ঢাকা ০৭:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অর্থ সঙ্কটে পশ্চিম পোয়া কাটাখালী পীর মতিনীয়া এতিমখানা বিলুপ্তির পথে

আর্থিক সঙ্কটে প্রায় বিলুপ্তির পথে ৩৩ বছরের পুরনো পশ্চিম পোয়া কাটাখালী পীর মতিনীয়া এতিমখানা। তবে আগামী ২০২৪ ইং সালের জানুয়ারি থেকে এ প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম পুনরায় উজ্জীবিত করে এতিম অসহায় শিক্ষার্থীদের দ্বীনি শিক্ষা পাটদান অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব মাওলানা মো: তাজাম্মুল হোসেন। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার   পশ্চিম পোয়া কাটাখালী গ্রামে অবস্হিত এ প্রতিষ্ঠানটি ঐ গ্রামের মৃত আব্দুল মতিনের ছেলে আলহাজ্ব মাওলানা মো: তাজাম্মুল হোসেন তার নিজস্ব ভুমিতে ও নিজ অর্থায়নে ১৯৯১ সালে এ প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেন।যার রেজি:নং- ৩০৭।

প্রতিষ্ঠাতা তাজাম্মুল হোসেন বলেন, ১৯৯১ সালে নির্মিত এ প্রতিষ্ঠানে দুজন এতিম শিক্ষার্থীকে নিয়ে আমাদের এ দ্বীনি প্রতিষ্ঠানটি শুরু করি। পরে দিনদিন বাড়িয়ে ৫০ জন শিক্ষার্থী হয়। শুরুতে প্রতিষ্ঠাতা নিজ অর্থায়নে শিক্ষকদের বেতন, শিক্ষার্থীদের বিনা মুল্যে কিতাব,বই সহ এতিম শিক্ষার্থীদের খাওয়া ও ভরন পোষনের সকল অর্থ ব্যয়ের খরচ প্রতিষ্ঠাতা নিজ অর্থায়নে করতেন। পরে সরকারের সহযোগিতায় নগদ অনুদান বছরে  ৪৪ হাজার টাকা ও দুই টন চাউল করে সরকার এ প্রতিষ্ঠানকে দেয়।  সরকারি ঐ অনুদানের টাকা দিয়ে প্রতিষ্ঠানের সকল ব্যয় নির্বাহ করতেন।

সরকারী আর্থিক অনুদানের অর্থ ব্যয়ে প্রতিষ্ঠাকালের সময়ের ব্যবধানে বিগত ২০১৯ ইং সাল পর্যন্ত এ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটি সুনামের সহিত পরিচালনা হয়ে আসাকালীন অবস্হায় ২০২০ইং সালে বৈশিক করোনা কালীন সময়ে সরকারি ভাবে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান বন্ধ হয়ে যায়।

করোনা কালীন সময়ে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ থাকাবস্হায় শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানে না থাকায় ঐ এলাকার কিছু স্বার্থন্যাসি কুচক্রী মহল প্রতিষ্ঠানে কোন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক নাই এবং এতিমখানা নামীয়  দান অনুদানের  অর্থ প্রতিষ্ঠাতা তাজাম্মুল হোসেন আত্মসাৎ করে আসছে এমন মিথ্যে কথা সাজিয়ে ঐ এলাকার জনৈক মো. মহিউদ্দিন প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে বিগত ৯/৩/২০২৩ ইং সালে ফরিদগঞ্জ উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয় বরাবর  আবেদন করে  সরকারি সকল দান অনুদান করোনা কালীন সময় হতে অদ্যবদী বন্ধ করে দেয়।

এবিষয়ে প্রতিষ্ঠাতা তাজাম্মুল হোসেন  আরো বলেন, সরকারী অনুদান বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারন জানতে উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ে দারস্হ হলে এ বিষয়ে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষ সাথে যোগাযোগ করার জন্য বলে তারা এড়িয়ে যায়। পরে করোনা কালীন সময় কাটিয়ে পুনরায় এ প্রতিষ্ঠানটি কতেক মাস প্রতিষ্ঠাতা নিজ অর্থায়নে  শিক্ষকদের বেতন সহ এতিম শিক্ষার্থীদের খাওয়া খরচ চালিয়ে যায়। পরে নিজস্ব কোন ফান্ড না থাকায় শিক্ষকদের বেতন এতিম শিক্ষার্থীদের খরচ চালাতে না পারায় তিলতিল করে গড়ে উঠা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা চলে যায়। বর্তমানে ঐ প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন  সকালে মোক্তব হিসেবে  ১৫ জন শিশুকে সুরা, কায়দা শিখান প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা তাজাম্মুল হোসেন। এবং অর্থ সংকটের কারনে এ দ্বীনি প্রতিষ্ঠানটি প্রায় বিলুপ্তির পথে।

প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সাধারন সম্পাদক তাজুল ইসলাম  বলেন,  প্রতিষ্ঠাকাল হতে  এ প্রতিষ্ঠানের সাথে থেকে দায়িত্ব পালন করেছি। এ প্রতিষ্ঠানে এলাকার ও এলাকার বাহিরের এতিম অসহায়  প্রায় ৫০ শিক্ষার্থী দ্বীনি লেখা পড়া করতো, কিন্ত এলাকার কিছু খারাপ লোকজন প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ দিয়ে সরকারী দান অনুদান বন্ধ করে দেওয়ায় এতে অর্থ সংকটে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় বিলুপ্তির দারপ্রান্তে।

এলাকাবাসী জানান, এ প্রতিষ্ঠানে এলাকার অনেক এতিম অসহায় গরিব ছেলে মেয়েরা বিনামূল্যে লেখা পড়া করতো। কিন্তু অর্থ সংকটের কারনে কর্তৃপক্ষ শিক্ষকদের বেতন দিতে না পারায় ঐ শিক্ষকরা প্রতিষ্ঠান ছেড়ে চলে যায়। পরে শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীরাও চলে যায়। তবে এ দ্বীনি প্রতিষ্ঠানটি পুনরায় চালু হলে এলাকার এতিম, দুঃস্থ, অসহায়,, গরীব ছেলে মেয়েরা বিনামূল্যে দ্বীনি আরবী শিক্ষার সুযোগ পাবে।

এ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটি পূন: উজ্জিবিত করতে সরকারের সহযোগীতার কোন বিকল্প নেই। তাই পূর্বের ন্যায় এ প্রতিষ্ঠানের নামীয় বার্ষিক বরাদ্দকৃত অনুদানের অর্থপুনরায় সহযোগীতা করে এ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি উদাত্ত আহব্বান জানান প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব মাওলানা তাজাম্মুল হোসেন। এদিকে ফরিদগঞ্জ উপজেলার সমাজ সেবা কর্মকর্তার সাথে একাধিকবার মুঠোফােনে যোগাযোগ করতে চাইলে প্রতিবেদককে কিছু বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

অর্থ সঙ্কটে পশ্চিম পোয়া কাটাখালী পীর মতিনীয়া এতিমখানা বিলুপ্তির পথে

আপডেট সময় ০৮:০৮:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই ২০২৩

আর্থিক সঙ্কটে প্রায় বিলুপ্তির পথে ৩৩ বছরের পুরনো পশ্চিম পোয়া কাটাখালী পীর মতিনীয়া এতিমখানা। তবে আগামী ২০২৪ ইং সালের জানুয়ারি থেকে এ প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম পুনরায় উজ্জীবিত করে এতিম অসহায় শিক্ষার্থীদের দ্বীনি শিক্ষা পাটদান অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব মাওলানা মো: তাজাম্মুল হোসেন। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার   পশ্চিম পোয়া কাটাখালী গ্রামে অবস্হিত এ প্রতিষ্ঠানটি ঐ গ্রামের মৃত আব্দুল মতিনের ছেলে আলহাজ্ব মাওলানা মো: তাজাম্মুল হোসেন তার নিজস্ব ভুমিতে ও নিজ অর্থায়নে ১৯৯১ সালে এ প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেন।যার রেজি:নং- ৩০৭।

প্রতিষ্ঠাতা তাজাম্মুল হোসেন বলেন, ১৯৯১ সালে নির্মিত এ প্রতিষ্ঠানে দুজন এতিম শিক্ষার্থীকে নিয়ে আমাদের এ দ্বীনি প্রতিষ্ঠানটি শুরু করি। পরে দিনদিন বাড়িয়ে ৫০ জন শিক্ষার্থী হয়। শুরুতে প্রতিষ্ঠাতা নিজ অর্থায়নে শিক্ষকদের বেতন, শিক্ষার্থীদের বিনা মুল্যে কিতাব,বই সহ এতিম শিক্ষার্থীদের খাওয়া ও ভরন পোষনের সকল অর্থ ব্যয়ের খরচ প্রতিষ্ঠাতা নিজ অর্থায়নে করতেন। পরে সরকারের সহযোগিতায় নগদ অনুদান বছরে  ৪৪ হাজার টাকা ও দুই টন চাউল করে সরকার এ প্রতিষ্ঠানকে দেয়।  সরকারি ঐ অনুদানের টাকা দিয়ে প্রতিষ্ঠানের সকল ব্যয় নির্বাহ করতেন।

সরকারী আর্থিক অনুদানের অর্থ ব্যয়ে প্রতিষ্ঠাকালের সময়ের ব্যবধানে বিগত ২০১৯ ইং সাল পর্যন্ত এ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটি সুনামের সহিত পরিচালনা হয়ে আসাকালীন অবস্হায় ২০২০ইং সালে বৈশিক করোনা কালীন সময়ে সরকারি ভাবে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান বন্ধ হয়ে যায়।

করোনা কালীন সময়ে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ থাকাবস্হায় শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানে না থাকায় ঐ এলাকার কিছু স্বার্থন্যাসি কুচক্রী মহল প্রতিষ্ঠানে কোন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক নাই এবং এতিমখানা নামীয়  দান অনুদানের  অর্থ প্রতিষ্ঠাতা তাজাম্মুল হোসেন আত্মসাৎ করে আসছে এমন মিথ্যে কথা সাজিয়ে ঐ এলাকার জনৈক মো. মহিউদ্দিন প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে বিগত ৯/৩/২০২৩ ইং সালে ফরিদগঞ্জ উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয় বরাবর  আবেদন করে  সরকারি সকল দান অনুদান করোনা কালীন সময় হতে অদ্যবদী বন্ধ করে দেয়।

এবিষয়ে প্রতিষ্ঠাতা তাজাম্মুল হোসেন  আরো বলেন, সরকারী অনুদান বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারন জানতে উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ে দারস্হ হলে এ বিষয়ে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষ সাথে যোগাযোগ করার জন্য বলে তারা এড়িয়ে যায়। পরে করোনা কালীন সময় কাটিয়ে পুনরায় এ প্রতিষ্ঠানটি কতেক মাস প্রতিষ্ঠাতা নিজ অর্থায়নে  শিক্ষকদের বেতন সহ এতিম শিক্ষার্থীদের খাওয়া খরচ চালিয়ে যায়। পরে নিজস্ব কোন ফান্ড না থাকায় শিক্ষকদের বেতন এতিম শিক্ষার্থীদের খরচ চালাতে না পারায় তিলতিল করে গড়ে উঠা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা চলে যায়। বর্তমানে ঐ প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন  সকালে মোক্তব হিসেবে  ১৫ জন শিশুকে সুরা, কায়দা শিখান প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা তাজাম্মুল হোসেন। এবং অর্থ সংকটের কারনে এ দ্বীনি প্রতিষ্ঠানটি প্রায় বিলুপ্তির পথে।

প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সাধারন সম্পাদক তাজুল ইসলাম  বলেন,  প্রতিষ্ঠাকাল হতে  এ প্রতিষ্ঠানের সাথে থেকে দায়িত্ব পালন করেছি। এ প্রতিষ্ঠানে এলাকার ও এলাকার বাহিরের এতিম অসহায়  প্রায় ৫০ শিক্ষার্থী দ্বীনি লেখা পড়া করতো, কিন্ত এলাকার কিছু খারাপ লোকজন প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ দিয়ে সরকারী দান অনুদান বন্ধ করে দেওয়ায় এতে অর্থ সংকটে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় বিলুপ্তির দারপ্রান্তে।

এলাকাবাসী জানান, এ প্রতিষ্ঠানে এলাকার অনেক এতিম অসহায় গরিব ছেলে মেয়েরা বিনামূল্যে লেখা পড়া করতো। কিন্তু অর্থ সংকটের কারনে কর্তৃপক্ষ শিক্ষকদের বেতন দিতে না পারায় ঐ শিক্ষকরা প্রতিষ্ঠান ছেড়ে চলে যায়। পরে শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীরাও চলে যায়। তবে এ দ্বীনি প্রতিষ্ঠানটি পুনরায় চালু হলে এলাকার এতিম, দুঃস্থ, অসহায়,, গরীব ছেলে মেয়েরা বিনামূল্যে দ্বীনি আরবী শিক্ষার সুযোগ পাবে।

এ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটি পূন: উজ্জিবিত করতে সরকারের সহযোগীতার কোন বিকল্প নেই। তাই পূর্বের ন্যায় এ প্রতিষ্ঠানের নামীয় বার্ষিক বরাদ্দকৃত অনুদানের অর্থপুনরায় সহযোগীতা করে এ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি উদাত্ত আহব্বান জানান প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব মাওলানা তাজাম্মুল হোসেন। এদিকে ফরিদগঞ্জ উপজেলার সমাজ সেবা কর্মকর্তার সাথে একাধিকবার মুঠোফােনে যোগাযোগ করতে চাইলে প্রতিবেদককে কিছু বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।