পিলার হেলে পড়লে লোহার তার দিয়ে টানা দেয়া হয়েছে। এখন ব্রীজটি দিয়ে মানুষ আতঙ্কেতে পারাপার হচ্ছে । ব্রীজটি পুনঃনির্মাণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকৌশলী বরাবর লিখিত আবেদন জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুততার সঙ্গে সমাধান হবে।
এ বিষয়ে কালকিনি এলজিইডির উপজেলা প্রকৗশলী মোঃ রেজাউল করিম সেতু হেলে জনদুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন,বিষয়টি আমাকে চেয়াররম্যান অবগত করেছে।  ঘটনাস্থল  পরিদর্শন করে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে সংস্কারের ব্যবস্থা  নেয়া হবে।