ঢাকা ০৮:৩৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

বাঘায় ভুয়া চিকিৎসকদের রমরমা বাণিজ্য

রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় ভুয়া চিকিৎসকদের রমরমা বাণিজ্য চলছে। কম্পাউন্ডার থেকে অনেকে চিকিৎসক হয়েছেন। তাদের অপচিকিৎসায় প্রতিনিয়ত প্রতারিত ও অসুস্থ সেই সঙ্গে ভুল চিকিৎসায় প্রাণ হারাচ্ছে অনেক মানুষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাঘা উপজেলার ফতেপুর বাউসার প্রেমতলি বাজারে ছোট্ট ঘরে চেম্বার খুলে বসেছেন কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার(chcp) আসাদুল আলম। দোকান ঘরে রাখেনি কোন সাইনবোর্ড। করোনা রোগী (করোনা মহামারী সময়ে)থেকে শুরু করে প্রসূতি মায়েদের, শিশু, বয়স্ক সহ সব রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকেন তিনি। ৫০ টাকা ফি নিয়ে রোগী দেখেন প্রতিনিয়ত, আগত রেগীদের লিখে দেন ঔষধের প্রেসক্রিপশন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের ধন্দহ পশ্চিম পাড়া গ্রামের মো: সাদেক মহুরী ছেলে আসাদুল ইসলাম। দিঘা কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথকেয়ার প্রোভাইডার হিসেবে কাজ করেন তিনি । গ্রামের সহজ সরল জনসাধারণ ডাক্তার ভেবে আসাদুলের কাছে চিকিৎসা নিতে এসে রিতিমতো হচ্ছেন ভুল চিকিৎসার প্রতারনার শিকার। দীর্ঘদিন ধরেই চলছে তার এই ডাক্তার সেজে প্রতারণা।

আসাদুলের কাছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের কাছে জানতে চাইলে তারা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, আমরা তো দেখেছি তিনি সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিকের ডাক্তার। এজন্য বিভিন্ন রোগের সমস্যা নিয়ে এসেছি। তিনি ৫০ টাকা ফি নিয়ে আমাদের প্রেসক্রিপশন করে দেন। প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে অন্য দোকান থেকে ঔষধ ক্রয় করি।

এই বিষয়ে জানতে স্থানীয় বাজারের ঔষধের দোকান গুলোতে গেলে তারা জানান, আসাদুল ইসলাম দিঘা কমিউনিটি ক্লিনিকের একজন কমিউনিটি হেলথকেয়ার প্রোভাইডার। নিজেকে পরিচয় দেয় ডাক্তার এবং প্রেসক্রিপশন করে। মাঝে মধ্যেই রুগীদের ভুল চিকিৎসা দিয়ে প্রেসক্রিপশন করেন। তবে আমাদের নাম প্রকাশ করেন না বলে অনুরোধ জানায় আমাদের প্রতিবেদককে।

উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে অসংখ্য ভুয়া চিকিৎসকের সন্ধান পাওয়া গেছে। বছরের পর বছর তারা বড় বড় সাইনবোর্ড টানিয়ে চিকিৎসার নামে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন। মাঝেমধ্যে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা চালালেও পুনরায় তারা চিকিৎসা বাণিজ্যে ফিরে যাচ্ছেন।

এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিরা জানান , এটা রোগীদের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণার করা হচ্ছে। এসব ভুয়া ডাক্তাররের চিকিৎসার কারণে গ্রামে-গঞ্জে অসংখ্য রোগী অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন। গ্রামে-গঞ্জে এত বেশি কথিত ডাক্তার বা পল্লী চিকিৎসকরা নামের আগে ডাক্তার ব্যবহার করছেন যে এটি আসলে নির্মূল করতে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে এবং এটা বন্ধ করতে হলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সহ সরকারেরকে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।

এলাকার জনপ্রতিনিধি দের মতে, এই সব নামধারী চিকিৎসক দেশের শত্রু। দীর্ঘদিন ধরেই জগদ্দল পাথরের মতো তারা জনগণের ঘাড়ের ওপর চেপে বসে আছেন। মানুষ প্রতারিত হচ্ছে। অপচিকিৎসায় মারাও যাচ্ছে অনেকে। প্রশাসনের উচিত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।

এ বিষয়ে আসাদুল ইসলাম এর সাথে কথা বলতে গেলে তিনি সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়।

বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পপ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আশাদুজ্জামান আসাদ বলেন, তিনি ডাক্তার লিখতে পারবেন না। তবে পরামর্শ দিতে পারবেন। সঠিক অভিযোগ পেলে আমি ব্যবস্থা নিব।

এসব চিকিৎসক সম্পর্কে রাজশাহী সিভিল সার্জন ডাঃ আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, প্রথমত আপনারা জানেন ডাক্তার ও প্রেসক্রাইব লিখতে পারবে না। আপনারা বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ আশাদুজ্জামানের সঙ্গে কথা বলেন প্রয়োজন হলে আমার সঙ্গে আবার যোগাযোগ করবেন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মঠবাড়িয়ায় স্কুল ছাত্রীকে মারধরের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ২

বাঘায় ভুয়া চিকিৎসকদের রমরমা বাণিজ্য

আপডেট সময় ০৬:০১:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ জুলাই ২০২৩

রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় ভুয়া চিকিৎসকদের রমরমা বাণিজ্য চলছে। কম্পাউন্ডার থেকে অনেকে চিকিৎসক হয়েছেন। তাদের অপচিকিৎসায় প্রতিনিয়ত প্রতারিত ও অসুস্থ সেই সঙ্গে ভুল চিকিৎসায় প্রাণ হারাচ্ছে অনেক মানুষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাঘা উপজেলার ফতেপুর বাউসার প্রেমতলি বাজারে ছোট্ট ঘরে চেম্বার খুলে বসেছেন কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার(chcp) আসাদুল আলম। দোকান ঘরে রাখেনি কোন সাইনবোর্ড। করোনা রোগী (করোনা মহামারী সময়ে)থেকে শুরু করে প্রসূতি মায়েদের, শিশু, বয়স্ক সহ সব রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকেন তিনি। ৫০ টাকা ফি নিয়ে রোগী দেখেন প্রতিনিয়ত, আগত রেগীদের লিখে দেন ঔষধের প্রেসক্রিপশন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের ধন্দহ পশ্চিম পাড়া গ্রামের মো: সাদেক মহুরী ছেলে আসাদুল ইসলাম। দিঘা কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথকেয়ার প্রোভাইডার হিসেবে কাজ করেন তিনি । গ্রামের সহজ সরল জনসাধারণ ডাক্তার ভেবে আসাদুলের কাছে চিকিৎসা নিতে এসে রিতিমতো হচ্ছেন ভুল চিকিৎসার প্রতারনার শিকার। দীর্ঘদিন ধরেই চলছে তার এই ডাক্তার সেজে প্রতারণা।

আসাদুলের কাছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের কাছে জানতে চাইলে তারা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, আমরা তো দেখেছি তিনি সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিকের ডাক্তার। এজন্য বিভিন্ন রোগের সমস্যা নিয়ে এসেছি। তিনি ৫০ টাকা ফি নিয়ে আমাদের প্রেসক্রিপশন করে দেন। প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে অন্য দোকান থেকে ঔষধ ক্রয় করি।

এই বিষয়ে জানতে স্থানীয় বাজারের ঔষধের দোকান গুলোতে গেলে তারা জানান, আসাদুল ইসলাম দিঘা কমিউনিটি ক্লিনিকের একজন কমিউনিটি হেলথকেয়ার প্রোভাইডার। নিজেকে পরিচয় দেয় ডাক্তার এবং প্রেসক্রিপশন করে। মাঝে মধ্যেই রুগীদের ভুল চিকিৎসা দিয়ে প্রেসক্রিপশন করেন। তবে আমাদের নাম প্রকাশ করেন না বলে অনুরোধ জানায় আমাদের প্রতিবেদককে।

উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে অসংখ্য ভুয়া চিকিৎসকের সন্ধান পাওয়া গেছে। বছরের পর বছর তারা বড় বড় সাইনবোর্ড টানিয়ে চিকিৎসার নামে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন। মাঝেমধ্যে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা চালালেও পুনরায় তারা চিকিৎসা বাণিজ্যে ফিরে যাচ্ছেন।

এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিরা জানান , এটা রোগীদের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণার করা হচ্ছে। এসব ভুয়া ডাক্তাররের চিকিৎসার কারণে গ্রামে-গঞ্জে অসংখ্য রোগী অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন। গ্রামে-গঞ্জে এত বেশি কথিত ডাক্তার বা পল্লী চিকিৎসকরা নামের আগে ডাক্তার ব্যবহার করছেন যে এটি আসলে নির্মূল করতে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে এবং এটা বন্ধ করতে হলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সহ সরকারেরকে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।

এলাকার জনপ্রতিনিধি দের মতে, এই সব নামধারী চিকিৎসক দেশের শত্রু। দীর্ঘদিন ধরেই জগদ্দল পাথরের মতো তারা জনগণের ঘাড়ের ওপর চেপে বসে আছেন। মানুষ প্রতারিত হচ্ছে। অপচিকিৎসায় মারাও যাচ্ছে অনেকে। প্রশাসনের উচিত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।

এ বিষয়ে আসাদুল ইসলাম এর সাথে কথা বলতে গেলে তিনি সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়।

বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পপ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আশাদুজ্জামান আসাদ বলেন, তিনি ডাক্তার লিখতে পারবেন না। তবে পরামর্শ দিতে পারবেন। সঠিক অভিযোগ পেলে আমি ব্যবস্থা নিব।

এসব চিকিৎসক সম্পর্কে রাজশাহী সিভিল সার্জন ডাঃ আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, প্রথমত আপনারা জানেন ডাক্তার ও প্রেসক্রাইব লিখতে পারবে না। আপনারা বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ আশাদুজ্জামানের সঙ্গে কথা বলেন প্রয়োজন হলে আমার সঙ্গে আবার যোগাযোগ করবেন।