ঢাকা ০৩:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম’ হত‍্যারসমূল পরিকল্পনাকারী রাজনসহ ০৭ জন’কে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব

বহুল আলোচিত রাজধানীর দক্ষিন কেরানীগঞ্জে ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম’কে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও চোখ উপড়ে হত্যাকান্ডের ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী রাজনসহ হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত ০৭ জন’কে রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে হত্যাকান্ডের ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।

র‌্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনী, বিপুল পরিমান অবৈধ অস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধার, ছিনতাইকারী, অপহরণ ও প্রতারকদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সংগঠিত চাঞ্চল্যকর এবং আলোচিত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে র‌্যাব জনগনের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

গত ৩০ জুলাই ২০২৩ তারিখ দিবাগত রাতে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের খেজুরবাগ সাতপাখি এলাকায় সাইফুল ইসলাম নামে, এক পোশাক ব্যবসায়ীকে কতিপয় দুর্বৃত্তরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসহভাবে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে এবং চোখ উপড়ে ফেলে নির্মমভাবে হত্যা করে।

উক্ত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের বড় বোন বাদী হয়ে রাজধানীর কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং-০১ তারিখঃ ০১ আগস্ট ২০২৩ তারিখ।

চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।

্যাব উক্ত হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত রাতে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর সাইফুল হত্যাকাণ্ডের মূলপরিকল্পনাকারী ১।

মোঃ রাজন হোসেন (৩১), পিতাঃ আফসার উদ্দিন ও হত্যাকান্ডে অন্যান্য সহযোগি ২, মোঃ জানে আলম (৩৬), পিতাঃ আফসার উদ্দিন, ৩।মোঃ সুমন @গর্দা সুমন (২৫), পিতাঃ মৃত সেন্টু মিয়া, ৪। মোঃ লিটন হোসেন (২৬), পিতাঃ মোঃ আবুল কাশেম, ৫। মোঃ দিপু (২৩), পিতাঃ মৃত শামছুল হক, ৬। মোঃ সরোয়ার আকন্দ (২৬), পিতাঃ মোঃ ছালাম আকন্দ এবং ৭। মোঃ সজীব (২৯), পিতাঃ মোঃ আলী হোসেন, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা’দেরকে গ্রেফতার করে।

উদ্ধার করা হয় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সূচালো লোহার রড, ০১টি ভাঙ্গা ক্রিকেট ব্যাট, ০১টি ব্যাটন ও ০৬টি মোবাইল ফোন।,প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা বর্ণিত হত্যাকাণ্ডের সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ভিকটিম সাইফুল দীর্ঘদিন যাবত ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের খেজুরবাগ সাতপাখি এলাকায় পরিবারের সাথে বসবাস করে আসছিলেন এবং সাতপাখি রোডে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে কাপড়ের ব্যবসা করতেন।

গ্রেফতারকৃত আসামিরা রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকায় বসবাস করত,ভিকটিম সাইফুল ছিল এলাকায় সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদী কণ্ঠ।

মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গঠনে তিনি বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতেন। তিনি বিভিন্ন সময় সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসা সম্পর্কে তথ্য দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকেও সহায়তা করতেন, এ কারনে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও অন্যান্য অপরাধীরা ভিকটিম সাইফুল এর প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে উচিত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করে।

গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত রাজন গত ২৮ জুন ২০২৩ তারিখ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হয় এবং সে ধারণা করে যে, তার এই গ্রেফতারের পিছনে ভিকটিম সাইফুলের হাত রয়েছে।

এছাড়াও গ্রেফতারকৃত জানে আলম এবং গ্রেফতারকৃত সুমন ও তার মাতা ইতিপূর্বে বিভিন্ন সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হওয়ার পিছনেও ভিকটিম সাইফুলের হাত রয়েছে বলে তারা ধারণা করে।

গ্রেফতারকৃত রাজন গত ১৯ জুলাই ২০২৩ তারিখে জামিনে মুক্তি পেয়ে গ্রেফতারকৃত জানে আলম, সুমন ও অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে ভিকটিম সাইফুলকে উচিত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করতে থাকে।

এছাড়াও তারা জানতে পারে যে, ভিকটিম সাইফুল উন্নত জীবন-যাপনের জন্য চাকুরীর উদ্দেশ্যে অতিসম্প্রতি পাশ্চাত্যের একটি দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিল।

ভিকটিমের বিদেশের যাওয়ার বিষয়টি গ্রেফতারকৃরা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পারে। এজন্য তাড়াহুড়া করে গ্রেফতারকৃত রাজন এর নেতৃত্বে জানে আলম, সুমন, লিটন, দিপু, সরোয়ার ও সজীবসহ ১০-১২ জনের একটি দল গত ৩০ জুলাই ২০২৩ তারিখ সন্ধ্যা ০৭৩০ ঘটিকায় ভিকটিম সাইফুলকে উচিত শিক্ষা দেয়ার চ‚ড়ান্ত পরিকল্পনা করে।

ভিকটিম সাইফুল দোকান থেকে বাসায় ফেরার পথে গ্রেফতারকৃতরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী খেজুরবাগ স্কুল রোডে ওৎ পেতে থাকে,পরবর্তীতে ভিকটিম সাইফুল দোকান বন্ধ করে আনুমানিক ২৩৩০ ঘটিকায় খেজুরবাগ স্কুল রোডে এসে পৌঁছালে গ্রেফতারকৃতরা ভিকটিমের পথরোধ করে ভিকটিমকে ক্রিকেট ব্যাট, ব্যাটন, লোহার রড় ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়ি আঘাত করতে থাকে।

একপর্যায়ে ভিকটিম মাটিতে পড়ে গেলে গ্রেফতারকৃত রাজন পাশের একটি দোকান থেকে চামচ নিয়ে এসে ভিকটিমের চোখ নৃশংসভাবে উপড়ে ফেলে।

ভিকটিমের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে গুরুতর আহত অবস্থায় ভিকটিমকে ফেলে গ্রেফতারকৃতরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

পরবর্তীতে স্থানীয়রা ভিকটিমকে উদ্ধার করে রাজধানীর একটি সরকারী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

গ্রেফতারকৃতরা হত্যাকাণ্ড সংঘটনের পর এলাকা থেকে পালিয়ে কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি প্রকাশিত হলে তারা আত্মগোপনের উদ্দেশ্যে রাজধানীর বাহিরে গমনকালে রাজধানীর শাহবাগ এলাকা হতে র‌্যাব কর্তৃক গ্রেফতার হয়।

গ্রেফতারকৃতরা এলাকায় মাদক ব্যবসা ও অর্থের বিনিময়ে সন্ত্রাসীসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সম্পাদন করত বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত রাজন স্থানীয় একটি রিক্সা গ্যারেজ পরিচালনা করত। পাশাপাশি এলাকায় মাদক, ছিনতাই, ডাকাতি, গাড়ি চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে।
Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম’ হত‍্যারসমূল পরিকল্পনাকারী রাজনসহ ০৭ জন’কে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব

আপডেট সময় ০৬:৩১:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অগাস্ট ২০২৩

বহুল আলোচিত রাজধানীর দক্ষিন কেরানীগঞ্জে ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম’কে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও চোখ উপড়ে হত্যাকান্ডের ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী রাজনসহ হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত ০৭ জন’কে রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে হত্যাকান্ডের ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।

র‌্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনী, বিপুল পরিমান অবৈধ অস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধার, ছিনতাইকারী, অপহরণ ও প্রতারকদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সংগঠিত চাঞ্চল্যকর এবং আলোচিত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে র‌্যাব জনগনের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

গত ৩০ জুলাই ২০২৩ তারিখ দিবাগত রাতে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের খেজুরবাগ সাতপাখি এলাকায় সাইফুল ইসলাম নামে, এক পোশাক ব্যবসায়ীকে কতিপয় দুর্বৃত্তরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসহভাবে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে এবং চোখ উপড়ে ফেলে নির্মমভাবে হত্যা করে।

উক্ত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের বড় বোন বাদী হয়ে রাজধানীর কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং-০১ তারিখঃ ০১ আগস্ট ২০২৩ তারিখ।

চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।

্যাব উক্ত হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত রাতে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর সাইফুল হত্যাকাণ্ডের মূলপরিকল্পনাকারী ১।

মোঃ রাজন হোসেন (৩১), পিতাঃ আফসার উদ্দিন ও হত্যাকান্ডে অন্যান্য সহযোগি ২, মোঃ জানে আলম (৩৬), পিতাঃ আফসার উদ্দিন, ৩।মোঃ সুমন @গর্দা সুমন (২৫), পিতাঃ মৃত সেন্টু মিয়া, ৪। মোঃ লিটন হোসেন (২৬), পিতাঃ মোঃ আবুল কাশেম, ৫। মোঃ দিপু (২৩), পিতাঃ মৃত শামছুল হক, ৬। মোঃ সরোয়ার আকন্দ (২৬), পিতাঃ মোঃ ছালাম আকন্দ এবং ৭। মোঃ সজীব (২৯), পিতাঃ মোঃ আলী হোসেন, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা’দেরকে গ্রেফতার করে।

উদ্ধার করা হয় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সূচালো লোহার রড, ০১টি ভাঙ্গা ক্রিকেট ব্যাট, ০১টি ব্যাটন ও ০৬টি মোবাইল ফোন।,প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা বর্ণিত হত্যাকাণ্ডের সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ভিকটিম সাইফুল দীর্ঘদিন যাবত ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের খেজুরবাগ সাতপাখি এলাকায় পরিবারের সাথে বসবাস করে আসছিলেন এবং সাতপাখি রোডে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে কাপড়ের ব্যবসা করতেন।

গ্রেফতারকৃত আসামিরা রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকায় বসবাস করত,ভিকটিম সাইফুল ছিল এলাকায় সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদী কণ্ঠ।

মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গঠনে তিনি বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতেন। তিনি বিভিন্ন সময় সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসা সম্পর্কে তথ্য দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকেও সহায়তা করতেন, এ কারনে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও অন্যান্য অপরাধীরা ভিকটিম সাইফুল এর প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে উচিত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করে।

গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত রাজন গত ২৮ জুন ২০২৩ তারিখ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হয় এবং সে ধারণা করে যে, তার এই গ্রেফতারের পিছনে ভিকটিম সাইফুলের হাত রয়েছে।

এছাড়াও গ্রেফতারকৃত জানে আলম এবং গ্রেফতারকৃত সুমন ও তার মাতা ইতিপূর্বে বিভিন্ন সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হওয়ার পিছনেও ভিকটিম সাইফুলের হাত রয়েছে বলে তারা ধারণা করে।

গ্রেফতারকৃত রাজন গত ১৯ জুলাই ২০২৩ তারিখে জামিনে মুক্তি পেয়ে গ্রেফতারকৃত জানে আলম, সুমন ও অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে ভিকটিম সাইফুলকে উচিত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করতে থাকে।

এছাড়াও তারা জানতে পারে যে, ভিকটিম সাইফুল উন্নত জীবন-যাপনের জন্য চাকুরীর উদ্দেশ্যে অতিসম্প্রতি পাশ্চাত্যের একটি দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিল।

ভিকটিমের বিদেশের যাওয়ার বিষয়টি গ্রেফতারকৃরা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পারে। এজন্য তাড়াহুড়া করে গ্রেফতারকৃত রাজন এর নেতৃত্বে জানে আলম, সুমন, লিটন, দিপু, সরোয়ার ও সজীবসহ ১০-১২ জনের একটি দল গত ৩০ জুলাই ২০২৩ তারিখ সন্ধ্যা ০৭৩০ ঘটিকায় ভিকটিম সাইফুলকে উচিত শিক্ষা দেয়ার চ‚ড়ান্ত পরিকল্পনা করে।

ভিকটিম সাইফুল দোকান থেকে বাসায় ফেরার পথে গ্রেফতারকৃতরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী খেজুরবাগ স্কুল রোডে ওৎ পেতে থাকে,পরবর্তীতে ভিকটিম সাইফুল দোকান বন্ধ করে আনুমানিক ২৩৩০ ঘটিকায় খেজুরবাগ স্কুল রোডে এসে পৌঁছালে গ্রেফতারকৃতরা ভিকটিমের পথরোধ করে ভিকটিমকে ক্রিকেট ব্যাট, ব্যাটন, লোহার রড় ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়ি আঘাত করতে থাকে।

একপর্যায়ে ভিকটিম মাটিতে পড়ে গেলে গ্রেফতারকৃত রাজন পাশের একটি দোকান থেকে চামচ নিয়ে এসে ভিকটিমের চোখ নৃশংসভাবে উপড়ে ফেলে।

ভিকটিমের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে গুরুতর আহত অবস্থায় ভিকটিমকে ফেলে গ্রেফতারকৃতরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

পরবর্তীতে স্থানীয়রা ভিকটিমকে উদ্ধার করে রাজধানীর একটি সরকারী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

গ্রেফতারকৃতরা হত্যাকাণ্ড সংঘটনের পর এলাকা থেকে পালিয়ে কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি প্রকাশিত হলে তারা আত্মগোপনের উদ্দেশ্যে রাজধানীর বাহিরে গমনকালে রাজধানীর শাহবাগ এলাকা হতে র‌্যাব কর্তৃক গ্রেফতার হয়।

গ্রেফতারকৃতরা এলাকায় মাদক ব্যবসা ও অর্থের বিনিময়ে সন্ত্রাসীসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সম্পাদন করত বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত রাজন স্থানীয় একটি রিক্সা গ্যারেজ পরিচালনা করত। পাশাপাশি এলাকায় মাদক, ছিনতাই, ডাকাতি, গাড়ি চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে।