ঢাকা ১১:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বজনদের আহাজারি, কান্নায় ভারী হাসপাতাল

ঝালকাঠিতে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে ১৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে। নিহতদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি। শনিবার (২২ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার ছত্রকান্দা এলাকায় ইউপি ভবনের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিহত ও আহতদের স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।  পুরো এলাকায় শোকের পরিবেশ বিরাজ করছে।

হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালে উপচেপড়া ভীড়। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এক নিহতের স্বজন সাংবাদিকদের জানান, ৮ বছর বয়সী ছেলেকে ডাক্তার দেখাতে বরিশালের বাসে ওঠেন বড় ভাই তারেক (৪০)। পথে ধীর গতিতে গাড়ি চালিয়ে যাত্রী সংগ্রহে নির্ধারিত সময়ের অধিকাংশই শেষ হয়ে যায়। পরে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে ছত্রকান্দায় পৌঁছালে গতি না কমিয়ে একটি অটোরিকশাকে সাইড দিতে গেলে গাড়িটি উল্টে পুকুরে পড়ে যায়। এতে বড় ভাই তারেক মারা গেলেও নাইমকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

নাইম জানালেন, ভাইয়ের শোকে পুরো পরিবার এখন মুহ্যমান। পরিবারের উপার্জন করার মতো একমাত্র ব্যক্তিকে হারিয়ে শোকে পাথর পরিবারের সদস্যরা। আরেক স্বজন গণমাধ্যমকে জানান, ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার বলাইবাড়ি এলাকার বাবার বাড়ি থেকে বরিশালের হিজলা উপজেলার শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন আইরিন (২৬)। সঙ্গে দেবর নয়ন (১৫) ও একবছর বয়সী শিশু কন্যা নিপা। বাসটি দুর্ঘটনায় পতিত হলে তিনজনই মারা যায়। হাসপাতালের বারান্দা বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন আইরিনের মা নুরনেহার বেগম।

এভাবে শুধু নুরনেহারই না, অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনরাও হাসপাতালের ফ্লোরে আহাজারি করছেন। এতে ভারী হয়ে উঠেছে সদর হাসপাতাল চত্বর। এদিকে, এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মামুন শিবলীকে আহ্বায়ক করে এই কমিটি গঠন করা হয়। কপমিটিকে তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

স্বজনদের আহাজারি, কান্নায় ভারী হাসপাতাল

আপডেট সময় ১০:৪৯:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুলাই ২০২৩

ঝালকাঠিতে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে ১৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে। নিহতদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি। শনিবার (২২ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার ছত্রকান্দা এলাকায় ইউপি ভবনের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিহত ও আহতদের স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।  পুরো এলাকায় শোকের পরিবেশ বিরাজ করছে।

হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালে উপচেপড়া ভীড়। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এক নিহতের স্বজন সাংবাদিকদের জানান, ৮ বছর বয়সী ছেলেকে ডাক্তার দেখাতে বরিশালের বাসে ওঠেন বড় ভাই তারেক (৪০)। পথে ধীর গতিতে গাড়ি চালিয়ে যাত্রী সংগ্রহে নির্ধারিত সময়ের অধিকাংশই শেষ হয়ে যায়। পরে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে ছত্রকান্দায় পৌঁছালে গতি না কমিয়ে একটি অটোরিকশাকে সাইড দিতে গেলে গাড়িটি উল্টে পুকুরে পড়ে যায়। এতে বড় ভাই তারেক মারা গেলেও নাইমকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

নাইম জানালেন, ভাইয়ের শোকে পুরো পরিবার এখন মুহ্যমান। পরিবারের উপার্জন করার মতো একমাত্র ব্যক্তিকে হারিয়ে শোকে পাথর পরিবারের সদস্যরা। আরেক স্বজন গণমাধ্যমকে জানান, ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার বলাইবাড়ি এলাকার বাবার বাড়ি থেকে বরিশালের হিজলা উপজেলার শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন আইরিন (২৬)। সঙ্গে দেবর নয়ন (১৫) ও একবছর বয়সী শিশু কন্যা নিপা। বাসটি দুর্ঘটনায় পতিত হলে তিনজনই মারা যায়। হাসপাতালের বারান্দা বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন আইরিনের মা নুরনেহার বেগম।

এভাবে শুধু নুরনেহারই না, অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনরাও হাসপাতালের ফ্লোরে আহাজারি করছেন। এতে ভারী হয়ে উঠেছে সদর হাসপাতাল চত্বর। এদিকে, এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মামুন শিবলীকে আহ্বায়ক করে এই কমিটি গঠন করা হয়। কপমিটিকে তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।