খবরটা সাকিব আল হাসানেরও অজানা নয়। অবশ্য এটাই স্বাভাবিক। তিনি তারকা খ্যাতি নিয়ে চলেন, ক্রিকেট মাঠ ও মাঠের বাইরে ব্যস্ততা ঠিকই দেয় না অবসর। কিন্তু তিনি তো আর ভিনগ্রহের কেউ নন। ভালো করেই জানেন সিডনিতে বাংলাদেশি কমিউনিটি বেশ বড়-সড়। আর শহরে যখন এমন আয়োজন তখন, সবারই চোখ এখন ক্রিকেটে।
বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের টিকিট শেষ বিশ্বকাপ শুরুর আগেই। সন্দেহ নেই বৃহস্পতিবার সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডের ৪৮ হাজার দর্শক আসনের গ্যালারিই পূর্ণ হয়ে যাবে। আর সেখানে বাংলাদেশিদের একটা দাপট তো থাকবেই। শহরে পা রেখেই বুঝতে পেরেছি, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সাকিবদের ম্যাচটা নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই। অফিস ডে-তে খেলা থাকায় অনেকে ছুটিও নিচ্ছেন। সবারই পরিবার নিয়ে খেলা দেখার একটা পরিকল্পনাও আছে। আবার অনেকে হন্যে হয়ে বাঙালি কমিউনিটিতে খুঁজে বেড়াচ্ছেন একটা টিকিট। বাংলাদেশি ক্রিকেট ভক্তদের এমন উন্মাদনা-আগ্রহের খবরটা হয়তো কানে গেছে সাকিবেরও। তাইতো বুধবার সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে বসে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলছিলেন, ‘আমাদের এমন কিছু করার ক্ষমতা আছে সেটা প্রমাণ করার খুব কাছাকাছি চলে যাবো। সো আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একই সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকাও হারতে পারবে না অলমোস্ট তেমন একটা অবস্থানে রয়েছে। দুদলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ, আমি বলবো আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ কতটা আমরা খেলাটাকে উপভোগ করতে পারছি। বেশ বড় একটা দর্শক থাকবে, যেহেতু সিডনিতে সব থেকে বেশি বাংলাদেশি। সো তাদের সাপোর্টটা কাজে লাগিয়ে আরো ভালো পারফর্ম করতে পারি সেটা আমাদের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’ ম্যাচটা নিয়ে আগ্রহ আকাশ ছুঁয়েছে সিডনির বাংলাদেশি ক্রিকেটপ্রেমীদের। তেমনই এক টাইগার ভক্ত ফাহিম মুনায়েম। যিনি থাকেন শহরতলী পাঞ্চবৌলে। তিনি বলছিলেন, ‘দেখুন, এখানে আনন্দ করার সময় কমই আসে বিদেশ বিভুঁইয়ে জীবনে। যেদিন বিশ্বকাপের সূচি হলো, সেদিনই ঠিক করে রেখেছিলাম, ম্যাচটা দেখবো। তারপর টিকিট ছাড়ার পর মুহুর্ত দেরি না করে কেটে নিয়েছি। এখন বৃহস্পতিবার এসসিজিতে গলা ফাটাতে চাই সাকিবদের জন্য।’
এমনিতে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বাংলাদেশের ম্যাচ দেখতে ২০ থেকে ২৩৫ অস্ট্রেলিয়ান ডলার। ছোটদের জন্য ৫ ডলার। তবে অর্থ খরচ করেও করেও মিলছে না সেই টিকিট। অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় টিকিট চেয়েও স্ট্যাটাস দিচ্ছেন, কেউ যদি বেশি অর্থের বিনিময়েও সেটা বিক্রি করে! এসব কিছুর উত্তাপ সাকিবদের গায়ে লাগছে কি না বোঝার উপায় নেই। তবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক কিন্তু স্পষ্ট করেই বললেন-প্রতিদান দিতে চান তিনি, ‘আমি যেটা বললাম আমরা আসলে ক্লিয়ার মাইন্ডে থাকতে চাই। খেলাটাকে উপভোগ করতে চাই। আমি আশা করি বেশ ভালো দর্শক আসবে, যারা আমাদেরকে সাপোর্ট করবে। তাদের সাপোর্টের প্রতিদান যেন আমরা দিতে পারি।’
এটাই আসলে শেষ কথা। ভালবাসার প্রতিদানে ভালবাসাই দিতে হয়।