মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ইসমাইল ডেমরা থেকে গ্রেফতার কুমিল্লার দেবিদ্বার এলাকায় টাকার লোভে বন্ধু শাহজাহানকে নৃশংসভাবে হত্যাকান্ডের মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত (ফাঁসির) পলাতক আসামি মোঃ ইসমাইল (৪২)’কে রাজধানীর ডেমরা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৩)
র্যাব জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃত আসামি মোঃ ইসমাইল কুমিল্লা জেলার চান্দিনা থানার নীত্ততলা গ্রামের মোঃ বাচ্চু মিয়া বাবুর্চির পুত্র। চাঞ্চল্যকর এই মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী ইসমাইল জামিনে বের হয়ে ডেমরাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় দীর্ঘদিন যাবৎ পলাতক জীবন যাপন করে আসছিল।
আজ বুূধবার সকালে র্যাব-৩ এর কমান্ডির অফিসার (অধিনায়ক) লেঃ কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, আজ বুূধবার র্যাব-৩ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) ফারজানা হক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৩ এর একটি দল গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৮ টার দিকে রাজধানীর ডেমরা এলাকায় ঝটিকা অভিযান চালিয়ে আসামি মোঃ ইসমাইলকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
ফারজানা হক জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ২০০৬ সালে কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানা এলাকায় ভিকটিম শাহজাহান রিক্সা কেনার জন্য বাড়ি থেকে চার হাজার টাকা নিয়ে বের হয়। সে রিক্সা ক্রয়ের জন্য তার বন্ধু মোঃ কবির এবং মোঃ শাহজাহানকে সঙ্গে নিয়ে যায়। আটক ইসমাইল কৌশলে কবিরকে অন্য একটি স্থানে পাঠিয়ে দেয়। এই সুযোগে রিক্সা কিনতে যাওয়ার পথে গ্রেফতারকৃত ইসমাইল ইট দিয়ে ভিকটিম শাহজাহানের মাথায় আঘাত করে। আঘাতের ফলে ভিকটিম অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকলে তার রিক্সা ক্রয়ের টাকা লুট করে এবং তার মৃত্যু নিশ্চিত করে সে কৌশলে ইসমাইল পালিয়ে যায়।
র্যাব বলছে, দীর্ঘ সময় ভিকটিম বাড়িতে না ফেরায় তার পরিবার খোঁজাখুজির একপর্যায়ে বাড়ির পাশ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে ভিকটিমের স্ত্রী আমেনা বেগম অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে কুমিল্লার দেবিদ্বার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে তদন্ত অফিসার ওই মামলায় মোঃ কবির এবং ইসমাইলকে আসামি করে আদালতে একটি চার্জশীট দাখিল করে। তদন্ত শেষে কবির এবং ইসমাইল আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়।
প্রাথমিক জিঞ্জাসাবাদে গ্রেফতারকৃত ইসমাইল এই হত্যা কান্ডের সাথে জড়িত বলে স্বীকার করেছে।
র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, আগামীরা এ খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হয়ে কিছু দিন জেল খেটে জামিনে মুক্ত হয়। জামিনে মুক্ত হয়ে কবির নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিতে থাকে এবং ইসমাইল হাজিরা না দিয়ে পলাতক জীবন যাপন করতে থাকে। পরবর্তীতে মামলার দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ১৬ বছর পর ২০২২ সালে বিজ্ঞ আদালত আটক ইসমাইল এর বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ডাদেশের রায় প্রদান করেন এবং অপর আসামি কবির নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে খালাস প্রদান করেন।
গ্রেফতারকৃত আসামি ইসমাইলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে বলে জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।