সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার ৩নং পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের মুসলিমনগর এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এক নারীকে মারধর করে শ্লীলতাহানীর ঘটনায় এলাকা জুড়ে তুলকালাম সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ নিয়মিত মামলা নিলেও অজ্ঞাত কারণে মামলার অভিযুক্তদের ধরছেন না বলে নির্যাতনের শিকার ওই নারীর পরিবারের অভিযোগ।
এমন গুরুত্ব অভিযোগ এনে ৩নং পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের মুসলিমনগর এলাকার মৃত: রুহুল আমিনের দুই পুত্র ১। আমিরুজ্জামান মামুন (৩৮) ও ২। আকবরুজ্জামান পলাশ (৪২), একই এলাকার মৃত: মুতলিব সরকারের পুত্র ৩। কাওসার সরকার (৪৫) সহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনকে অভিযুক্ত করে গত বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) গোয়াইনঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মুসলিমনগর এলাকার আব্দুস শুক্কুরের স্ত্রী রেহেনা আক্তার (২৬)। অজ্ঞাতকারণে ঘটনার দুদিন অতিক্রম হওয়ার পর গত শনিবার (২৯ এপ্রিল) মামলাটি রেকর্ড করেন গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ। যাহার থানার মামলা নং-২৭।
উল্লেখ্য, আকবরুজ্জামান পলাশ, আমিরুজ্জামান মামুন ও কাওসার সরকার সহ আরোও ১৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যার উদ্দ্যশ্যে মারপটি করে গুরত্বর জখমসহ চুরি করার অভিযোগ এনে গত শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) গোয়াইনঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মুসলিমনগর এলাকার হারুন উর-রশিদের পুত্র মোঃ আব্দুল জলিল রাজু (৩০)। গত মঙ্গলবার (০২ মে) মামলাটি রেকর্ড করেন গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ। যাহার থানার মামলা নং-০৩।
এদিকে, এ ঘটনায় গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ নিয়মিত মামলা নিলেও ঘটনার আজ প্রায় ৬ দিন অতিক্রম হতে চলছে অথচ অজ্ঞাত কারণে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হচ্ছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। মামলার অভিযুক্তরা প্রকাশ্য এলাকায় ঘুরাফিরা করলেও তাদের অদৃশ্য কারণে গ্রেফতার করছেন না মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বলে নির্যাতনের শিকার ওই নারীর পরিবারের অভিযোগ।
মামলা সুত্রে জানা গেছে- বাদী ও অভিযুক্তরা একই এলাকার পাড়া প্রতিবেশী। অভিযুক্তরা এলাকার খুবই খারাপ, উশৃঙ্খল, দাঙ্গাবাজ, মাদক সেবন ও বিক্রয়কারী। মামলায় বর্ণিত ৩নং অভিযুক্ত কাওসার সরকার বাদীকে দীর্ঘ ৩ বছর যাবত বিভিন্ন স্থানে অবলোকন করিয়া অশ্লীল ভাষায় কথাবার্তা ও খারাপ কাজের কু-প্রস্তাব দেয়। বাদী তাতে অপরগতা প্রকাশ করিলে ৩নং অভিযুক্ত কাওসার সরকার ক্ষিপ্ত হইয়া অপরাপর অভিযুক্তদের যোগসাজশে বাদী ও বাদীর স্বামীকে প্রাণে হত্যা করিয়া বাদীর বসতবাড়ির জায়গা জোরপূর্বক জবর দখল করিবে মর্মে হুমকি প্রদান করে। এই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুর অনুমান ২ ঘটিকার দিকে বাদী তার বসতঘরের উত্তরে দিকে ময়লা আর্বজনার পানি নিষ্কাশনের জন্য রাজমিস্ত্রি শ্রমিক নিয়া পাঁকা ড্রেন নির্মাণ করার প্রাক্কালে অভিযুক্তরা দেশীয় অস্ত্রে-সস্ত্রে সজ্জিত হইয়া বাদীর রাজমিস্ত্রিদের উপর হামলা চালায়।
বাদী তাতে প্রতিবাদ করিলে ১নং অভিযুক্ত আমিরুজ্জামান মামুন তর হাতে থাকা লোহার রড দিয়া বাদীকে মারধর করে এবং বাদীকে হত্যার প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করিলে মাথার পিছনে আঘাতটি পড়ে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম হয়। একপর্যায়ে বাদী মাটিতে লুটিয়া পড়িলে পূনরায় ১নং অভিযুক্ত আমিরুজ্জামান মামুন বাদীর চুল মুঠি ধরিয়া মাটিতে ফেলিয়া পরনে থাকা কাপড়-চোপড় টানা হেছড়া করিয়া শ্লীলতাহানী করে। ২নং অভিযুক্ত আকবরুজ্জামান পলাশ তার হাতে থাকা ষ্ট্রীলের পাইপ দ্বারা সাক্ষী মোশারফ হোসেন ও মামুনুর রশিদকে এলোপাতাড়ী বাইরাইয়া তাদের মারাত্মক জখম করে। সমূহ অভিযুক্তরা বাদীর বসতঘরে প্রবেশ করিয়া জিনিসপত্র ভাংচুর করিয়া অনুমান প্রায় ৬০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে। ২নং অভিযুক্ত আকবরুজ্জামান পলাশ বাদীর বিছানার নিচে থাকা নগদ ২৯ হাজার ৮শ’ টাকা নিয়া যায়।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মোঃ এমরুল কবির-এর ব্যবহৃত সেলফোনে যোগাযোগ করলে তিনি মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান- এখনো অভিযুক্ত কাউকে ধরা যায় নি তবে অভিযুক্তদের ধরতে আমাদের অভিযান চলমান।
সর্বশেষে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য সিলেট জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন নির্যাতনের শিকার নারী ও তার পরিবার ।