ঢাকা ০৬:০২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চৌদ্দগ্রামে স্ত্রীকে ‘হত্যা’ করে লাশ শ্বশুর বাড়িতে রেখে স্বামী পালিয়ে যাওয়ার সময় চট্রগ্রামে আটক

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে জান্নাতুল ফেরদৌস টুম্পা(২৫) নামে এক গৃহবধুকে স্বামীর বাড়িতে হত্যার পর কৌশলে লাশ শ^শুড় বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে স্বামী উধাও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ রাতেই স্বামী সাইফুল ইসলাকে চট্টগ্রাম এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে।

নিহত গৃহবধু টুম্পা উপজেলার জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রামের কাজী শফিকুর রহমানের মেয়ে। পুলিশ লাশ উদ্ধার শেষে ময়নাতদন্তের জন্য রোববার সকালে মর্গে প্রেরণ করেছে। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমা।

গৃহবধুর বাবা কাজী শফিকুর রহমান বলেন, জান্নাতুল ফেরদৌস টুম্পার স্বামী গত ২৮ জুলাই বৃহস্পতিবার বাহরাইন থেকে দেশে আসে। এ সময় টুম্পা আমাদের বাড়িতে অবস্থান করছিল। শনিবার দুপুরে স্বামী সাইফুল ইসলামসহ দুপুরে খাবার খেয়ে পাশবর্তী বড়পুষ্করনী গ্রামের নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। সন্ধ্যার কিছু সময় আগে সাইফুল ইসলাম টুম্পাকে আমাদের বাড়ির সামনে একটি সিএনজি অটোরিকশা যোগে অচেতন অবস্থায় নিয়ে এসে বলে আপনাদের মেয়ে অসুস্থ্য তাকে হাসপাতালে নিতে হবে। আপনারা আমার সাথে আসেন। এ সময় টুম্পার মা নাসিমা বেগম এক নিকটাত্মীয়সহ তাকে নিয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাঃ তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শফিকুর রহমান আরও বলেন, ডাঃ টুম্পাকে মৃত ঘোষণা করলেও সাইফুল তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা নিবে বলে কৌশলে এ্যাম্বুলেন্সে তুলে লাশ আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসে এবং ঘরে রেখে তিনি উধাও হয়ে যায়।

গৃহবধুর মা নাসিমা বেগম বলেন, আমরা কিছু বুঝে উঠার আগেই টুম্পার স্বামী সাইফুল আমার মেয়ের লাশ ঘরে রেখে উধাও হয়ে যায়।

আমরা পরে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাই। সাইফুল তার বাড়িতে নিয়ে আমার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। তবে কি কারণে হত্যা করা হয়েছে তা বলতে পারেনি কেউ।

শনিবার দায়িত্বে থাকা চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের ডাঃ মোঃ সোলেমান বাদশা বলেন, গৃহবধুকে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের কালো চিহ্ন রয়েছে। আমরা গৃহবধুকে মৃত ঘোষণা করলেও তার স্বামী সাইফুল ইসলাম আমাদের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরন করে লাশ উন্নত চিকিৎসার কথা বলে এ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যায়।

চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, খবর পেয়ে রাতেই গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা তার স্বামী সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছি। ধারনা করা হচ্ছে, তিনি চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে বাহারাইন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। গৃহবধুর মৃত্যুর কারন সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

চৌদ্দগ্রামে স্ত্রীকে ‘হত্যা’ করে লাশ শ্বশুর বাড়িতে রেখে স্বামী পালিয়ে যাওয়ার সময় চট্রগ্রামে আটক

আপডেট সময় ০৭:৩০:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুলাই ২০২৩

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে জান্নাতুল ফেরদৌস টুম্পা(২৫) নামে এক গৃহবধুকে স্বামীর বাড়িতে হত্যার পর কৌশলে লাশ শ^শুড় বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে স্বামী উধাও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ রাতেই স্বামী সাইফুল ইসলাকে চট্টগ্রাম এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে।

নিহত গৃহবধু টুম্পা উপজেলার জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রামের কাজী শফিকুর রহমানের মেয়ে। পুলিশ লাশ উদ্ধার শেষে ময়নাতদন্তের জন্য রোববার সকালে মর্গে প্রেরণ করেছে। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমা।

গৃহবধুর বাবা কাজী শফিকুর রহমান বলেন, জান্নাতুল ফেরদৌস টুম্পার স্বামী গত ২৮ জুলাই বৃহস্পতিবার বাহরাইন থেকে দেশে আসে। এ সময় টুম্পা আমাদের বাড়িতে অবস্থান করছিল। শনিবার দুপুরে স্বামী সাইফুল ইসলামসহ দুপুরে খাবার খেয়ে পাশবর্তী বড়পুষ্করনী গ্রামের নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। সন্ধ্যার কিছু সময় আগে সাইফুল ইসলাম টুম্পাকে আমাদের বাড়ির সামনে একটি সিএনজি অটোরিকশা যোগে অচেতন অবস্থায় নিয়ে এসে বলে আপনাদের মেয়ে অসুস্থ্য তাকে হাসপাতালে নিতে হবে। আপনারা আমার সাথে আসেন। এ সময় টুম্পার মা নাসিমা বেগম এক নিকটাত্মীয়সহ তাকে নিয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাঃ তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শফিকুর রহমান আরও বলেন, ডাঃ টুম্পাকে মৃত ঘোষণা করলেও সাইফুল তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা নিবে বলে কৌশলে এ্যাম্বুলেন্সে তুলে লাশ আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসে এবং ঘরে রেখে তিনি উধাও হয়ে যায়।

গৃহবধুর মা নাসিমা বেগম বলেন, আমরা কিছু বুঝে উঠার আগেই টুম্পার স্বামী সাইফুল আমার মেয়ের লাশ ঘরে রেখে উধাও হয়ে যায়।

আমরা পরে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাই। সাইফুল তার বাড়িতে নিয়ে আমার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। তবে কি কারণে হত্যা করা হয়েছে তা বলতে পারেনি কেউ।

শনিবার দায়িত্বে থাকা চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের ডাঃ মোঃ সোলেমান বাদশা বলেন, গৃহবধুকে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের কালো চিহ্ন রয়েছে। আমরা গৃহবধুকে মৃত ঘোষণা করলেও তার স্বামী সাইফুল ইসলাম আমাদের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরন করে লাশ উন্নত চিকিৎসার কথা বলে এ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যায়।

চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, খবর পেয়ে রাতেই গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা তার স্বামী সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছি। ধারনা করা হচ্ছে, তিনি চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে বাহারাইন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। গৃহবধুর মৃত্যুর কারন সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।