হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার পৌর এলাকার যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও ৭১ এর মানবতা বিরোধী যুদ্ধ অপরাধ মামলার গুরত্বপূর্ন সাক্ষী ইয়াকুব আলী এখন পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট পান নি।
মুক্তিযুদ্ধে তিনি ৩ নং সেক্টরে কে.এম শফিউল্লাহ,মেজর নাসিম ও ক্যাপ্টেন কবীরের নেতৃত্বে যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং বিভিন্ন ছোট বড় অপারেশনে কাজ করেন।
১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর আখাওড়ার জয়নগরের একটি সম্মুখ যুদ্ধে তিনি গুলিবিদ্ধ হন পরে তাকে আগরতলা জি.বি মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।এসবের সনদপত্রও তার কাছে রয়েছে।
১২ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে একটি প্রত্যয়নপত্রসহ নগদ ২ হাজার টাকার আর্থিক অনুদান দেন।
ঐ প্রত্যয়নপত্রটিতে বলা হয়,”আপনি দেশপ্রেমের সুমহান আদর্শ ও প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ-মাতৃকার মুক্তিসংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে, পাক-হানাদার দস্যুবাহিনীর হাতে গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গু হয়েছেন।
এই দুঃসাহসিক ঝুঁকি নেয়ার জন্যে আপনাকে জানাচ্ছি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা”।
২০০১ সালের ২১ জুলাই তিনি দেখা করে ছিলেন সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সভাপতি ও ৩নং সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল(অব.)কে.এম শফিউল্লাহ্ সাথে।
তিনি তাকে দেখে চিনতে পারে এবং জাতীয় সনদ না পাওয়ায় আফসোস প্রকাশ করেন,তখন তিনি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার বিভাগ থেকে একটি যুদ্ধাহতের প্রত্যয়নপত্র প্রদান করেন।
আজ অবধি কেন তিনি জাতীয় সনদ পান নি সেই প্রশ্ন স্থানীয় জনমনে ও তার সহযোদ্ধাদের মাঝে জানা গেছে,স্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার স্বীকার হয়ে এক অসাধু মহলের চক্রান্তেই মূলত জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা অন্তর্ভুক্তিকরনে তার নাম বাতিল হয়েছে বারবার।
বর্তমানে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) কর্তৃক নতুন বাঁচাইয়ে কাজ চলছে সেখানে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধা নাম আসলেও যুদ্ধাহত হিসেবে তার নাম আসে নি বলে মুক্তিযোদ্ধা ইয়াকুব আলী গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
তার পরিবার ও সহযোদ্ধারা সম্প্রতি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) বাছাই কার্যক্রমে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা এবং আর যাতে কোনো জটিলতার স্বীকার না হতে হয় সেজন্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিনীত আবেদন জানিয়েছেন।