ঢাকা ০৯:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মরা তিস্তার বুকে বাঁশের সাঁকো ৯ লক্ষাধিক মানুষের জনদুর্ভোগ

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন মরা তিস্তার বুকে বাসের সাঁকো দিয়ে ৯ লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত আর প্রতিনিয়ত ঘটছে নানান দুর্ঘটনা। জনপ্রতিনিধিরা কথা দিয়ে রাখেনি কথা। শুধু নির্বাচন এলে হই হই রই রই তোরা সবাই গেলি কই এই বাসের সাঁকো হবে সেতু,জয় কর বাবা— তেতু।রংপুর জেলার কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌরসভার বাংলাবাজার গোল্ডেনের ঘাটের কথা।যেখানে দীর্ঘদিন রাজত্ব করেছেন দুই ভরসা পরিবার।বর্তমান বীর মুক্তিযোদ্ধা বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার পরেও নির্মাণ হয়নি একটি সেতু।স্থানীয় পৌর মেয়রের অসহযোগিতা রাজনৈতিক নানান সৃষ্ট সংকটের কারণেই সেতুটি হয়নি বলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির মতামত।

ভোট আইলে হামাক কয় ব্রিজ হইবে। কিন্তুক কোনদিন হইবে তাক কয় না। ভোটের আগে পৌরসভার মেয়র, উপজেলার চেয়ারম্যান সাইব ও বাণিজ্যমন্ত্রীর লোকেরা পর্যন্ত ব্রিজ বানে দিবার ওয়াদা দিচে। কিন্তু আইজ পর্যন্ত হামরা ব্রিজ দেকনো না। এ কেমন কথা বাহে হামরা মনে করছিনো,মানুষ মিছে কথা কয় গোপনে,আর এরা পোস্টার টাঙ্গিয়ে মিছা কথা কয় আজব দুনিয়ার এ বাবা।হামার কষ্ট বুঝি কায়ো দেখেনা চোখ থাকি তো মানুষ অন্ধ তাই আমার এই বাসের সাকুকণা পারাপারের একমাত্র সম্বল। আর এভাবেই আবেগময় কথা বললেন প্রবীণ শিক্ষক ও স্থানীয় কৃষক আয়নাল হক এই প্রবীণ মানুষ দুজনের বাড়ি রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌরসভার বাংলাবাজার গোল্ডেনের ঘাট এলাকার বাসিন্দা।এই জায়গার নানান দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়ে আছেন তারা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সব জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার আগে মরা তিস্তা নদীর উপর একটি পাকা সেতু নির্মাণ করার প্রতিশ্রুতি দেয় কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর আর কেউ কথা রাখেনা। কারো প্রতিশ্রুতি আলোর মুখ দেখেনি। ফলে শস্য ভান্ডারখ্যাত বাংলাবাজার গোল্ডেনের ঘাট এলাকায় কৃষি পণ্য পরিবহনে কৃষকদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। একইসঙ্গে ফসলের ন্যায় মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্হানীয় বাসিন্দারা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হারাগাছে তিস্তা বিধৌত চরাঞ্চলের ৯ গ্রামের মানুষের দুঃখ মরা তিস্তার এ শাখা নদীটি। হারাগাছ পৌরসভাসহ ৪ ইউনিয়নের ভিতর দিয়ে তিস্তা রেল সেতু পয়েন্টে গিয়ে মিলিত হয়েছে মরা তিস্তা নদীটি। বর্ষা মৌসুমে নৌকা আর বাঁশের সাকোই এলাকাবাসীর ভরসা। শুষ্ক মৌসুমে নদীর বুক চিরে পায়ে হেঁটে চলাচল করে এলাকাবাসী। হারাগাছ পৌরসভার গোল্ডেনের ঘাটে একটি টেকসই স্থায়ী পাকা সেতু নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের।

কথা হয় সাঁকো পারাপারের সময় প্রবীণ শিক্ষক এম আব্দুল গফুরের সাথে তিনি জানান, গোল্ডেন নামে একজন ব্যক্তি যিনি নৌকা দিয়ে যাতায়াত ব্যবস্থা চালু করেছিলেন তখন থেকে ওনার নাম অনুসারে গোল্ডেনের ঘাট। পরবর্তীতে কমিশনার মানিক, সাবেদ আলী ও তাজুলসহ গ্রামবাসীর সহযোগিতায় ২০১৩ সালে নৌকার পরিবর্তে ৩১০ হাত লম্বা বাঁশের সাঁকো তৈরি করে নদী পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়।

স্থানীয় মোজাহার আলী জানান, মরা তিস্তা নদীর ওপারে ৫টি বাজার, ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২টি মাদ্রাসা রয়েছে। সেতু না থাকায় সাধারণ মানুষের যাতায়াতে চরম বিপাকে পড়তে হয়। শিক্ষক আইয়ুব আলী জানান, পাকা সেতু না থাকায় তারা ভারি যানবাহন নিয়ে চলাচল করতে পারেন না। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নড়বড়ে এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।স্কুলপড়ুয়া সাঈদা, লোকমান ও সবুজ জানিয়েছে, তাদের খুব কষ্ট হয়। শুকনো মৌসুমে ভয়ভীতি না থাকলেও বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি বাড়লে চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। আমরা খুব ভয়ে ভয়ে সাঁকো পার হয়ে থাকি। সবাই বলে পাকা সেতু হবে কিন্তু হয় না। আমাদের কষ্ট কেউ দেখে না।কৃষক শফিকুল ইসলাম জানায়, পাকা সেতু না থাকায় উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিক্রয় করতে বহু দূর ঘুরে বাজারে নিতে হয়। এতে পরিবহণ খরচ বেশি হয়। যথাসময়ে হাটবাজারে পৌঁছানো সম্ভব হয় না।

স্থানীয় মজিবর রহমান জানান, পাকা সেতু না থাকায় রাজপুর ইউপির চিনাতুলি, প্রেমের বাজার, খুনিয়াগাছ ইউপির তালপট্রি, হরিণ চড়া, মিলন বাজার, টাংরীর বাজার, হারাগাছ পৌরসভার চরচতুরা, ধুমগাড়া, হারাগাছ ইউপির পল্লীমারী গ্রামের শিক্ষার্থীসহ প্রায় অর্থ লক্ষাধিক মানুষ পৌরসভা ও উপজেলা সদরে যাতায়াত করে।

এ গ্রামগুলোতে আলু, ভুট্টা, ধান, পাট, গম, মরিচ, বাদামসহ বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি উৎপাদন হয়। এসব কৃষি পণ্য হাট-বাজারে নিতে হলে অনেক পথ ঘুরে যেতে হয়। অথচ গোল্ডেনের ঘাটে পাকা সেতু নির্মাণ হলে অর্ধেক পথ কমে আসবে, সেই সাথে এলাকার কৃষকরা পাবে তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্যে।

হারাগাছ পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল কাদের রানা সরকার সাংবাদিক দের বলেন, গোল্ডেনের ঘাটে একটি স্থায়ী পাকা সেতু নির্মাণ জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কারণ এটি ৮ নম্বর এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের পারাপারের অন্যতম যোগাযোগ মাধ্যম এই সেতুটি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হারাগাছ পৌরসভার মেয়র এরশাদুল হকের দৈনিক আমাদের মাতৃভূমিকে জানায়,এই মানুষগুলো দুর্ভোগের নিমিত্বে এই সেতু তৈরি করা সময়ের দাবি জনগণের সাথে একত্বতা প্রকাশ করে সেতুটি যত দ্রুত সম্ভব নির্মাণ করা যায় তাহা প্রক্রিয়াধীন আছে আমাদের মাথার।
Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মরা তিস্তার বুকে বাঁশের সাঁকো ৯ লক্ষাধিক মানুষের জনদুর্ভোগ

আপডেট সময় ০৪:১৯:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ জুলাই ২০২৩

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন মরা তিস্তার বুকে বাসের সাঁকো দিয়ে ৯ লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত আর প্রতিনিয়ত ঘটছে নানান দুর্ঘটনা। জনপ্রতিনিধিরা কথা দিয়ে রাখেনি কথা। শুধু নির্বাচন এলে হই হই রই রই তোরা সবাই গেলি কই এই বাসের সাঁকো হবে সেতু,জয় কর বাবা— তেতু।রংপুর জেলার কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌরসভার বাংলাবাজার গোল্ডেনের ঘাটের কথা।যেখানে দীর্ঘদিন রাজত্ব করেছেন দুই ভরসা পরিবার।বর্তমান বীর মুক্তিযোদ্ধা বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার পরেও নির্মাণ হয়নি একটি সেতু।স্থানীয় পৌর মেয়রের অসহযোগিতা রাজনৈতিক নানান সৃষ্ট সংকটের কারণেই সেতুটি হয়নি বলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির মতামত।

ভোট আইলে হামাক কয় ব্রিজ হইবে। কিন্তুক কোনদিন হইবে তাক কয় না। ভোটের আগে পৌরসভার মেয়র, উপজেলার চেয়ারম্যান সাইব ও বাণিজ্যমন্ত্রীর লোকেরা পর্যন্ত ব্রিজ বানে দিবার ওয়াদা দিচে। কিন্তু আইজ পর্যন্ত হামরা ব্রিজ দেকনো না। এ কেমন কথা বাহে হামরা মনে করছিনো,মানুষ মিছে কথা কয় গোপনে,আর এরা পোস্টার টাঙ্গিয়ে মিছা কথা কয় আজব দুনিয়ার এ বাবা।হামার কষ্ট বুঝি কায়ো দেখেনা চোখ থাকি তো মানুষ অন্ধ তাই আমার এই বাসের সাকুকণা পারাপারের একমাত্র সম্বল। আর এভাবেই আবেগময় কথা বললেন প্রবীণ শিক্ষক ও স্থানীয় কৃষক আয়নাল হক এই প্রবীণ মানুষ দুজনের বাড়ি রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌরসভার বাংলাবাজার গোল্ডেনের ঘাট এলাকার বাসিন্দা।এই জায়গার নানান দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়ে আছেন তারা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সব জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার আগে মরা তিস্তা নদীর উপর একটি পাকা সেতু নির্মাণ করার প্রতিশ্রুতি দেয় কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর আর কেউ কথা রাখেনা। কারো প্রতিশ্রুতি আলোর মুখ দেখেনি। ফলে শস্য ভান্ডারখ্যাত বাংলাবাজার গোল্ডেনের ঘাট এলাকায় কৃষি পণ্য পরিবহনে কৃষকদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। একইসঙ্গে ফসলের ন্যায় মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্হানীয় বাসিন্দারা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হারাগাছে তিস্তা বিধৌত চরাঞ্চলের ৯ গ্রামের মানুষের দুঃখ মরা তিস্তার এ শাখা নদীটি। হারাগাছ পৌরসভাসহ ৪ ইউনিয়নের ভিতর দিয়ে তিস্তা রেল সেতু পয়েন্টে গিয়ে মিলিত হয়েছে মরা তিস্তা নদীটি। বর্ষা মৌসুমে নৌকা আর বাঁশের সাকোই এলাকাবাসীর ভরসা। শুষ্ক মৌসুমে নদীর বুক চিরে পায়ে হেঁটে চলাচল করে এলাকাবাসী। হারাগাছ পৌরসভার গোল্ডেনের ঘাটে একটি টেকসই স্থায়ী পাকা সেতু নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের।

কথা হয় সাঁকো পারাপারের সময় প্রবীণ শিক্ষক এম আব্দুল গফুরের সাথে তিনি জানান, গোল্ডেন নামে একজন ব্যক্তি যিনি নৌকা দিয়ে যাতায়াত ব্যবস্থা চালু করেছিলেন তখন থেকে ওনার নাম অনুসারে গোল্ডেনের ঘাট। পরবর্তীতে কমিশনার মানিক, সাবেদ আলী ও তাজুলসহ গ্রামবাসীর সহযোগিতায় ২০১৩ সালে নৌকার পরিবর্তে ৩১০ হাত লম্বা বাঁশের সাঁকো তৈরি করে নদী পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়।

স্থানীয় মোজাহার আলী জানান, মরা তিস্তা নদীর ওপারে ৫টি বাজার, ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২টি মাদ্রাসা রয়েছে। সেতু না থাকায় সাধারণ মানুষের যাতায়াতে চরম বিপাকে পড়তে হয়। শিক্ষক আইয়ুব আলী জানান, পাকা সেতু না থাকায় তারা ভারি যানবাহন নিয়ে চলাচল করতে পারেন না। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নড়বড়ে এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।স্কুলপড়ুয়া সাঈদা, লোকমান ও সবুজ জানিয়েছে, তাদের খুব কষ্ট হয়। শুকনো মৌসুমে ভয়ভীতি না থাকলেও বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি বাড়লে চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। আমরা খুব ভয়ে ভয়ে সাঁকো পার হয়ে থাকি। সবাই বলে পাকা সেতু হবে কিন্তু হয় না। আমাদের কষ্ট কেউ দেখে না।কৃষক শফিকুল ইসলাম জানায়, পাকা সেতু না থাকায় উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিক্রয় করতে বহু দূর ঘুরে বাজারে নিতে হয়। এতে পরিবহণ খরচ বেশি হয়। যথাসময়ে হাটবাজারে পৌঁছানো সম্ভব হয় না।

স্থানীয় মজিবর রহমান জানান, পাকা সেতু না থাকায় রাজপুর ইউপির চিনাতুলি, প্রেমের বাজার, খুনিয়াগাছ ইউপির তালপট্রি, হরিণ চড়া, মিলন বাজার, টাংরীর বাজার, হারাগাছ পৌরসভার চরচতুরা, ধুমগাড়া, হারাগাছ ইউপির পল্লীমারী গ্রামের শিক্ষার্থীসহ প্রায় অর্থ লক্ষাধিক মানুষ পৌরসভা ও উপজেলা সদরে যাতায়াত করে।

এ গ্রামগুলোতে আলু, ভুট্টা, ধান, পাট, গম, মরিচ, বাদামসহ বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি উৎপাদন হয়। এসব কৃষি পণ্য হাট-বাজারে নিতে হলে অনেক পথ ঘুরে যেতে হয়। অথচ গোল্ডেনের ঘাটে পাকা সেতু নির্মাণ হলে অর্ধেক পথ কমে আসবে, সেই সাথে এলাকার কৃষকরা পাবে তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্যে।

হারাগাছ পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল কাদের রানা সরকার সাংবাদিক দের বলেন, গোল্ডেনের ঘাটে একটি স্থায়ী পাকা সেতু নির্মাণ জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কারণ এটি ৮ নম্বর এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের পারাপারের অন্যতম যোগাযোগ মাধ্যম এই সেতুটি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হারাগাছ পৌরসভার মেয়র এরশাদুল হকের দৈনিক আমাদের মাতৃভূমিকে জানায়,এই মানুষগুলো দুর্ভোগের নিমিত্বে এই সেতু তৈরি করা সময়ের দাবি জনগণের সাথে একত্বতা প্রকাশ করে সেতুটি যত দ্রুত সম্ভব নির্মাণ করা যায় তাহা প্রক্রিয়াধীন আছে আমাদের মাথার।