ঢাকা ০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুই বাংলাদেশীকে পিটিয়ে সীমান্তে ফেলে গেছে বিএসএফ

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার কচুরগুল সীমান্তে দুই বাংলাদেশীকে পিটিয়ে মারাত্বক জখম করে সীমান্তে ফেলে রেখে যায় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। সোমবার (২৪ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে কচুরগুল বর্ডার থেকে তাদের একজনকে উদ্ধার করা হয়। ওপর জনকে ১৮০১ নং মেইন পিলারের কাছ থেকে বিজিবির লাঠিটিলার দায়িত্বে থাকা ক্যাম্প কমান্ডারের নির্দেশে সকাল ১১টার সময় স্থানীয়রা উদ্ধার করে।

বিজিবি জানায়, গত ২২ জুলাই দুই ব্যক্তি চট্টগ্রামের রামগড় বর্ডার হয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে প্রবেশ করে। সেখান থেকে আগরতলায় গিয়ে ট্রেনে উঠার সময় সন্দেহ হলে পুলিশ তাদের আটক করে বিএসএফএর হাতে হস্তান্তর করে। বিএসএফ তাদেরকে খুব বেশী মারধর করে। আটককৃত জাহাঙ্গীর আলীর বাড়ি কুড়িগ্রামের ভুড়িঙ্গামারী উপজেলায়। সে উপজেলার আনসার আলী ওরফে ভান্ডারীর ছেলে। অন্যজন খুলনার হৃদয় শেখ। জাহাঙ্গীর আলী বাংলাদেশে আসে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার দক্ষিণ কচুরগুল এলাকা দিয়ে। সেখানে সে স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে আটক হয়ে জানায় তার সাথের একজনকে সীমান্তে নদীতে ফেলে রেখেছে বিএসএফ। পরে বিজিবি ও স্থানীয়রা গিয়ে হৃদয় নামের ছেলেটিকে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ১৮০১ নং পিলারের পাশে নদী থেকে উদ্ধার করে।

উদ্ধার হওয়া জাহাঙ্গীর আলী জানায়, হৃদয় নামের ছেলেটি তাকে ঘুরতে যাবার কথা বলে ভারতে নিয়ে যায়। সেখানে যাবার পর তারা পুলিশের হাতে আটক হয়। তাদের বিএসএফ ও পুলিশ নির্দয়ভাবে পিটায়। কচুরগুল সীমান্তের কাছাকাছি ভারতের তারেকপুর ক্যাম্পে এনে বিএসএফ রড ও লাঠি দিয়ে তাদের মারধর করে। পরে ক্যাম্প থেকে নিয়ে এসে বাংলাদেশ সীমান্তে ফেলে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল মিয়া বলেন, সকালে একজন অপরিচিত লোক কচুরগুল আসলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে। তার পুরো শরীরজুড়ে আঘাতের চিহ। তার মাধ্যমে আমরা আরেকজনের খবর পাই। তাদের শরীরে যে রকম আঘাত করা হয়েছে তা অবর্ননীয়। মানুষ মানুষকে এভাবে আঘাত করতে পারেনা।

লাঠিটিলা বিওপির দায়িত্বে থাকা ক্যাম্প কমান্ডার সুবেদার গোলাম গাউছ জুড়ীরসময়কে জানান, সকালে স্থানীয়দের হাতে সীমান্তে অপরিচিত এক ব্যক্তি আটক হয়। পরে বিজিবি সেখানে উপস্থিত হয়ে আরেকজনকে উদ্ধার করে। দুই জনের শরীরে মারাত্বকভাবে জখমের দাগ রয়েছে। বিষয়টি আমরা বিজিবির উর্ধ্বতনদের জানিয়েছি। পরে তাদেরকে আমরা পুলিশের হেফাজতে দিয়েছি।

জুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মোশাররফ হোসেন জুড়ীরসময়কে জানান, তাদেরকে বিজিবি প্রহরায় উপজেলা স্বাস্থ্য চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।  অবস্থার  উন্নতি হলে এজাহার নিয়ে বর্ডার অতিক্রম করার অভিযোগে মামলা রুজু করা হবে।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দুই বাংলাদেশীকে পিটিয়ে সীমান্তে ফেলে গেছে বিএসএফ

আপডেট সময় ১১:২৩:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুলাই ২০২৩

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার কচুরগুল সীমান্তে দুই বাংলাদেশীকে পিটিয়ে মারাত্বক জখম করে সীমান্তে ফেলে রেখে যায় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। সোমবার (২৪ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে কচুরগুল বর্ডার থেকে তাদের একজনকে উদ্ধার করা হয়। ওপর জনকে ১৮০১ নং মেইন পিলারের কাছ থেকে বিজিবির লাঠিটিলার দায়িত্বে থাকা ক্যাম্প কমান্ডারের নির্দেশে সকাল ১১টার সময় স্থানীয়রা উদ্ধার করে।

বিজিবি জানায়, গত ২২ জুলাই দুই ব্যক্তি চট্টগ্রামের রামগড় বর্ডার হয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে প্রবেশ করে। সেখান থেকে আগরতলায় গিয়ে ট্রেনে উঠার সময় সন্দেহ হলে পুলিশ তাদের আটক করে বিএসএফএর হাতে হস্তান্তর করে। বিএসএফ তাদেরকে খুব বেশী মারধর করে। আটককৃত জাহাঙ্গীর আলীর বাড়ি কুড়িগ্রামের ভুড়িঙ্গামারী উপজেলায়। সে উপজেলার আনসার আলী ওরফে ভান্ডারীর ছেলে। অন্যজন খুলনার হৃদয় শেখ। জাহাঙ্গীর আলী বাংলাদেশে আসে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার দক্ষিণ কচুরগুল এলাকা দিয়ে। সেখানে সে স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে আটক হয়ে জানায় তার সাথের একজনকে সীমান্তে নদীতে ফেলে রেখেছে বিএসএফ। পরে বিজিবি ও স্থানীয়রা গিয়ে হৃদয় নামের ছেলেটিকে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ১৮০১ নং পিলারের পাশে নদী থেকে উদ্ধার করে।

উদ্ধার হওয়া জাহাঙ্গীর আলী জানায়, হৃদয় নামের ছেলেটি তাকে ঘুরতে যাবার কথা বলে ভারতে নিয়ে যায়। সেখানে যাবার পর তারা পুলিশের হাতে আটক হয়। তাদের বিএসএফ ও পুলিশ নির্দয়ভাবে পিটায়। কচুরগুল সীমান্তের কাছাকাছি ভারতের তারেকপুর ক্যাম্পে এনে বিএসএফ রড ও লাঠি দিয়ে তাদের মারধর করে। পরে ক্যাম্প থেকে নিয়ে এসে বাংলাদেশ সীমান্তে ফেলে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল মিয়া বলেন, সকালে একজন অপরিচিত লোক কচুরগুল আসলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে। তার পুরো শরীরজুড়ে আঘাতের চিহ। তার মাধ্যমে আমরা আরেকজনের খবর পাই। তাদের শরীরে যে রকম আঘাত করা হয়েছে তা অবর্ননীয়। মানুষ মানুষকে এভাবে আঘাত করতে পারেনা।

লাঠিটিলা বিওপির দায়িত্বে থাকা ক্যাম্প কমান্ডার সুবেদার গোলাম গাউছ জুড়ীরসময়কে জানান, সকালে স্থানীয়দের হাতে সীমান্তে অপরিচিত এক ব্যক্তি আটক হয়। পরে বিজিবি সেখানে উপস্থিত হয়ে আরেকজনকে উদ্ধার করে। দুই জনের শরীরে মারাত্বকভাবে জখমের দাগ রয়েছে। বিষয়টি আমরা বিজিবির উর্ধ্বতনদের জানিয়েছি। পরে তাদেরকে আমরা পুলিশের হেফাজতে দিয়েছি।

জুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মোশাররফ হোসেন জুড়ীরসময়কে জানান, তাদেরকে বিজিবি প্রহরায় উপজেলা স্বাস্থ্য চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।  অবস্থার  উন্নতি হলে এজাহার নিয়ে বর্ডার অতিক্রম করার অভিযোগে মামলা রুজু করা হবে।