ঢাকা ১২:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বগুড়ায় পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ, স্কুলছাত্রীসহ আহত ৮০ জন

বগুড়ায় বিএনপির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে স্কুলছাত্রী ও পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৮০ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পৌরশহরের ইয়াকুবিয়া স্কুল মোড় থেকে বিএনপির একদফা দাবিতে ডাকা পদযাত্রায় এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

জানা যায়, পৌরশহরের বনানী মোড় থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা পদযাত্রা নিয়ে ইয়াকুবিয়া স্কুল মোড়ে এসে পুলিশের দিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। পুলিশ নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে এবং শটগানের গুলি চালায়। এক পর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা শহরের নবাববাড়ী রোডে দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান নেন। সেখানেও পুলিশের সঙ্গে কয়েকদফা সংঘর্ষ হয়।

এ সময় পুলিশ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের দিকে এগিয়ে গেলে তিনটি হাত বোমা নিক্ষেপ করা হয়। সংঘর্ষে পুলিশের অন্তত ২০ সদস্য, ২৭ স্কুলছাত্রী ও বিএনপির অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহত স্কুলছাত্রীরা সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তাদের অবস্থা শঙ্কামুক্ত৷

ঘটনার পর থেকে বগুড়া শহরজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। দোকানপাট, মার্কেট ও শপিংমল বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিকে পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রায় অংশ নিতে আসা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শহরের সাতমাথায় লাঠিসোটা হাতে অবস্থান নিয়ে আছেন।

সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. শফিক আমিন কাজল বলেন, ইয়াকুবিয়া স্কুলের ২৭ জন ছাত্রী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা হচ্ছে, তবে অবস্থা গুরুতর নয়। শঙ্কার কিছু নেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা হচ্ছে।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা কোনো কারণ ছাড়াই পুলিশ হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়েছে৷ তাদের পদযাত্রার একটি অংশ বনানী থেকে ইয়াকুবিয়া মোড়ে এসেই বাঁশ, লাঠিসোটা ও হাতবোমা নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালায়। পরে তারা দলীয় কার্যালয়ে আশ্রয় নিয়ে সেখান থেকে হাত বোমা ছুড়তে থাকে। এখন পর্যন্ত আমাদের অন্তত ১৫-২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

বগুড়া জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নূর আলম সিদ্দিকী রিগ্যান বলেন, বনানী থেকে পদযাত্রা ইয়াকুবিয়া মোড়ে আসার পরই পুলিশ অতর্কিত হামলা চালায়। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নষ্ট করতে পুলিশ এমন করেছে। আমাদের অন্তত ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। ৬-৮ জনকে আটক করা হয়েছে। বিএনপি কার্যালয় থেকে হাত বোমা নিক্ষেপের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের অফিস থেকে এরকম কিছু ঘটেনি।

শেখ হাসিনার পদত্যাগসহ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফা দাবিতে বগুড়ায় পৃথক দুটি পদযাত্রা করে বিএনপি। জেলা বিএনপির উদ্যোগে শহরের মাড়িডালি বিমানমোড় ও বনানী মোড় থেকে পৃথকভাবে পদযাত্রা দুটি শুরু হয়।

মাটিডালি থেকে শুরু হওয়া পদযাত্রায় নেতৃত্ব দেন জেলা বিএনপি সভাপতি ও বগুড়া পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম বাদশা। আর বনানী মোড় এলাকা থেকে পদযাত্রায় নেতৃত্ব দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বগুড়ায় পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ, স্কুলছাত্রীসহ আহত ৮০ জন

আপডেট সময় ০৮:৪৪:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই ২০২৩

বগুড়ায় বিএনপির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে স্কুলছাত্রী ও পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৮০ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পৌরশহরের ইয়াকুবিয়া স্কুল মোড় থেকে বিএনপির একদফা দাবিতে ডাকা পদযাত্রায় এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

জানা যায়, পৌরশহরের বনানী মোড় থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা পদযাত্রা নিয়ে ইয়াকুবিয়া স্কুল মোড়ে এসে পুলিশের দিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। পুলিশ নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে এবং শটগানের গুলি চালায়। এক পর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা শহরের নবাববাড়ী রোডে দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান নেন। সেখানেও পুলিশের সঙ্গে কয়েকদফা সংঘর্ষ হয়।

এ সময় পুলিশ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের দিকে এগিয়ে গেলে তিনটি হাত বোমা নিক্ষেপ করা হয়। সংঘর্ষে পুলিশের অন্তত ২০ সদস্য, ২৭ স্কুলছাত্রী ও বিএনপির অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহত স্কুলছাত্রীরা সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তাদের অবস্থা শঙ্কামুক্ত৷

ঘটনার পর থেকে বগুড়া শহরজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। দোকানপাট, মার্কেট ও শপিংমল বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিকে পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রায় অংশ নিতে আসা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শহরের সাতমাথায় লাঠিসোটা হাতে অবস্থান নিয়ে আছেন।

সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. শফিক আমিন কাজল বলেন, ইয়াকুবিয়া স্কুলের ২৭ জন ছাত্রী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা হচ্ছে, তবে অবস্থা গুরুতর নয়। শঙ্কার কিছু নেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা হচ্ছে।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা কোনো কারণ ছাড়াই পুলিশ হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়েছে৷ তাদের পদযাত্রার একটি অংশ বনানী থেকে ইয়াকুবিয়া মোড়ে এসেই বাঁশ, লাঠিসোটা ও হাতবোমা নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালায়। পরে তারা দলীয় কার্যালয়ে আশ্রয় নিয়ে সেখান থেকে হাত বোমা ছুড়তে থাকে। এখন পর্যন্ত আমাদের অন্তত ১৫-২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

বগুড়া জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নূর আলম সিদ্দিকী রিগ্যান বলেন, বনানী থেকে পদযাত্রা ইয়াকুবিয়া মোড়ে আসার পরই পুলিশ অতর্কিত হামলা চালায়। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নষ্ট করতে পুলিশ এমন করেছে। আমাদের অন্তত ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। ৬-৮ জনকে আটক করা হয়েছে। বিএনপি কার্যালয় থেকে হাত বোমা নিক্ষেপের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের অফিস থেকে এরকম কিছু ঘটেনি।

শেখ হাসিনার পদত্যাগসহ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফা দাবিতে বগুড়ায় পৃথক দুটি পদযাত্রা করে বিএনপি। জেলা বিএনপির উদ্যোগে শহরের মাড়িডালি বিমানমোড় ও বনানী মোড় থেকে পৃথকভাবে পদযাত্রা দুটি শুরু হয়।

মাটিডালি থেকে শুরু হওয়া পদযাত্রায় নেতৃত্ব দেন জেলা বিএনপি সভাপতি ও বগুড়া পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম বাদশা। আর বনানী মোড় এলাকা থেকে পদযাত্রায় নেতৃত্ব দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা।