ঢাকা ০৬:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া গণপূর্তের সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার ছয় প্রকল্প বাতিল দাউদকান্দিতে অবৈধভাবে এলপিজি গ্যাস বোতলজাতকরণের দায়ে ৩ জনকে সাজা প্রদান চাঁপাইনবাবগঞ্জে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবসে আলোচনা সভা বোরহানউদ্দিনে উত্তর-টবগী রাস্তার মাথা জামে মসজিদের সভাপতি বাচ্চু পন্ডিত- সম্পাদক- আলম ফরাজি তিস্তার পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই ট্রাকে অভিনব কায়দায় লুকানো ১৯৮ বোতল ফেনসিডিলসহ ০৩ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১৩ মোবাইল চার্জে দিয়ে ঘুম, বিস্ফোরণে চিকিৎসকের মৃত্যু। দেশের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন ড. ইউনূস নাম-পরিচয় গোপন করেও রক্ষা হলোনা বিএনপি নেতা চুন্নুর! মুরাদনগরে অর্থ আত্নসাতের অভিযোগ:প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ

রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া গণপূর্তের সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার ছয় প্রকল্প বাতিল

রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার ছয়টি প্রকল্প বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া আরো ১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নেওয়া ৯টি প্রকল্প বাতিলের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

সম্প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া প্রকল্প নিয়ে বক্তব্যের পর সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও দপ্তরগুলো এসব প্রকল্প বাতিলে উদ্যোগী হচ্ছে বলে জানা গেছে।

সরকারের এমন বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প দপ্তরগুলো তালিকা তৈরি করে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। তালিকা পাওয়ার পর মন্ত্রণালয়গুলো প্রকল্পের বিষয়ে আইনগত দিক পর্যালোচনা করছে বলে জানা গেছে। তবে যেসব প্রকল্পে মোট ব্যয়ের ৫০ শতাংশ বা তার বেশি অর্থ ইতিমধ্যে ব্যয় হয়েছে, সেসব প্রকল্প বাতিল হচ্ছে না।

এ বিষয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন অনুবিভাগ) মো. আব্দুল মতিন বলেন, ফান্ডিং সমস্যার কারণে আমরা আপাতত এগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেগুলো বেশির ভাগ রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া এবং নতুন প্রকল্প। আমাদের প্রায় ১০১টি প্রজেক্ট এখন। এর মধ্যে ফান্ডিংয়ের বিষয়েও গুরুত্ব দিতে হচ্ছে। কিছু স্থগিত রাখা ও কিছু প্রকল্প ধীরে চলার জন্য বলেছি।

এর আগে একনেক সভা শেষে পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সরকারি প্রকল্প নিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আপাতত পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা স্থগিত রাখা হয়েছে। এছাড়া এখন দাতা সংস্থাগুলো হাত খুলে সহায়তা দিতে চাচ্ছে। বিগত সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রকল্প যাচাই-বাছাই করে বাদ দেওয়া হবে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রকল্পগুলো হলো গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৫ হাজার ৩২৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে মাদারীপুরের শিবচরের মুজিব আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার প্রকল্প; জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ৯৯ কোটি ৪৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ‘ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলায় শেখ ফাতেমা বেগম’ আবাসিক জোন প্লট উন্নয়ন প্রকল্প; ৫২ কোটি ৭০ লাখ ৮৩ হাজার টাকা ব্যয়ে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দাদাভাই উপশহর আবাসিক জোন (৪র্থ পর্যায়), রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ৭১ কোটি ৮১ লাখ ৮২ হাজার টাকা ব্যয়ে তালাইমারী চত্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্কয়ার নির্মাণ প্রকল্প (২য় ফেজ), রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ৫৫ কোটি ১ লাখ ৬৪ হাজার টাকা ব্যয়ে পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু স্কয়ার নির্মাণ প্রকল্প এবং রাজউকের ২৪৮ কোটি ৪ লাখ ৫৬ হাজার টাকা ব্যয়ে শেখ রাসেল পার্ক নির্মাণ প্রকল্প। বাতিল হওয়া এসব প্রকল্প চলতি অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় নেওয়া হয়েছিল।

অন্যদিকে গত ২৭ আগস্ট পূর্ত মন্ত্রণালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় ৯টি প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতিতে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট দপ্তর এবং সংস্থাগুলোকে। প্রকল্পগুলো হলো গণপূর্ত অধিদপ্তরের অধীনে ২১৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকার বেলালাবাদ কলোনি এবং ক্যাপ্টেন মনসুর আলী রোডের পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আবাসন প্রকল্প; ১১৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয়ে গুলশান এবং বনানীর তিনটি পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ; ৩৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় মালটিপারপাস ভবন নির্মাণ; ১৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পার্ক নির্মাণ; ২৫১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে উত্তরায় অফিসার্স ক্লাব নির্মাণ; জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ৬০ কোটি ৫২ লাখ ৮৯ হাজার টাকা ব্যয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় সাইট অ্যান্ড সার্ভিসেস আবাসিক প্লট উন্নয়ন; ১২২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ; খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ৫৪২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে স্বাধীনতা স্কয়ার নির্মাণ এবং ৭৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে ময়ূরী-২ আবাসিক এলাকার উন্নয়ন প্রকল্প। ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এরই মধ্য প্রকল্পসংশ্লিষ্ট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানদের কাছে পূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা যায়।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া গণপূর্তের সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার ছয় প্রকল্প বাতিল

রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া গণপূর্তের সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার ছয় প্রকল্প বাতিল

আপডেট সময় ০৬:৩৪:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার ছয়টি প্রকল্প বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া আরো ১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নেওয়া ৯টি প্রকল্প বাতিলের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

সম্প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া প্রকল্প নিয়ে বক্তব্যের পর সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও দপ্তরগুলো এসব প্রকল্প বাতিলে উদ্যোগী হচ্ছে বলে জানা গেছে।

সরকারের এমন বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প দপ্তরগুলো তালিকা তৈরি করে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। তালিকা পাওয়ার পর মন্ত্রণালয়গুলো প্রকল্পের বিষয়ে আইনগত দিক পর্যালোচনা করছে বলে জানা গেছে। তবে যেসব প্রকল্পে মোট ব্যয়ের ৫০ শতাংশ বা তার বেশি অর্থ ইতিমধ্যে ব্যয় হয়েছে, সেসব প্রকল্প বাতিল হচ্ছে না।

এ বিষয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন অনুবিভাগ) মো. আব্দুল মতিন বলেন, ফান্ডিং সমস্যার কারণে আমরা আপাতত এগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেগুলো বেশির ভাগ রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া এবং নতুন প্রকল্প। আমাদের প্রায় ১০১টি প্রজেক্ট এখন। এর মধ্যে ফান্ডিংয়ের বিষয়েও গুরুত্ব দিতে হচ্ছে। কিছু স্থগিত রাখা ও কিছু প্রকল্প ধীরে চলার জন্য বলেছি।

এর আগে একনেক সভা শেষে পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সরকারি প্রকল্প নিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আপাতত পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা স্থগিত রাখা হয়েছে। এছাড়া এখন দাতা সংস্থাগুলো হাত খুলে সহায়তা দিতে চাচ্ছে। বিগত সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রকল্প যাচাই-বাছাই করে বাদ দেওয়া হবে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রকল্পগুলো হলো গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৫ হাজার ৩২৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে মাদারীপুরের শিবচরের মুজিব আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার প্রকল্প; জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ৯৯ কোটি ৪৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ‘ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলায় শেখ ফাতেমা বেগম’ আবাসিক জোন প্লট উন্নয়ন প্রকল্প; ৫২ কোটি ৭০ লাখ ৮৩ হাজার টাকা ব্যয়ে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দাদাভাই উপশহর আবাসিক জোন (৪র্থ পর্যায়), রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ৭১ কোটি ৮১ লাখ ৮২ হাজার টাকা ব্যয়ে তালাইমারী চত্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্কয়ার নির্মাণ প্রকল্প (২য় ফেজ), রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ৫৫ কোটি ১ লাখ ৬৪ হাজার টাকা ব্যয়ে পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু স্কয়ার নির্মাণ প্রকল্প এবং রাজউকের ২৪৮ কোটি ৪ লাখ ৫৬ হাজার টাকা ব্যয়ে শেখ রাসেল পার্ক নির্মাণ প্রকল্প। বাতিল হওয়া এসব প্রকল্প চলতি অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় নেওয়া হয়েছিল।

অন্যদিকে গত ২৭ আগস্ট পূর্ত মন্ত্রণালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় ৯টি প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতিতে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট দপ্তর এবং সংস্থাগুলোকে। প্রকল্পগুলো হলো গণপূর্ত অধিদপ্তরের অধীনে ২১৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকার বেলালাবাদ কলোনি এবং ক্যাপ্টেন মনসুর আলী রোডের পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আবাসন প্রকল্প; ১১৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয়ে গুলশান এবং বনানীর তিনটি পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ; ৩৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় মালটিপারপাস ভবন নির্মাণ; ১৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পার্ক নির্মাণ; ২৫১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে উত্তরায় অফিসার্স ক্লাব নির্মাণ; জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ৬০ কোটি ৫২ লাখ ৮৯ হাজার টাকা ব্যয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় সাইট অ্যান্ড সার্ভিসেস আবাসিক প্লট উন্নয়ন; ১২২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ; খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ৫৪২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে স্বাধীনতা স্কয়ার নির্মাণ এবং ৭৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে ময়ূরী-২ আবাসিক এলাকার উন্নয়ন প্রকল্প। ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এরই মধ্য প্রকল্পসংশ্লিষ্ট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানদের কাছে পূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা যায়।