ঢাকা ০৩:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিকরগাছায় ইলেকট্রনিক দোকানে উপচে পড়া ভিড়, চার্জার ফ্যান যে সোনার হরিণ

চারিদিকে প্রচণ্ড ভ্যপসা গরম,  অপরদিকে মরার উপর খাঁড়ার ঘাঁ হয়ে, শুরু হয়েছে লোডশেডিং। যার ফলশ্রুতিতে সারা বাংলাদেশই ইলেকট্রনিক দোকান গুলোতে চার্জার ফ্যান কেনা-বেচার হিড়িক পড়েছে। একই চিত্র যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার ইলেকট্রিক পণ্যের দোকানগুলোতেও। দুর্ভোগ ঘোচাতে সোলার কিংবা চার্জার ফ্যানের দিকে ঝুঁকছে সকল শ্রেণী পেশার মানুষ। এ সুযোগে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছে প্রায় দিগুণ। তারা বলছেন, গতবছরের তুলনায় প্রতিটি চার্জার বা সোলার ফ্যানের দাম বেড়েছে সাতশো থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে ক্রেতারা বলছেন, অনেক ক্ষেত্রে বেশি দাম দিয়েও মিলছে না কাক্সিক্ষত ফ্যান। তাই অনেকে বাধ্য হয়েই পুরনো ফ্যান সচল করছেন। এছাড়াও ভিড় বাড়ছে চার্জার লাইট, চার্জার ফ্যান দোকানে।

ঝিকরগাছায় বিভিন্ন ইলেকট্রিক পণ্যের দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হঠাৎ করেই চাহিদা বেড়েছে সোলার ও চার্জার ফ্যানের। তবে চাহিদা অনুযায়ী ফ্যান সরবরাহে হিমশিম খাচ্ছেন বিক্রেতারা। শেষ হয়ে গেছে বেশির ভাগ দোকানের স্টকে থাকা ফ্যান। সুযোগ বুঝে বাড়তি দামে ফ্যান বিক্রি করছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। বাজারে ওয়ালটোন, ক্লিক, ভিশন, ডিফেন্ডার, মিডিয়া, কেনাডিসহ চায়না কোম্পানির চার্জার ফ্যান পাওয়া যাচ্ছে। এসব কোম্পানির ১২ ইঞ্চি একটি চার্জার ফ্যানের দাম রাখা হচ্ছে তিন হাজার ছয়শত থেকে চার হাজার দুইশত টাকা। ১৪ ইঞ্চি রাখা হচ্ছে পাঁচ হাজার পাঁচশত থেকে আটশত টাকা। ১৬ ইঞ্চি রাখা হচ্ছে সাত হাজার থেকে আট হাজার টাকা। প্রতিদিনই দাম বাড়ছে গত বৃহস্পতিবার ১২ ইঞ্চি একটি চার্জার ফ্যানের দাম ছিলো তিন হাজার ছয়শত টাকা। গত শনিবার দাম বাড়ে দুইশত টাকা। যা রবিবার বেড়ে হয়েছে চার হাজার দুইশত টাকা। এছাড়াও গত একমাসের ব্যবধানে এসি, ফ্যান, চার্জার ফ্যান, এয়ারকুলার, আইপিএস ও ইউপিএসের বিক্রি হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ, যা গত কয়েক বছরেও হয়নি। আর বর্ধিত এ চাহিদার কারণে দামও বেড়েছে।

ঝিকরগাছা  বাজারে চার্জার ফ্যান কিনতে আসা পানিসারা ইউনিয়নের টাওরা গ্রামের বাপ্পি শাওন  বলেন, দিনের অধিকাংশ সময়ই বিদ্যুৎ থাকছে না। তাই চার্জার ফ্যান কিনতে বাজারে আসছি। কিন্তু কয়েকটা দোকান খুঁজেও সোনার হরিণ ফ্যান পেলাম না। এসময় ফ্যানের খোঁজে বাজারে আসা  একজন মহিলা ক্রেতা বলেন, কয়েক দোকানে ফ্যান খুঁজেও পেলাম না। সবাই বলছে শেষ হয়ে গেছে। এদিকে গরম আর লোডশেডিংয়ে কারনে বাসায় থাকা দায়। ছোট বাচ্চা নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয়েছে। তাই ফ্যান ছাড়া বাসাতেও যেতে পারছি না।

ঝিকরগাছা বাজারের  হাল রোডের এবি ইলেকট্রনিকের মালিক জানান, আমরা ফ্যান, চার্জার ফ্যান ও এয়ারকুলার সবচেয়ে বেশি বিক্রি করছি। প্রতিদিন এসব জিনিস ১৫-২০টির মতো বিক্রি হয়। তবে গতবারের তুলনায় দাম বেড়েছে সাতশো টাকা থেকে এক হাজার টাকা। তারপরও প্রতিদিন ১৫টির বেশি রিচার্জেবল ফ্যান বিক্রি করছি। আজ বেশ কিছু দিন ধরে ফ্যানের চাহিদা বেশি। তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন কোম্পানির ১২ ইঞ্চি একটি চার্জার ফ্যানের দাম রাখা হচ্ছে তিন হাজার ছয়শত থেকে চার হাজার দুইশত টাকা, ১৪ ইঞ্চি রাখা হচ্ছে পাঁচ হাজার পাঁচশত থেকে আটশত টাকা, ১৬ ইঞ্চি রাখা হচ্ছে সাত হাজার থেকে আট হাজার টাকা। প্রতিদিনই দাম বাড়ছে। গত বৃহস্পতিবার ১২ ইঞ্চি একটি চার্জার ফ্যানের দাম ছিলো তিন হাজার ছয়শত টাকা, গত শনিবার দাম বাড়ে দুইশত টাকা যা রবিবার বেড়ে হয়েছে চার হাজার দুইশত টাকা।

এদিকে লোডশেডিংকে ঘিরে চার্জার ফ্যান ও লাইটের দাম মনিটরিং করেছে জেলা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ওয়ালিদ বিন হাবিব। তিনি বলেন, গরমে চার্জার ফ্যানের চাহিদা বাড়ে। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী চার্জার ফ্যান বা চার্জার জিনিসপত্রের দাম বাড়াতে পারে বলে তথ্য ছিল। সেই অনুযায়ী বিষয়টি তদারকি করেছি। এখনো তেমন অপরাধ চোখে পড়ে নি। তবে আমরা ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেছি। তারা যাতে এসব পণ্যের দাম না বাড়িয়ে দেয়, সেজন্য সতর্ক করা হয়েছে। অযৌক্তিক ও অস্বাভাবিক মূল্যে বিক্রির প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, প্রায় ১৩ দিন ধরে যশোরে তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সেই সঙ্গে বেড়েছে লোডশেডিং।

যারা একটু সচ্ছল তারা  হয়তো চার্জার  ফ্যান কিনছে,  কিন্তু যারা দিন আনে দিন খাই তাদের একমাত্র সম্বল তালপাখা ও গাছতলা।

সরকার যদি দেশের সকল বড় বড় শপিং মলে সোলার প্যানেল বসানো বাধ্যতামুলক করতো, ঐ সোলার  প্যানেল সাহায্যে শুধু লাইট গুলো জ্বলবে,  তাতেই  শত শত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হবে, আর সাথে সাথে যদি সরকারি অফিস আদালতে ও একই নিয়ম চালু করা যায়, তাহলে অনেক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হবে।  যা দেশের বৈদ্যুতিক ঘাটতি পুরোনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।  সাথে সাথে  আমার সকলকে বিদ্যুৎ অপচয় রোধ করতে হবে,  তাহলে বিদ্যুৎএর ঘাটতি অনেকাংশেই পুরন হয় যাবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ঝিকরগাছায় ইলেকট্রনিক দোকানে উপচে পড়া ভিড়, চার্জার ফ্যান যে সোনার হরিণ

আপডেট সময় ০৩:১৮:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ জুন ২০২৩

চারিদিকে প্রচণ্ড ভ্যপসা গরম,  অপরদিকে মরার উপর খাঁড়ার ঘাঁ হয়ে, শুরু হয়েছে লোডশেডিং। যার ফলশ্রুতিতে সারা বাংলাদেশই ইলেকট্রনিক দোকান গুলোতে চার্জার ফ্যান কেনা-বেচার হিড়িক পড়েছে। একই চিত্র যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার ইলেকট্রিক পণ্যের দোকানগুলোতেও। দুর্ভোগ ঘোচাতে সোলার কিংবা চার্জার ফ্যানের দিকে ঝুঁকছে সকল শ্রেণী পেশার মানুষ। এ সুযোগে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছে প্রায় দিগুণ। তারা বলছেন, গতবছরের তুলনায় প্রতিটি চার্জার বা সোলার ফ্যানের দাম বেড়েছে সাতশো থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে ক্রেতারা বলছেন, অনেক ক্ষেত্রে বেশি দাম দিয়েও মিলছে না কাক্সিক্ষত ফ্যান। তাই অনেকে বাধ্য হয়েই পুরনো ফ্যান সচল করছেন। এছাড়াও ভিড় বাড়ছে চার্জার লাইট, চার্জার ফ্যান দোকানে।

ঝিকরগাছায় বিভিন্ন ইলেকট্রিক পণ্যের দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হঠাৎ করেই চাহিদা বেড়েছে সোলার ও চার্জার ফ্যানের। তবে চাহিদা অনুযায়ী ফ্যান সরবরাহে হিমশিম খাচ্ছেন বিক্রেতারা। শেষ হয়ে গেছে বেশির ভাগ দোকানের স্টকে থাকা ফ্যান। সুযোগ বুঝে বাড়তি দামে ফ্যান বিক্রি করছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। বাজারে ওয়ালটোন, ক্লিক, ভিশন, ডিফেন্ডার, মিডিয়া, কেনাডিসহ চায়না কোম্পানির চার্জার ফ্যান পাওয়া যাচ্ছে। এসব কোম্পানির ১২ ইঞ্চি একটি চার্জার ফ্যানের দাম রাখা হচ্ছে তিন হাজার ছয়শত থেকে চার হাজার দুইশত টাকা। ১৪ ইঞ্চি রাখা হচ্ছে পাঁচ হাজার পাঁচশত থেকে আটশত টাকা। ১৬ ইঞ্চি রাখা হচ্ছে সাত হাজার থেকে আট হাজার টাকা। প্রতিদিনই দাম বাড়ছে গত বৃহস্পতিবার ১২ ইঞ্চি একটি চার্জার ফ্যানের দাম ছিলো তিন হাজার ছয়শত টাকা। গত শনিবার দাম বাড়ে দুইশত টাকা। যা রবিবার বেড়ে হয়েছে চার হাজার দুইশত টাকা। এছাড়াও গত একমাসের ব্যবধানে এসি, ফ্যান, চার্জার ফ্যান, এয়ারকুলার, আইপিএস ও ইউপিএসের বিক্রি হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ, যা গত কয়েক বছরেও হয়নি। আর বর্ধিত এ চাহিদার কারণে দামও বেড়েছে।

ঝিকরগাছা  বাজারে চার্জার ফ্যান কিনতে আসা পানিসারা ইউনিয়নের টাওরা গ্রামের বাপ্পি শাওন  বলেন, দিনের অধিকাংশ সময়ই বিদ্যুৎ থাকছে না। তাই চার্জার ফ্যান কিনতে বাজারে আসছি। কিন্তু কয়েকটা দোকান খুঁজেও সোনার হরিণ ফ্যান পেলাম না। এসময় ফ্যানের খোঁজে বাজারে আসা  একজন মহিলা ক্রেতা বলেন, কয়েক দোকানে ফ্যান খুঁজেও পেলাম না। সবাই বলছে শেষ হয়ে গেছে। এদিকে গরম আর লোডশেডিংয়ে কারনে বাসায় থাকা দায়। ছোট বাচ্চা নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয়েছে। তাই ফ্যান ছাড়া বাসাতেও যেতে পারছি না।

ঝিকরগাছা বাজারের  হাল রোডের এবি ইলেকট্রনিকের মালিক জানান, আমরা ফ্যান, চার্জার ফ্যান ও এয়ারকুলার সবচেয়ে বেশি বিক্রি করছি। প্রতিদিন এসব জিনিস ১৫-২০টির মতো বিক্রি হয়। তবে গতবারের তুলনায় দাম বেড়েছে সাতশো টাকা থেকে এক হাজার টাকা। তারপরও প্রতিদিন ১৫টির বেশি রিচার্জেবল ফ্যান বিক্রি করছি। আজ বেশ কিছু দিন ধরে ফ্যানের চাহিদা বেশি। তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন কোম্পানির ১২ ইঞ্চি একটি চার্জার ফ্যানের দাম রাখা হচ্ছে তিন হাজার ছয়শত থেকে চার হাজার দুইশত টাকা, ১৪ ইঞ্চি রাখা হচ্ছে পাঁচ হাজার পাঁচশত থেকে আটশত টাকা, ১৬ ইঞ্চি রাখা হচ্ছে সাত হাজার থেকে আট হাজার টাকা। প্রতিদিনই দাম বাড়ছে। গত বৃহস্পতিবার ১২ ইঞ্চি একটি চার্জার ফ্যানের দাম ছিলো তিন হাজার ছয়শত টাকা, গত শনিবার দাম বাড়ে দুইশত টাকা যা রবিবার বেড়ে হয়েছে চার হাজার দুইশত টাকা।

এদিকে লোডশেডিংকে ঘিরে চার্জার ফ্যান ও লাইটের দাম মনিটরিং করেছে জেলা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ওয়ালিদ বিন হাবিব। তিনি বলেন, গরমে চার্জার ফ্যানের চাহিদা বাড়ে। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী চার্জার ফ্যান বা চার্জার জিনিসপত্রের দাম বাড়াতে পারে বলে তথ্য ছিল। সেই অনুযায়ী বিষয়টি তদারকি করেছি। এখনো তেমন অপরাধ চোখে পড়ে নি। তবে আমরা ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেছি। তারা যাতে এসব পণ্যের দাম না বাড়িয়ে দেয়, সেজন্য সতর্ক করা হয়েছে। অযৌক্তিক ও অস্বাভাবিক মূল্যে বিক্রির প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, প্রায় ১৩ দিন ধরে যশোরে তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সেই সঙ্গে বেড়েছে লোডশেডিং।

যারা একটু সচ্ছল তারা  হয়তো চার্জার  ফ্যান কিনছে,  কিন্তু যারা দিন আনে দিন খাই তাদের একমাত্র সম্বল তালপাখা ও গাছতলা।

সরকার যদি দেশের সকল বড় বড় শপিং মলে সোলার প্যানেল বসানো বাধ্যতামুলক করতো, ঐ সোলার  প্যানেল সাহায্যে শুধু লাইট গুলো জ্বলবে,  তাতেই  শত শত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হবে, আর সাথে সাথে যদি সরকারি অফিস আদালতে ও একই নিয়ম চালু করা যায়, তাহলে অনেক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হবে।  যা দেশের বৈদ্যুতিক ঘাটতি পুরোনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।  সাথে সাথে  আমার সকলকে বিদ্যুৎ অপচয় রোধ করতে হবে,  তাহলে বিদ্যুৎএর ঘাটতি অনেকাংশেই পুরন হয় যাবে।