ঢাকা ০২:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ফেসবুক লাইভে প্রেমিকার আত্মহত্যাই প্রেমিক গ্রেফতার

ফেসবুকে এক যুবকের সাথে তরুণীর পরিচয়। সেই পরিচয় থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে দু’জনের। গোপনে হয় দেখা সাক্ষাত। ফেসবুক লাইভে গল্প চলতে থাকে তরুণী সানজিদা (১৪) এবং যুবক প্রেমিক নাদিম মোস্তফার (২৬)। তরুণী সানজিদা ৮ম শ্রেণীতে পড়তো। সে রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার খরবোনা এলাকায় মোঃ মিলনের মেয়ে । অপর দিকে প্রেমিক মোঃ নাদিম মোস্তফা রাজশাহীর বাগমারা থানাধীন তাহেরপুর থানা এবং পৌরসভার মুথুরাপুর গ্রামের মোঃ সাইদুর রহমানের ছেলে। এরই মধ্যে যুবক নাদিম তার বাবা-মা’কে দিয়ে তরুণী সানজিদার মা’কে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। রাসিক নির্বাচন শেষে দুই পরিবার মিলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। এমনই কথা হয় তাদের মধ্যে।

প্রেমিক নাদিম নিয়মিত রাজশাহী মহানগরীতে এসে তরুণীকে মোটরসাইকেলে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ায়। তাদের দু’জনের মধ্যে গভীর প্রেম-ভালবাসা। কেউ কাউকে ছাড়া বাঁচবেনা। সম্পর্কের প্রায় দুই মাসের মাথায় অজ্ঞাত কারনে নাদিম প্রেমিকা তরুণীর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। বিয়ে করবে-না বলেও জানায়। এরই ধারা বাহিকতায় গত (১৬ জুন ২০২৩) গভীর রাতে তরুণী গলায় ওড়না পেচিয়ে ঘরের তীরের সাথে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় চেয়ারে দাঁড়িয়ে প্রেমিক নাদিমকে ভিডিও কল দেয়। হাতে কোরআন শরীফ নিয়ে কথা বলতে দেখা যায়। তাদের দু’জনের মধ্যে কথার এক পর্যায়ে তরুণী পায়ের নিচের চেয়ার ফেলে দেয় এবং গলায় ফাঁস লেগে ঝুলে মারা যায়। এভাবেই ঘটনার বর্ননা করেন তরুণী সানজিদার মা সখিনা বেগম।

তিনি আরও বলেন, ১৬ জুন সকালে নাস্তা খাওয়ার জন্য সানজিদাকে ডাকতে গিয়ে দেখি গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় সানজিদার নিথর দেহ ঝুলে আছে। পরে বোয়ালিয়া মডেল থানায় খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ মৃত সানজিদার লাশ উদ্ধার করে রামেক হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এদিন ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এ বিষয়ে একটি (ইউডি) অপমৃত্যুর মামলা রুজু হয়।

এদিকে, সানজিদার চাচা শেখ মোঃ রুমেল সানজিদার ব্যবহৃত এ্যানড্রয়েড ফোন চেক করতে থাকে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে প্রেমিক যুগলের বেশ কিছু ঘনিষ্ট ছবি, অডিও রের্কড, ভিডিও এবং গলায় ফাঁস দেয়া মুহূর্তের ছবি উদ্ধার করে। এরপর বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ সোহরাওয়ার্দী হোসেনকে সকল ডকুমেন্টগুলি দেখায়। সমস্ত বিষয় পর্যলোচনা করে প্রেমিক নাদিমের বিরুদ্ধে ৩০৬ ধারায় একটি মামলা রুজু হয়। মামলা নং-১৩, তাং-১০/০৭/২০২৩।

মামলার পরই সোমবার (১০ জুলাই) রাতে তাহেরপুর পৌর মার্কেটে অভিযান চালিয়ে ঘাতক প্রেমিক নাদিমকে গ্রেফতার করে।

অভিযানটি পরিচালনা করেন, বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ সোহরাওয়ার্দী হোসেনের নেতৃত্বে এসআই আব্দুল আউয়াল, এএসআই রিপন সরকার, কন্সটেবল মোঃ রকি ও ইউনূস।

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় গ্রেফতার নাদিমকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানান ওসি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মঠবাড়িয়ায় স্কুল ছাত্রীকে মারধরের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ২

ফেসবুক লাইভে প্রেমিকার আত্মহত্যাই প্রেমিক গ্রেফতার

আপডেট সময় ১১:০৩:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ জুলাই ২০২৩

ফেসবুকে এক যুবকের সাথে তরুণীর পরিচয়। সেই পরিচয় থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে দু’জনের। গোপনে হয় দেখা সাক্ষাত। ফেসবুক লাইভে গল্প চলতে থাকে তরুণী সানজিদা (১৪) এবং যুবক প্রেমিক নাদিম মোস্তফার (২৬)। তরুণী সানজিদা ৮ম শ্রেণীতে পড়তো। সে রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার খরবোনা এলাকায় মোঃ মিলনের মেয়ে । অপর দিকে প্রেমিক মোঃ নাদিম মোস্তফা রাজশাহীর বাগমারা থানাধীন তাহেরপুর থানা এবং পৌরসভার মুথুরাপুর গ্রামের মোঃ সাইদুর রহমানের ছেলে। এরই মধ্যে যুবক নাদিম তার বাবা-মা’কে দিয়ে তরুণী সানজিদার মা’কে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। রাসিক নির্বাচন শেষে দুই পরিবার মিলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। এমনই কথা হয় তাদের মধ্যে।

প্রেমিক নাদিম নিয়মিত রাজশাহী মহানগরীতে এসে তরুণীকে মোটরসাইকেলে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ায়। তাদের দু’জনের মধ্যে গভীর প্রেম-ভালবাসা। কেউ কাউকে ছাড়া বাঁচবেনা। সম্পর্কের প্রায় দুই মাসের মাথায় অজ্ঞাত কারনে নাদিম প্রেমিকা তরুণীর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। বিয়ে করবে-না বলেও জানায়। এরই ধারা বাহিকতায় গত (১৬ জুন ২০২৩) গভীর রাতে তরুণী গলায় ওড়না পেচিয়ে ঘরের তীরের সাথে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় চেয়ারে দাঁড়িয়ে প্রেমিক নাদিমকে ভিডিও কল দেয়। হাতে কোরআন শরীফ নিয়ে কথা বলতে দেখা যায়। তাদের দু’জনের মধ্যে কথার এক পর্যায়ে তরুণী পায়ের নিচের চেয়ার ফেলে দেয় এবং গলায় ফাঁস লেগে ঝুলে মারা যায়। এভাবেই ঘটনার বর্ননা করেন তরুণী সানজিদার মা সখিনা বেগম।

তিনি আরও বলেন, ১৬ জুন সকালে নাস্তা খাওয়ার জন্য সানজিদাকে ডাকতে গিয়ে দেখি গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় সানজিদার নিথর দেহ ঝুলে আছে। পরে বোয়ালিয়া মডেল থানায় খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ মৃত সানজিদার লাশ উদ্ধার করে রামেক হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এদিন ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এ বিষয়ে একটি (ইউডি) অপমৃত্যুর মামলা রুজু হয়।

এদিকে, সানজিদার চাচা শেখ মোঃ রুমেল সানজিদার ব্যবহৃত এ্যানড্রয়েড ফোন চেক করতে থাকে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে প্রেমিক যুগলের বেশ কিছু ঘনিষ্ট ছবি, অডিও রের্কড, ভিডিও এবং গলায় ফাঁস দেয়া মুহূর্তের ছবি উদ্ধার করে। এরপর বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ সোহরাওয়ার্দী হোসেনকে সকল ডকুমেন্টগুলি দেখায়। সমস্ত বিষয় পর্যলোচনা করে প্রেমিক নাদিমের বিরুদ্ধে ৩০৬ ধারায় একটি মামলা রুজু হয়। মামলা নং-১৩, তাং-১০/০৭/২০২৩।

মামলার পরই সোমবার (১০ জুলাই) রাতে তাহেরপুর পৌর মার্কেটে অভিযান চালিয়ে ঘাতক প্রেমিক নাদিমকে গ্রেফতার করে।

অভিযানটি পরিচালনা করেন, বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ সোহরাওয়ার্দী হোসেনের নেতৃত্বে এসআই আব্দুল আউয়াল, এএসআই রিপন সরকার, কন্সটেবল মোঃ রকি ও ইউনূস।

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় গ্রেফতার নাদিমকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানান ওসি।