মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে জমিতে আখের পরিচর্যা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। জমিতে আষাঢ়ের পানি আসার আগেই আখের যত্নে বিভিন্ন কাজকর্ম সেরে নিচ্ছেন তারা।
উপজেলার পুর্ব অঞ্চলের আটপাড়া, বীরতারা, সিংপাড়া, বেলতলী, সুফিগঞ্জ, তন্তর, পানিয়া, ব্রাহ্মণখোলা এলাকায় জমিতে আখের চাষ হচ্ছে। এসব জমিতে আলুর সাথি ফসল হিসেবে আখের চারা রোপণ করা হয়েছে। সূত্রমতে জানা যায়, শ্রীনগরে প্রায় ৩শ’ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বীরতারা, আটপাড়া ও তন্তর ইউনিয়নের বিভিন্ন চকে আখের চাষাবাদ হচ্ছে। এরই মধ্যে জমিতে সারি সারি রিষ্টপুষ্ট এসব আখ বড় হচ্ছে। আখের ছোপের গোরায় মাটি দেওয়াসহ আখের মরাপাতা ও ঝড়াপাতা অপসারণ করা হচ্ছে। বীরতারা এলাকার আমিনুল ইসলাম জানান, প্রায় ৩শ’ শতাংশ আলুর জমিতে সাথি ফসল হিসেবে আখের চারা রোপণ করেছেন তিনি।
এ বছর জমিতে আলুর আশানুরূপ ফলন হয়নি। এবার উৎপাদিত আলুর কাঙ্খিত মূল্য পাওয়ায় আনন্দ প্রকাশ করেন। গত বছর আলুতে লোকসান হয়েছে। তবে গেলবছর আখে লাভ হয়েছে তার।
আমিনুল ইসলাম, জয়নাল শেখ, যতিন্ত্র দাস, দ্বীন ইসলাম, আবুল হোসেনসহ আখ চাষীরা জানায়, কিছুদিন পরেই জমিতে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়তে পারে। তাই আখের যত্ন নিনে জমিতে কাজ করা হচ্ছে।
আগেই আখের যথাযথ নিচ্ছেন তারা। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর পানির তেমন চাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে আষাঢ়ের দিকে জমিতে পানি আসবে। আখের ক্ষেতে হাঁটু বা কোমর পরিমাণ পানি হলেই আগাম আখ তোলা শুরু হবে।
আলুর সাথী ফসল আখ চাষে লাভের স্বপ্ন দেখছেন তারা। জানা যায়, শ্রাবণ, ভাদ্র, আশ্বিন ও কার্তিক মাস পর্যন্ত এ অঞ্চলে ক্ষেতের রসালো, সু-স্বাদু আখ কেনাবেচা হয়। মানবদেহের জন্য উপকারী এসব মিষ্টি আখ স্থানীয় হাটবাজারে পাওয়া যাবে। আখের ভরা মৌসুমে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শ্রীনগর ছনবাড়ি সংলগ্ন হরপাড়ায় আখের আড়ত গড়ে উঠে। স্থানীয় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত আখের সিংহভাগ এই আড়তে বিক্রি করে থাকেন। জমিগুলোতে ২৭ ও অমৃত জাতের আখের আবাদ বেশী হচ্ছে।
স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, স্থানীয়রা আলুর সাথী ফসল হিসেবে আখের চাষ করেন। কৃষকরা নিজ উদ্যোগেই আখ চাষ করে থাকেন। আখ চাষের উপর এই অঞ্চলে সরকারিভাবে কোন বরাদ্দ আসেনা। তবে আখের আশানুরূপ ফলনের লক্ষ্যে ও রোগমুক্ত রাখার জন্য সার্বিক পরামর্শ দেওয়া হয়।
আমাদের মাতৃভূমি/মাজহারুল